আগামী বছর থেকে বই খুলে পরীক্ষা দেওয়ার নিয়ম চালু হচ্ছে। এতে সুবিধা ও অসুবিধাগুলো কি কি ? সহজ ভাষায় জেনে নিন

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- পড়াশোনা নিয়ে বিরাট সিদ্ধান্তের পক্ষে শিক্ষা দপ্তর (School Education Department)। আগামীদিনে বই খুলে পরীক্ষা দেওয়া বা ওপেন বুক এক্সাম (Open Book Exam) হতে চলেছে বলেই জানা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে (Open book assessment) অবশ্যই কিছু উদ্দেশ্যকে সামনে রাখা হয়েছে। যার জন্য নতুন পরীক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে ছাত্র-ছাত্রীদের অভ্যস্ত করে তোলার প্রচেষ্টাও চালানো চলছে। এখনো পর্যন্ত জানা যাচ্ছে যে, আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৬ সাল থেকে খোলা বই পরীক্ষা পদ্ধতিতে মুল্যায়ন করা হবে। আসুন সংশ্লিষ্ট বিষয়ের নিয়ম কানুন ও খোলা বই পরীক্ষার সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে আরো বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

Open Book Exam For School Students

মাঝেমধ্যেই শিক্ষা ব্যবস্থায় নানান ধরনের বদল আনে সরকার। শিক্ষার আইন (Education Act) লাগু করা হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় ২০২০ সালের এডুকেশন অ্যাক্টের কথা। সারা ভারতে এই আইনের ফলে আমূল বদল এসেছে। এই এবার এক নতুন সিদ্ধান্তের পথে হাঁটছে সরকার। ভারতে এবার ওপেন বুক এক্সাম হবে ছাত্র-ছাত্রীদের। এই নিয়মে বই খুলে পরীক্ষা দিতে পারবেন পড়ুয়ারা।

 

 

বই খুলে পরীক্ষা নেওয়ার উদ্দেশ্য কী?

Open Book Exam শুনলে প্রথমেই আপনার মনে হতে পারে, বই দেখে পরীক্ষা নেওয়া হবে। আসলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে ছাত্রছাত্রীরা কোন একটি বিষয়কে বোঝার পরিবর্তে নম্বরের জন্য শুধুই একনাগাড়ে মুখস্ত করছেন। যাতে সেই বিষয়ে তাঁর জ্ঞান তো বৃদ্ধি হচ্ছেই না। উল্টে তাঁরা উচ্চ শ্রেণীতে উঠলে নিচু শ্রেণির পড়াশোনা অর্থাৎ আগে যা পড়া পড়েছিলেন সবই ভুলে যাচ্ছেন। তাই মুখস্থ নির্ভর নয় বরং ছাত্র-ছাত্রীদের বিশ্লেষণী দক্ষতার বৃদ্ধি, যুক্তির প্রয়োগ ও বাস্তব অভিজ্ঞতা শেখাতে তৎপর প্রশাসন।

Open book assessment এর পদ্ধতি

সেন্ট্রাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (CBSE) তাই আগামী ২০২৬-২৭ সাল থেকে আরম্ভ করতে চলেছে বই দেখে পরীক্ষা পদ্ধতি বা ওপেন বুক অ্যাসেসমেন্ট। আর এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ (NEP 2020) এবং ন্যাশনাল কারিকুলাম ফ্রেমওয়ার্ক ফর স্কুল এডুকেশন (NCFSE) ২০২৩-এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে। নিঃসন্দেহে এটি দেশের ছাত্রছাত্রীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ খবর। এক্ষেত্রে কোনও পরীক্ষার্থীর প্রশ্নে মুখস্ত করা সূত্রের পরিবর্তে বোধ মূলক বা প্রয়োগমূলক প্রশ্ন থাকবে। সেগুলো উত্তর দেওয়ার সময়ে বই বা নোট বই এর রেফারেন্স নিতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে একটি কথা মনে রাখতে হবে, যে Open book assessment এর এই প্রশ্ন গুলো সরাসরি পাঠ্য বইতে থাকবে না। পাঠ্য বইয়ে নিয়ম থাকবে, সেই সুত্র বা রেফারেন্স ব্যবহার করে উত্তর দিতে হবে।

খোলা বই পরীক্ষার সুবিধা ও অসুবিধা

ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের কি সুবিধা হবে?

ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য যে সুবিধা হবে সেটি নিম্নে আলোচনা করা হলো।

  • মুখস্ত বিদ্যার পরিবর্তে দেশের ছাত্রছাত্রীরা বাস্তব ভিত্তিক পড়াশোনা বা বাস্তব ভিত্তিক শিক্ষা পাবেন।
  • প্রত্যেকটি বিষয় সম্পর্কে আরো গভীরে জ্ঞান অর্জন হবে। যেটি একনগরে মুখস্ত বিদ্যায় হতো না।
  • ছাত্র-ছাত্রীদের মুখস্থ করার চাপ কমবে।
  • সমস্যার সমাধান বের করার জন্য তাঁদের দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।

আর শিক্ষকদের জন্য যে যে সুবিধা হবে সেগুলি সম্পর্কে নিম্ন আলোচনা করা হলো।

 

 

  • শিক্ষকদের প্রয়োগমুখী প্রশ্নের অনুশীলন করাতে হবে।
  • শিক্ষকরা তাঁদের ছাত্র-ছাত্রীদের রেফারেন্স ব্যবহার করার কৌশল শেখাবেন।
  • শিক্ষাকেরা ছাত্রছাত্রীদের বিশ্লেষণ করার অভ্যাস গড়ে তুলবেন।
  • ছাত্র-ছাত্রীদের সমালোচনামূলক শিক্ষা ও তাঁদের বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করবেন।

 

পরীক্ষার ধরনে কি পরিবর্তন হবে?

খুব স্বাভাবিকভাবেই পরীক্ষার ধরনেও ব্যাপক পরিবর্তন আসতে চলেছে। সিবিএসই বোর্ড (CBSE Board) এমন প্রশ্ন তৈরি করবে যার উত্তর কপি করে লেখা যাবে না। বই থেকে হুবহু টুকে উত্তর দেওয়া যাবে না। অর্থাৎ বই খুলে পরীক্ষা মানে একেবারেই সহজ জলের মতো প্রশ্ন নয়। এবার থেকে প্রশ্নপত্রের ধরণে কিছু বৈশিষ্ট্য থাকবে। যেমন এবার থেকে প্রশ্নপত্র হবে-

  • বিশ্লেষণধর্মী
  • কনসেপ্ট ভিত্তিক
  • তুলনামূলক এবং যুক্তিভিত্তিক
  • বাস্তব জীবনের উদাহরণ এর সঙ্গে যুক্ত থাকবে।

তাই প্রথম থেকেই ছাত্রছাত্রীদের তৈরি হতে হবে। আর এই কাজে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে অভিভাবক এবং শিক্ষকদের।

 

উপসংহার

ছাত্রছাত্রীরা এই পরীক্ষা পদ্ধতির সঙ্গে যেহেতু নতুন করে পরিচিত হচ্ছেন, তাই তাঁদের গড়ে তোলার দায়ভার নিতে হবে শিক্ষক এবং তাঁদের অভিভাবকদের। বর্তমানে সিবিএসই বোর্ড এই ঘোষণা করেছে। আগামী দিনে অন্যান্য বোর্ড একই পদ্ধতিতে পরীক্ষা পরিচালনা করতে পারে। যদি দেখা যায় এতে ছাত্র-ছাত্রীদের সার্বিক উন্নতি হচ্ছে, তাহলে সেই পথেই হাঁটবে বাকি বোর্ডগুলি।

আরও পড়ুন:- মেদ কমানোর ইনজেকশনে চোখের মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা, নতুন গবেষণায় চাঞ্চল্য

আরও পড়ুন:- রাস্তায় কুকুর কামড়ালে প্রথমেই কী করতে হয়? জানা থাকলে বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন