Bangla News Dunia, Pallab : অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক মহলের তীব্র সমালোচনার মুখে শনিবার থেকে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আকাশপথে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ শুরু করেছে ইজরায়েল। ইজরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ময়দা, চিনি ও টিনজাত খাবার সহ সাত প্যালেট খাদ্যদ্রব্য ফেলা হয়েছে (যা একটি ট্রাকভর্তি খাদ্যের চেয়েও কম বলে মনে করা হচ্ছে)। এরই পাশাপাশি, ইজরায়েল ঘোষণা করেছে যে, রোববার ত্রাণ বিতরণের সুবিধার্থে তারা যুদ্ধবিরতি বজায় রাখবে এবং গাজার একমাত্র সচল জল বিশুদ্ধকরণ প্ল্যান্টে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করবে, যা গত মার্চ মাস থেকে বন্ধ ছিল। এই পরিস্থিতিতে গাজায় আন্তর্জাতিক সহায়তায় কোনও রকম বাধা দেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছে ইজরায়েল।
আরও পড়ুন : পশ্চিমবঙ্গ ভোটার তালিকা সংশোধন, দেখে নিন সকলের প্রয়োজনীয় গুরুত্বপুর্ন প্রশ্ন-উত্তর
তবে, আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলো ইজরায়েলের এই পদক্ষেপকে ‘অপর্যাপ্ত’ এবং ‘ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্ভিক্ষ তৈরি’র অভিযোগকে ধামাচাপা দেওয়ার প্রয়াস বলে অভিহিত করেছে। ইজরায়েলি সামরিক বাহিনী অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তাদের এই পদক্ষেপ গাজায় মানবিক পরিস্থিতি উন্নয়নে এবং ‘ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্ভিক্ষ তৈরির মিথ্যা দাবি’ খণ্ডন করার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে। যদিও ইজরায়েলি সামরিক বাহিনীর একজন কর্মকর্তা চলতি সপ্তাহেই স্বীকার করেছিলেন যে, গাজায় ‘খাদ্য সুরক্ষার অভাব’ রয়েছে। প্রসঙ্গত, মার্চ মাস থেকে নেতানিয়াহু সরকার হামাসকে সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে গাজায় খাদ্য ও ঔষধ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছিল।
ইজরায়েলের এই আকাশপথে ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচী জর্ডন থেকে ইজরায়েলি বিমান বাহিনীর মাধ্যমে পরিচালিত হয়। গাজা-ইজরায়েল যুদ্ধের শুরু থেকে এই প্রথম ইজরায়েল সরাসরি গাজায় ত্রাণ বিতরণ করল। প্রসঙ্গত, বিশ্বজুড়ে প্যালেস্টাইনের শিশুদের মৃতদেহ এবং অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের ছবি ছড়িয়ে পড়ায় ইজরায়েল তীব্র আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে পড়েছে। আর ইজরায়েলের এই পদক্ষেপটি সেই আন্তর্জাতিক চাপের ফলেই নেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। জর্ডনের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, “জর্ডন গাজার মানুষকে যেকোনও উপায়ে সাহায্য করতে প্রস্তুত, সেটা স্থলপথের কনভয় হোক বা আকাশপথে ত্রাণ বিতরণ হোক।” তিনি আরও বলেন, “মানুষ ক্ষুধার্ত।”
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার বলেছেন যে, “ব্রিটেন জরুরি ভিত্তিতে জর্ডন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করছে যাতে ব্রিটিশ সাহায্য বিমানে করে গাজায় পৌঁছানো যায়।” স্টারমার ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জের সঙ্গে এক ফোন কলে গাজার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন বলেও জানিয়েছে ব্রিটিশ সরকার।