বৃষ্টি বন্যার ক্ষতিপূরণের টাকা দিচ্ছে মমতা | krishak bandhu taka kobe dibe 2025

By Bangla News Dunia Desk - Pallab

Published on:

Krishak Bandhu Taka Kobe Bibe 2025: প্রকৃতির তাণ্ডব! ধস-অতিবৃষ্টিতে ভাঙা ঘর তুলতে আর্থিক সহায়তা, উত্তরবঙ্গবাসীর পাশে মুখ্যমন্ত্রী

চলতি বছরের প্রতিদিন বৃষ্টি লেগেই রয়েছে। অতিবৃষ্টি আর ধস মিলিয়ে এবার একেবারে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে গোটা উত্তরবঙ্গ। দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার থেকে কোচবিহার—সব জায়গাতেই পাহাড়-নদী মিলিয়ে এক ভয়ঙ্কর অবস্থা।

ঘরবাড়ি ভেসে গেছে, রাস্তা ভেঙে পড়েছে, বহু গ্রাম বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রবীণরা বলছেন, “এমন দৃশ্য এর আগে জীবনে দেখিনি!” প্রকৃতির তাণ্ডবে কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল পাহাড়, কিন্তু দুর্যোগ থামতেই রাজ্য প্রশাসন ঝাঁপিয়ে পড়েছে উদ্ধারকাজে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে মাঠে নেমে বিপর্যয় মোকাবিলার কাজ দেখছেন। দার্জিলিং ও কালিম্পং পরিদর্শন করে তিনি ইতিমধ্যেই আশ্বাস দিয়েছেন—যাঁদের বাড়িঘর নষ্ট হয়ে গেছে, তাঁদের নতুন করে বাড়ি তৈরির জন্য রাজ্য সরকারই পাশে থাকবে।

মুখ্যমন্ত্রীর ভাষায়, “মানুষের ঘর যদি না থাকে, তাহলে কিছুই থাকে না। সরকার মানুষের পাশে আছে, থাকবে।”

আরও পড়ুন:- আপনার পূর্বপুরুষদের কত টাকা, সম্পত্তি রয়েছে চেক করুন | RBI Unclaimed Deposit Incentive Scheme

রাজ্যের নতুন আর্থিক সহায়তা

নবান্ন সূত্রে খবর, যাঁদের বাড়ি পুরোপুরি ধসে পড়েছে বা ভেসে গেছে, তাঁদের প্রতি পরিবারকে দেওয়া হবে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে সাহায্য। এই অর্থ যাবে রাজ্যের দুর্যোগ মোকাবিলা তহবিল থেকে।

আগে যেখানে পাকা বাড়ি ভাঙলে ৩৫ হাজার টাকা আর কাঁচা বাড়ি ভাঙলে ২০ হাজার টাকা দেওয়া হতো, সেখানে এবার সাহায্যের অঙ্ক প্রায় চারগুণ বাড়ানো হয়েছে।

প্রশাসনের এক কর্তা জানান, “আগের টাকায় এখন একটা ঘরের দেওয়াল তোলাও মুশকিল। তাই মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যাতে ক্ষতিগ্রস্তরা সত্যি সত্যি মাথা গোঁজার ঠাঁই পান।”

‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের অভিজ্ঞতা

কেন্দ্র সরকার ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’-র টাকা না দেওয়ায় রাজ্য নিজের উদ্যোগে চালু করেছে ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্প। সেই প্রকল্পে ঘর তৈরির জন্যও এতদিন ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছিল। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় এই প্রকল্পের আওতায় বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার অভিজ্ঞতাই এবার কাজে লাগাচ্ছে সরকার।

ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির চিত্র

জেলা প্রশাসনের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, সাম্প্রতিক এই দুর্যোগে উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলায় মোট ১২,০৬২টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এর মধ্যে ৬,০০৫টি সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে,

৯৭১টি বাড়ি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত,

এবং ৫,০৮৬টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত।

সম্পূর্ণ ধসে পড়া ঘরের জন্য টাকার পরিমাণ ঠিক করা হলেও, যেসব ঘর আংশিক বা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের জন্য কত টাকা দেওয়া হবে তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

বর্তমানে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ঘর মেরামতের জন্য রাজ্য সরকার দেয় ৫ হাজার টাকা, তবে সেটিও বাড়ানোর ভাবনা চলছে।

আরও পড়ুন:- ভাতার টাকা বাড়ছে ১০০০ বদলে ১৫০০ টাকা হচ্ছে | Old Age Pension West Bengal

প্রশাসনের পরবর্তী পদক্ষেপ

রাজ্য জুড়ে এখন ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করছে জেলা প্রশাসন। মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে ভার্চুয়াল বৈঠকে প্রতিটি জেলার জেলাশাসক অংশ নিয়েছেন।

কোথায় কতটা ক্ষতি, কত পরিবার বাস্তুচ্যুত, কে কার বাড়ি হারিয়েছেন—সব হিসেব উঠে আসছে ধীরে ধীরে। মুখ্যমন্ত্রী খুব শীঘ্রই ফের উত্তরবঙ্গে গিয়ে পুনর্গঠনের কাজ স্বচক্ষে দেখে আসবেন বলে জানা গিয়েছে।

মানুষ পাশে পেয়েছে রাজ্যকে

পাহাড়ের মানুষ বলছেন, “যখন সব শেষ, তখন সরকারের লোক এসেছে। সাহায্যের আশ্বাস শুনে মনটা একটু ভরসা পেয়েছি।”

রাজ্যের তরফে সেনা, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (NDRF) ও স্থানীয় প্রশাসন একযোগে কাজ করছে—উদ্ধার, ত্রাণ ও পুনর্গঠনের লক্ষ্যে।

এই দুর্যোগ হয়তো সময় নেবে সামলাতে, কিন্তু আশার কথা—উত্তরবঙ্গের মানুষ একা নন। রাজ্য সরকার তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, নতুন করে ঘর তুলতে, নতুন করে জীবন শুরু করতে।

আরও পড়ুন:- SIR Documents List West Bengal | SIR Form West Bengal

সমস্ত খবরের আপডেট সবার আগে পাওয়ার জন্য আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেল এবং টেলিগ্রাম চ্যানেলে আপনারা যুক্ত হয়ে যান নিচের লিংকে ক্লিক করে

Bangla News Dunia Desk - Pallab

মন্তব্য করুন