Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- 2025 সালের এই স্বাধীনতা দিবসে, ভারতীয় বিনোদন জগতের আইকনিক সিনেমা ‘শোলে’ (Sholey) পূর্ণ করল মুক্তির 50 বছর ৷ 1975 সালের আজকের দিনেই মুক্তি পায় রমেশ সিপ্পির শোলে ৷ সাতের দশকে সর্বোচ্চ আয়কারী ছবি ছিল এই সিনেমা যা 5 বছর অর্থাৎ 2000 দিন ধরে প্রেক্ষাগৃহে চলেছিল। শোলে খুবই কম বাজেটে তৈরি হয় ৷ অথচ মুক্তির পর এই সিনেমার ঝুলিতে আসে বাজেটের 10 গুণেরও বেশি টাকা ৷ শোলে-র 50 বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে জেনে নেওয়া যাক সিনেমার অজানা বেশ কিছু ইন্টারেস্টিং তথ্য ৷
ছবির বাজেট-তারকাদের পারিশ্রমিক
শোলে পরিচালনা করেন রমেশ সিপ্পি ৷ গল্পটি লিখেছিলেন সেলিম-জাভেদ জুটি। শোলে-র বাজেট ছিল 3 কোটি টাকা ৷ ছবিটি বক্সঅফিসে আয় করে 35 কোটি টাকা ৷ অভিনেতাদের পারিশ্রমিকের কথা বলতে গেলে, ধর্মেন্দ্র (Dharmendra) এতে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন। বীরু চরিত্রের জন্য ধর্মেন্দ্র পেয়েছেন 1.5 লক্ষ টাকা ৷ ‘ঠাকুর’ চরিত্রে অভিনয় করা সঞ্জীব কুমার পেয়েছেন 1.25 লাখ টাকা। জয় চরিত্রে অভিনয় করা অমিতাভ বচ্চন (Amitabh Bachchan) সিনেমায় পারিশ্রমিক হিসাবে পান 1 লাখ টাকা ৷ বাসন্তী অর্থাৎ হেমা মালিনীর পারিশ্রমিক ছিল 75 হাজার টাকা ৷
অন্যদিকে, খলনায়ক গব্বরের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য অভিনেতা আমজাদ খান (Amjad Khan) নেন 65 হাজার টাকা ৷ রাধার চরিত্রে অভিনয়ের জন্য জয়া বচ্চন পান মাত্র 35 হাজার টাকা ৷ পাশাপাশি সাম্ভার চরিত্রে অভিনয়ের জন্য অভিনেতা ম্যাক মোহন 12 হাজার টাকা, কালিয়ার চরিত্রে অভিনয়ের জন্য বিজয় খোটে 10 হাজার টাকা এবং ইমাম সাহেবের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য অভিনেতা একে হাঙ্গাল 8 হাজার টাকা পারিশ্রমিক পেয়েছেন।
- প্রথমে এই প্রোজেক্ট থেকে জাভেদ আখতার আমজাদ খানকে সরিয়ে দেবে ভেবেছিলেন ৷ কারণ, আমজাদের গলার স্বর শুনে তিনি বিশ্বাস করতে পারেননি একজন দোর্দন্ডপ্রতাপ ডাকাতের চরিত্র পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে পারবেন অভিনেতা আমজাদ ৷ তবে জাভেদ আখতারের (Javed Akhtar) সেই সংশয়কে ফুৎকারে উড়িয়ে দেন অভিনেতা ৷ পর্দায় গব্বর সিং (Gabbar Singh’s role) চরিত্রে আমজাদ খান চিরস্মরনীয় ৷
- সাতের দশকে ব্লকব্লাস্টার হিট করা শোলে আয়ের দিক থেকে উপরে থাকলেও পুরস্কারের ঝুলি ছিল প্রায় শূন্য ৷ কাল্ট এই সিনেমা পায় মাত্র একটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কার ৷ তাও আবার সেরা এডিটিং-এর জন্য ৷ সেরা সিনেমা, সেরা সংলাপ, সেরা পরিচালনা ইত্যাদি সব পুরস্কার যায় অমিতাভ বচ্চন ও শশী কাপুর অভিনীত ‘দিওয়ার’ (Deewar) সিনেমার ঝুলিতে ৷
এটি ছিল ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে প্রথম ছবি যা ভারত জুড়ে 100টিরও বেশি প্রেক্ষাগৃহে রজতজয়ন্তী (টানা 25 সপ্তাহ) ধরে চলেছে।
সিনেমায় জয় এবং বীরুর নামকরণ করা হয়েছিল সেলিম খানের কলেজের বন্ধু, ইন্দোরের খাজরানা কোঠির জায়গিরদারের ছেলে বীরন্দর সিং বিয়াস এবং পিন্ডারি যোদ্ধা ও সবজি চাষী জয় সিং রাও কালেভারের নামে।
- ‘গব্বর সিং’ চরিত্রটি এতটাই বিখ্যাত ছিল যে এক বিস্কুট কোম্পানি আমজাদ খানকে নিয়ে প্রোমোশনাল বিজ্ঞাপন তৈরি করে। প্রথমবার কোনও কোম্পানি তাদের পণ্য প্রচারের জন্য কোনও খলনায়ক চরিত্রকে বিজ্ঞাপনের মুখ হিসাবে ব্যবহার করেছিল। বিজ্ঞাপনটি শিশুদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পায় এবং বিক্রি দ্বিগুণ হয়।
পানভেলের কাছে মুম্বাই-পুনে লাইনে ট্রেন ডাকাতির দৃশ্যের জন্য প্রায় 20 দিন ধরে শুটিং হয় ৷
অভিনেতা শচীন এই সিনেমায় অভিনয়ের জন্য পারিশ্রমিক হিসেবে একটি রেফ্রিজারেটর অর্থাৎ ফ্রিজ পেয়েছিলেন।
ট্যাঙ্কের ওপর উঠে বীরুর মাসিকে হুমকি দেওয়ার বিখ্যাত দৃশ্য নিশ্চই মনে আছে ৷ পাশাপাশি জয় কীভাবে মাসিকে বীরুর সঙ্গে বাসন্তীর বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে, সিনেমার এই পুরো ঘটনা কোনও কাল্পনিক ছিল না ৷ বরং সত্য ঘটনা থেকে তুলে ধরা হয়েছিল ৷
অভিনেতা শরমন জোশির বাবা এই ছবিতে সঞ্জীব কুমারের ছেলের একজনের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।
সেলিম খান এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, কীভাবে জয়ের কয়েন ফ্লিপ করার ধারনা তিনি পেয়েছিলেন ৷ তিনি জানান, গ্যারি কুপার অভিনীত ‘গার্ডেন অফ ইভিল’ থেকে তিনি এই দৃশ্যের ধারনা পান ৷
1996 সালের 15 অগস্ট, শোলে সিনেমার 21তম বার্ষিকীতে প্রথমবারের মতো দূরদর্শনে টেলিকাস্ট হয় ৷ জানা যায়, সেই দিন দেশের অনেক জায়গায় টেলিভিশনে সিনেমা চলাকালীন রাস্তাঘাট প্রায় ফাঁকা ছিল।
জয়া বচ্চন যখন এই সিনেনার শুটিং শুরু করেন তখন তিনি গর্ভবতী ছিলেন ৷ তাঁর গর্ভে মেয়ে শ্বেতা ছিলেন ৷ শোলে যখন মুক্তি পায় তখন জয়ার গর্ভে বড় হচ্ছিলেন অভিষেক বচ্চন ৷
আরও পড়ুন:- মেদ কমানোর ইনজেকশনে চোখের মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা, নতুন গবেষণায় চাঞ্চল্য
আরও পড়ুন:- রাস্তায় কুকুর কামড়ালে প্রথমেই কী করতে হয়? জানা থাকলে বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব