একাধিক মেয়েকে টেক্সট, ‘তোমার জন্য বউকে খুন করে দিয়েছি,’ অভিযুক্ত ডাক্তার !

By Bangla News Dunia Dinesh

Published on:

চিকিৎসকের হাতে চিকিৎসকের মৃত্যু, এই আলোচিত হত্যাকাণ্ড ঘিরে নতুন এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে। বেঙ্গালুরুর ডাঃ মহেন্দ্র রেড্ডি জি.এস, যিনি তাঁর স্ত্রী ও চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ কৃত্তিকা এম রেড্ডিকে হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন। অপরাধের কয়েক সপ্তাহ পর একাধিক মহিলার কাছে পাঠিয়েছিলেন একটি ভয়ঙ্কর বার্তা, ‘তোমার জন্য আমার স্ত্রীকে হত্যা করেছি।’

অপরাধের পর গোপন বার্তা
তদন্তকারী সূত্রের দাবি, মহেন্দ্র রেড্ডি অন্তত চার থেকে পাঁচজন মহিলাকে ফোনপে (PhonePe) অ্যাপের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর সময় ‘লেনদেন নোট’ অংশে এই বার্তা লিখেছিলেন। প্রাপকদের মধ্যে এক চিকিৎসকও ছিলেন, যিনি তাঁর প্রেম প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।

পুলিশ তাঁর বাজেয়াপ্ত করা মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে (FSL) পাঠায়। সেখানেই ওই বার্তাগুলি উদ্ধার হয়, যা এখন তদন্তের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

‘চিকিৎসার ছদ্মবেশে’ হত্যা
পুলিশি অভিযোগ অনুযায়ী, অক্টোবর মাসের শুরুতে মহেন্দ্র রেড্ডি তাঁর স্ত্রী কৃত্তিকাকে প্রোপোফল (Propofol) নামক একটি শক্তিশালী অ্যানেস্থেটিক ড্রাগ প্রয়োগ করেন। যা কেবলমাত্র অপারেশন থিয়েটারে ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে।

দুজনেই বেঙ্গালুরুর ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। তারা ২৬ মে, ২০২৪ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু মাত্র ১১ মাস পর, ২৩ এপ্রিল, ২০২৫ তারিখে, কৃত্তিকা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং মারাঠাহল্লির পৈতৃক বাড়িতে মারা যান।

মহেন্দ্র দাবি করেছিলেন, তিনি স্ত্রীর চিকিৎসা করছিলেন এবং ইনজেকশনগুলি তাঁর চিকিৎসার অংশ। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনাটি স্বাভাবিক মৃত্যু বলে ধরা হয়েছিল। কিন্তু কৃত্তিকার বোন ডাঃ নিকিতা রেড্ডি সন্দেহ প্রকাশ করে নতুন তদন্তের দাবি জানান। ছমাস পর এফএসএল রিপোর্টে কৃত্তিকার শরীরে প্রোপোফলের উপস্থিতি পাওয়া যায়। যা স্পষ্ট প্রমাণ করে যে তাঁকে চেতনানাশক প্রয়োগ করা হয়েছিল।

নতুন প্রমাণ সামনে আসার পর মামলা পুনরায় শ্রেণিবদ্ধ করা হয় ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (BNS) ২০২৩-এর ধারা ১০৩ অনুযায়ী, অর্থাৎ ‘হত্যা’ হিসেবে। এরপর মহেন্দ্র রেড্ডিকে উদুপির মণিপাল থেকে গ্রেফতার করে বেঙ্গালুরু পুলিশ।

অপরাধী পরিবারের অতীত ইতিহাস
তদন্তে আরও উঠে এসেছে, মহেন্দ্র রেড্ডির পরিবারের অতীতও কম বিতর্কিত নয়। তাঁর যমজ ভাই ডাঃ নগেন্দ্র রেড্ডি জি.এস ২০১৮ সালে একাধিক প্রতারণা ও অপরাধমূলক মামলার মুখোমুখি হন। অন্য ভাই রাঘব রেড্ডির সঙ্গেও ২০২৩ সালে এক হুমকি মামলায় মহেন্দ্রর নাম জড়ায়। কৃত্তিকার পরিবার অভিযোগ করেছে, বিয়ের সময় এই অপরাধমূলক পটভূমি সম্পূর্ণ গোপন রাখা হয়েছিল।

তদন্ত অব্যাহত
পুলিশ এখন মহেন্দ্র রেড্ডির ফোন ও ডিজিটাল রেকর্ড খতিয়ে দেখছে, তিনি যাঁদের কাছে উক্ত বার্তা পাঠিয়েছিলেন তাঁদের মধ্যে কেউ হত্যার আগে বা পরে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগে ছিলেন কি না। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই বার্তাগুলি তাঁর মানসিক অবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত বহন করে, যা আদালতে প্রমাণ হিসেবে প্রভাব ফেলতে পারে।

Bangla News Dunia Dinesh

মন্তব্য করুন