বিহারে ভোটার তালিকা ঠিক না হলে পুরো সংশোধন বাতিল করতে পারে সুপ্রিম কোর্ট !চলতি মাসের শেষে অর্থাৎ আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধনের (SIR) সব রকমের কাজ শেষ করতে হবে—এমনটাই জানিয়ে দিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
অক্টোবর মাসের যে কোন দিনেই অফিসিয়াল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন পশ্চিমবঙ্গে ভোটার কার্ড ভেরিফিকেশন (Special Intensive Revision In West Bengal) শুরুর বিষয়ে।
বুধবার দিল্লিতে সব রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে কমিশন জানায়, কোনও যোগ্য ভোটারের নাম যেন বাদ না পড়ে, আবার অযোগ্য কারও নাম যেন তালিকায় না থাকে, এই ব্যাপারে সবাইকে যত্নবান হতে হবে।
Sir In West Bengal
দেশের শীর্ষ আদালতের কড়া বার্তা
এরই মধ্যে সোমবার এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টও গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিয়েছে। বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন—
ভোটার তালিকার সংশোধনের ক্ষেত্রে যদি কোনও অবৈধ পদ্ধতি ধরা পড়ে, তাহলে বিহারের বিশেষ নিবিড় সংশোধনের পুরো প্রক্রিয়াই বাতিল হয়ে যেতে পারে।
আদালত বলেছে, নির্বাচন কমিশন যেহেতু সাংবিধানিক সংস্থা, তাই আইনের সব নিয়ম মেনেই কাজ করতে হবে। দেশের অন্য জায়গাতেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে, তাই একেকটা রাজ্যের আলাদা ঘটনা নিয়ে আলাদা মন্তব্য আদালত করবে না।
আধার নথি হিসাবে বাধ্যতামূলক
সুপ্রিম কোর্ট সোমবার স্পষ্ট করে দেয় যে, বিহারে ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধনের সময় আধার কার্ডকে পরিচয়পত্র হিসেবে নিতেই হবে। কমিশন চাইলে জমা দেওয়া আধার নম্বরের বৈধতা খতিয়ে দেখতে পারে।
আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পরেই জাতীয় নির্বাচন কমিশন বিহারের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে চিঠি পাঠিয়ে আধার গ্রহণের কথা লিখিতভাবে জানিয়ে দিয়েছে।
রাজ্যগুলির মতামত
রাজ্য সরকারের মতামতও খুঁজে দেখছে কমিশন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক জানিয়েছে, ভোটার তালিকার সংশোধনের সময় শুধু আধার নয়, রেশন কার্ড আর স্বাস্থ্য সাথী কার্ডকেও বৈধ নথি হিসেবে ধরা হোক—এই প্রস্তাব পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার।
মুখ্যমন্ত্রীর আপত্তি
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলছেন, এত তাড়াহুড়ো করে কয়েক মাসের মধ্যে এত বড় কাজ শেষ করা সম্ভব নয়। তাঁর কথায়, “বিজেপির খুশি করার জন্য দু–তিন মাসে এত বড় সংশোধন সম্ভব নয়, কম করে দুই-তিন বছর সময় লাগে।”
সবশেষে
সব মিলিয়ে এখন নজর বিহার থেকে শুরু করে দেশের সব রাজ্যের দিকে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিশেষ সংশোধনের কাজ শেষ করতে পারল কি না, সেটা নিয়েই তৈরি হয়েছে চাপা উত্তেজনা। কমিশন, রাজ্য সরকার আর আদালতের নির্দেশ—তিন দিক থেকেই কড়া নজর চলছে।