Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- সম্প্রতি বিজেপি নেতাদের লাথি মেরে বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ করার হুঁশিয়ারি দিয়ে বিতর্কে জড়ান তৃণমূলের মালদা জেলার সভাপতি ও বিধায়ক আব্দুল রহিম বক্সী । এবার একই সুর শোনা গেল শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ বিজেপির সংখ্যালঘু সেলের নেতা কাশেম আলির গলায় । সন্দেশখালি থেকে হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বলেন, “রোহিঙ্গা-সহ তৃণমূল নেতাদের গাছে বেঁধে জল-বিচুটি লাগিয়ে বাংলাদেশে পাঠাব ।”
রবিবার বিকেলে উত্তর 24 পরগনার সন্দেশখালির বেড়মজুর এলাকায় এক প্রতিবাদ সভা আয়োজিত হয় বিজেপির তরফে । সভায় হাজির ছিলেন বিজেপির সংখ্যালঘু সেলের রাজ্য কমিটির সদস্য কাশেম আলি । সেই সঙ্গে, উপস্থিত ছিলেন দলের বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুকল্যাণ বৈদ্য, সন্দেশখালি আন্দোলনের অন্যতম প্রতিবাদী মুখ পিয়ালী দাস ওরফে মাম্পি ।
মঞ্চে বক্তব্য রাখার সময় রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই সুর চড়াতে শুরু করেন বিজেপি নেতা কাশেম আলি । তিনি বলেন, “বেড়মজুর এলাকার আশপাশে তৃণমূলের কয়েকটা পিচকে চোর থাকবে না, তা কখনও হয় নাকি ! এরা গরু-কয়লা থেকে টাকা খাচ্ছে । বালি থেকেও কাটমানি খাচ্ছে । এখন আবার নতুন পদ্ধতি নিয়েছে । শ্মশান থেকে দেহ চুরি করে কঙ্কাল বেঁচে খাচ্ছে । তৃণমূল নেতাদের অবস্থা খুবই খারাপ ।”
বিজেপি নেতার অভিযোগ, “চোর নেতারা অন্য জায়গায় পালিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছে ! তাই, পালিয়ে যাওয়ার আগে দুর্নীতিগ্রস্ত এই সমস্ত তৃণমূল নেতাদের ধরে গাছে বেঁধে রাখুন । এমন ট্রিটমেন্ট দেবেন যাতে সহজে কেউ ভুলতে না-পারে । আপনার সন্তানের অধিকার সুরক্ষিত রাখতে হলে তৃণমূলের চোর নেতাদের বেঁধে রাখার পর জল-বিচুটি লাগিয়ে দেবেন । এই কাজ একমাত্র পারবেন মায়েরাই ।” সেই সঙ্গে হুঁশিয়ারির সুরে বিজেপি নেতা বলেন, “তৃণমূলের যে সমস্ত নেতারা রোহিঙ্গাদের সমর্থন করছেন । তাঁদের বলব, একবার SIR চালু হতে দিন । তারপর নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সেই সমস্ত নেতাদের বুলডোজারে করে ঘোজাডাঙা সীমান্ত দিয়ে ফেলে আসব বাংলাদেশে ।”
শাসক দলের নেতাদের কবে ওপার বাংলায় পাঠানো হবে, তা-ও বাতলে দিয়েছেন পদ্ম শিবিরের এই নেতা । কাশেমের কথায়, “SIR চালু হলেই রোহিঙ্গা সমর্থনকারী তৃণমূল নেতাদের ঘোজাডাঙা সীমান্ত দিয়ে বুলডোজারে করে ওপারে পাঠাব ।” বিজেপির সংখ্যালঘু নেতার বিতর্কিত এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে রাজ্যের রাজনৈতিক অন্দরে শুরু হয়েছে বিতর্ক । যদিও, তাঁর এই হুঁশিয়ারিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ শাসক শিবির । উল্টে কাশেম আলিকে বিজেপির একজন চুনোপুঁটি নেতা বলে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল নেতৃত্ব ।
এক টাকার কয়েনের সঙ্গে রাজ্যের শাসক দলের তুলনা টেনে-ও কটাক্ষ করেছেন গেরুয়া শিবিরের এই নেতা । কাশেমের মতে, “তৃণমূলের অবস্থা অনেকটা এক টাকার কয়েনের মতো । বাজারে আছে, অথচ মানুষ নিতে চাইছে না । ওরা ভাবছে একটু ধমকে চমকে কেরামতি দেখাবে । কিন্তু, এবার আর হবে না । SIR চালু হওয়ার পরে দেখা যাবে বিহারের থেকেও বেশি নাম বাদ গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে । সেই কারণে ভয় পাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেস ।”
বিজেপির সংখ্যালঘু নেতাকে পাল্টা জবাব দিয়েছে শাসক শিবিরও । স্থানীয় তৃণমূল নেতা আব্দুল ওয়াইদ ঢালি বলেন, “কাশেম আলি নিজেই এক টাকার কয়েনের মতো নেতা । ওনার কথার কোনও গুরুত্ব নেই । আসলে বিজেপি ওকে যেমন চাইছে তেমনভাবে ব্যবহার করছে । আগে বিজেপির এই নেতা তৃণমূলে ছিল । এখন আর কেউ ওকে সেভাবে নেয় না । বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর যেভাবে অত্যাচার চলছে, তার জবাব আগে দিক কাশেম আলির দল ! তারপর যেন এসব কথা বলে । পশ্চিমবঙ্গ তথা সন্দেশখালিতে বিজেপির কিছু নেই । বাংলা দখলের স্বপ্ন তাদের দিবাস্বপ্ন হয়েই থেকে যাবে ।”