Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- প্রতি বছর 7 এপ্রিল পালিত বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস ৷ আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে স্বাস্থ্য কেবল শারীরিক স্বাস্থ্যের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । ডায়েটিশিয়ান জয়শ্রী বণিক বলেন, “আজকের সময়ে যেখানে মানসিক চাপ, উদ্বেগ এবং বিষণ্ণতার মতো মানসিক ব্যাধিগুলি বেশি হয়ে উঠেছে, সেখানে একটি ভালো খাদ্যাভ্যাস কেবল শরীরকে সুস্থ রাখে না, মনকেও শান্ত এবং সক্রিয় রাখে ।”
এই বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসে এমন খাবার সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক যা মানসিক এবং শারীরিক উভয় স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং যেগুলি আপনি সহজেই আপনার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন ।
WHO- এর মতে, স্বাস্থ্য হল সম্পূর্ণ শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক সুস্থতার একটি অবস্থা, কেবল রোগ এবং দুর্বলতার অনুপস্থিতি নয় । ডায়েটিশিয়ান জানান, শারীরকে সুস্থ রাখার যে গুরুত্ব দেওয়া হয় তার থেকেও বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত মানসিক স্বাস্থ্যের উপর ৷ জেনে নিন কী কী খাবেন ?
আখরোট: আখরোটে ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায় যা মস্তিষ্কের কোষগুলিকে শক্তিশালী করে এবং স্মৃতিশক্তি তীক্ষ্ণ করে । গবেষণায় দেখা গিয়েছে প্রতিদিন 4-5টি আখরোট খেলে মানসিক চাপ কমে এবং মেজাজ ভালো থাকে ।
আখরোট (ফাইল চিত্র)
কীভাবে খাবেন ?
সকালে খালি পেটে 4-5টি আখরোট জলে ভিজিয়ে খান । আপনি এগুলি স্যালাড বা স্মুদিতেও যোগ করতে পারেন ।
ডার্ক চকলেট: ডার্ক চকলেট কেবল মেজাজই উন্নত করে না, বরং এতে উপস্থিত ফ্ল্যাভোনয়েড এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মানসিক ক্লান্তি দূর করে এবং জ্ঞানীয় কার্যকারিতা উন্নত করে ।
ডার্ক চকলেট (ফাইল চিত্র)
কীভাবে খাবেন ?
দিনে একবার 20-30 গ্রাম ডার্ক চকলেট খান । তবে এটি কমপক্ষে 70% কোকো থাকা প্রয়োজন ।
সবুজ শাকসবজি: পালং শাক, মেথি এবং সর্ষের মতো সবুজ শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে ফোলেট, আয়রন এবং ভিটামিন কে থাকে, যা মনকে তীক্ষ্ণ এবং শরীরকে উদ্যমী রাখে ।
সবুজ শাকসবজি (ফাইল চিত্র)
কীভাবে খাবেন ?
এই সবজিগুলো আপনার খাদ্যতালিকায় সবজি, পরোটা বা স্যুপ আকারে অন্তর্ভুক্ত করুন । দিনে একবার এটি খেতে ভুলবেন না । তবে শাক চেষ্টা করবেন দিনের বেলা খাওয়া ৷ রাতে শাক অনেকসময় হজমের সমস্যা হতে পারে ৷
ডিম: ডিমে কোলিন নামক একটি উপাদান পাওয়া যায়, যা মস্তিষ্কের কোষ গঠনে সাহায্য করে । এটি স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে এবং ঘনত্ব উন্নত করে ।
কীভাবে খাবেন ?
ব্রেকফাস্টে সেদ্ধ ডিম, অমলেট অথবা এগ-টোস্ট খেতে পারেন । দিনে 1-2টি ডিমই যথেষ্ট ।
দই: দইয়ে থাকা প্রোবায়োটিক পাকস্থলীর পাশাপাশি মস্তিষ্কের জন্যও উপকারী । একটি সুস্থ অন্ত্র মনকেও শান্ত রাখে ।
কীভাবে খাবেন ?
দুপুরের খাবারে এক বাটি দই খান অথবা স্মুদিতে মিশিয়ে নিন ।
ফ্ল্যাক্স সিড: ফ্ল্যাক্স সিডে ওমেগা-3, ফাইবার এবং লিগনান থাকে যা হৃদপিণ্ড এবং মস্তিষ্ক উভয়ের জন্যই উপকারী । এটি মেজাজের পরিবর্তন এবং উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে ।
কীভাবে খাবেন ?
1 চা চামচ তিসির বীজ ভেজে গুঁড়ো করে নিন এবং দই, পোরিজ বা শেকে মিশিয়ে খান ।
বেরি (ফাইল চিত্র)
বেরি: ব্লুবেরি, স্ট্রবেরি এবং পেয়ারার মতো বেরিগুলিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে যা মস্তিষ্কের প্রদাহ কমায় এবং মানসিক ক্লান্তি দূর করে ।
কীভাবে খাবেন ?
আপনি ব্রেকফাস্টে দই বা দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন অথবা চাইলে জলখাবার হিসেবেও খেতে পারেন ।
হলুদ: হলুদে পাওয়া কারকিউমিন মস্তিষ্কের প্রদাহ কমায় এবং মস্তিষ্কের কোষগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে রক্ষা করে । এটি বিষণ্ণতা এবং উদ্বেগ দূরে রাখতেও সহায়ক ।
কীভাবে খাবেন ?
প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে হলুদের দুধ পান করা একটি দুর্দান্ত অভ্যাস ৷
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনে উল্লেখিত তথ্য শুধুমাত্র ধারণা আর সাধারণ জ্ঞানের জন্যই লেখা হয়েছে ৷ এখানে উল্লেখিত কোনও পরামর্শ অনুসরণের আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন ৷ যদি আগে থেকেই কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে থাকে, তা আগেই চিকিৎসককে জানাতে হবে ৷)