Bangla News Dunia, Pallab : দীর্ঘ দিনের ব্যবধান ভেঙে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোড়া লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছে পাকিস্তান। শনিবার ঢাকায় তিন দিনের সফরে এসেছেন পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী তথা বিদেশমন্ত্রী ইশাক দার। রবিবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বিদেশ উপদেষ্টা মহম্মদ তৌহিদ হাসানের সঙ্গে বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পাঁচটি চুক্তি বা সমঝোতাপত্র (মউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১২ সালে শেষ বার পাকিস্তানের কোনও বিদেশমন্ত্রী বাংলাদেশে গিয়েছিলেন।
এই সফরকে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা বলে মনে করা হচ্ছে। স্বাক্ষরিত চুক্তিগুলির মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হল সরকারি এবং কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা বিলুপ্তি। এর পাশাপাশি, বাণিজ্যিক সহযোগিতা বাড়াতে একটি যৌথ কমিটি গঠন এবং সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বিনিময়ের কর্মসূচি নিয়েও সমঝোতা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক বরাবরই শীতল ছিল। বিশেষত, শেখ হাসিনার শাসনামলে কূটনৈতিক সম্পর্ক তেমন এগোয়নি। তবে গত বছর বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করে। সম্প্রতি পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নকভি এবং বাণিজ্যমন্ত্রী জাম কামাল খানের ঢাকা সফরের পর এবার এলেন পাক বিদেশমন্ত্রী।
বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় দার ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময়ের অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে মন্তব্য করেন। তিনি দাবি করেন, এই সমস্যাগুলির সমাধান দু’বার করা হয়েছে— একবার ১৯৭৪ সালের ত্রিপাক্ষিক চুক্তির মাধ্যমে এবং দ্বিতীয়বার ২০০০ সালের শুরুতে জেনারেল পারভেজ মোশারফের ঢাকা সফরের সময়। দার বলেন, “১৯৭৪ সালের দলিলটি দুই দেশের জন্য ঐতিহাসিক।” তবে এই মন্তব্যের পর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ বরাবরই একাত্তরের গণহত্যার জন্য পাকিস্তানের নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা, ক্ষতিপূরণ এবং সম্পদের ন্যায্য ভাগের দাবি করে এসেছে।
সফরের দ্বিতীয় দিনে পাক বিদেশমন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এরপর সন্ধ্যায় তিনি গুলশানে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বাসভবনে যেতে পারেন বলেও খবর রয়েছে।