Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- গত ৭২ ঘণ্টায় ইজরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ইজরায়েলি ড্রোন ও যুদ্ধবিমান একের পর এক হামলা চালিয়েছে ইরানের সামরিক ও পরমাণু কেন্দ্রগুলিতে।
এই হামলায় অন্তত ৪০৬ জন ইরানি নাগরিক ও সেনার মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন প্রায় ৬৫৪ জন। যদিও ইরান দাবি করেছে, মৃতের সংখ্যা ২২৪। অন্যদিকে, ইরানের পাল্টা হামলায় ইজরায়েলে এখনও পর্যন্ত ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত বহু।
ইজরায়েলি বায়ুসেনা জানিয়েছে, তারা দেশ থেকে একেবারে ইরানের রাজধানী তেহরান পর্যন্ত ‘এয়ার করিডর’ তৈরি করে ফেলেছে। এর মানে, ইজরায়েলের যুদ্ধবিমান এখন বাধাহীনভাবে ইরানের আকাশে পৌঁছে হামলা চালাতে পারছে।
সবচেয়ে চমকে দেওয়া হামলাটি হয়েছে ইরানের মাশহাদ বিমানবন্দরে। সেখানে ২৩০০ কিমি দূর থেকে এক ইরানি ফুয়েল ট্যাংকার বিমানকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। বিমানটি আগুনে পুড়ে যায়।
ইজরায়েল প্রথমেই হামলা করে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র নানতাজে। দাবি করা হয়েছে, সেখানে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ যন্ত্রপাতি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। এছাড়াও ইস্ফাহান ও ফোর্ডোতেও পরমাণু স্থাপনাগুলিতে বোমাবর্ষণ হয়েছে।
তেহরান সহ একাধিক শহরের সামরিক ঘাঁটি, ক্ষেপণাস্ত্র নির্মাণ কেন্দ্র ও ডিফেন্স ফ্যাক্টরি ধ্বংস করেছে ইজরায়েল। দক্ষিণ ইরানের এক রিফাইনারিতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছে। তাবরিজ ও কারমানশাহতে দুটি বড় মিসাইল বেস একেবারে উড়িয়ে দিয়েছে আইডিএফ (ইজরায়েল ডিফেন্স ফোর্স)।

আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলি জানিয়েছে, ইজরায়েলের এই টানা হামলায় ইরানের সামরিক শীর্ষ নেতৃত্বের এক বড় অংশই নিহত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে রয়েছেন— সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি, আইআরজিসি (Islamic Revolutionary Guard Corps) প্রধান হুসেইন সালামি,এয়ারোস্পেস কম্যান্ডার আমির আলি হাজিজাদেহ, গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ কাজমি এবং তাঁর ডেপুটি হাসান মহাকিক, সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনেই-র নিরাপত্তা উপদেষ্টা আলি শামখানি

ইজরায়েল একের পর এক পরমাণু বিজ্ঞানীদের নিশানা করেছে। নিহত বিজ্ঞানীদের মধ্যে রয়েছেন: ফিজিসিস্ট মোহাম্মদ তেহরাঞ্চি, ইরানের পরমাণু শক্তি দফতরের প্রাক্তন প্রধান ফেরেয়দৌন আব্বাসি-দোয়ানি, শাহিদ বেহেশ্তি ইউনিভার্সিটির দুই অধ্যাপক আব্দুল হামিদ মিনোচেহর ও আহমদ রেজা জোলফগারি। আর কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞানী। বিশেষজ্ঞদের মতে, এভাবে একসঙ্গে এত বিজ্ঞানীর মৃত্যু ইরানের নিউক্লিয়ার প্রোগ্রামকে ১০ বছরের পিছিয়ে দিতে পারে।

ইরানও চুপ করে বসে নেই। তারা ১০০-২০০টি ব্যালিস্টিক মিসাইল ও ড্রোন ইজরায়েলের দিকে ছুড়েছে। কিছু মিসাইল ইজরায়েলের আয়রন ডোম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে ঢুকে পড়ে।

তেল আভিভ, রামাত গান, বাট ইয়াম এবং রেহোভটে ভয়ঙ্কর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হাইফা বন্দর, ইজরায়েলের সবচেয়ে বড় তেল রিফাইনারি এবং ১৫০টি সামরিক ও গোয়েন্দা ঘাঁটিতে ইরানি মিসাইল আঘাত হেনেছে। ইরানের হামলার পরে ইজরায়েলে জাতীয় জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে। রাজধানী জেরুজালেম, তেল আভিভ, হাইফায় বেজে উঠছে হুইসেল। লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রাণ বাঁচাতে বাঙ্কারে আশ্রয় নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন:- কলকাতায় সেরা খাসির মাংস বিক্রি হয় এই ৯ দোকানে।