Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- শেষমেশ ভারত সরকারের দীর্ঘদিনের চেষ্টার জয়। ২০০৮ সালের মুম্বইয়ে হওয়া ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী হামলার অন্যতম মূলচক্রী তহব্বুর রানাকে ভারতে আনার পথ অবশেষে পুরোপুরি খুলে গেল। কারণ, আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট তার প্রত্যর্পণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। ফলে এখন আর কোনও আইনি জটিলতা ছাড়াই তাকে ভারতে পাঠানো যাবে।
কে এই তাহাও্বুর রানা?
তাহাও্বুর রানা একজন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক। বয়স ৬৪ বছর। বর্তমানে সে লস অ্যাঞ্জেলেসের মেট্রোপলিটন ডিটেনশন সেন্টারে বন্দি অবস্থায় রয়েছে।
ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মতে, ২৬/১১ মুম্বই হামলার ছক কষার কাজে সে সরাসরি জড়িত ছিল। রানা-ই সেই ব্যক্তি, যে ডেভিড হেডলিকে ভারতে এনে বিভিন্ন জায়গার রেকি করিয়েছিল, যার ওপর ভিত্তি করেই হামলার পরিকল্পনা কার্যকর করা হয়।
শেষ চেষ্টা ব্যর্থ রানা’র
রানা গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টে একটি আপৎকালীন পিটিশন দায়ের করে, যাতে বলা হয়— যতদিন না তার হ্যাবিয়াস কর্পাস পিটিশনের শুনানি সম্পূর্ণ হচ্ছে, ততদিন যেন তাকে ভারতে পাঠানো না হয়। তবে বিচারপতি এলেনা কাগান সেই আবেদন আগেই খারিজ করে দেন।
এরপর রানা চাইলো তার আবেদন যেন সরাসরি চিফ জাস্টিস জন রবার্টসের কাছে পাঠানো হয়। সুপ্রিম কোর্ট ৪ এপ্রিল সেই আবেদন ‘কনফারেন্স’-এর জন্য তালিকাভুক্ত করে। অবশেষে ৭ এপ্রিল প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়—রানার আবেদন খারিজ করা হয়েছে। অর্থাৎ, তার হাতে আর কোনও বড় আইনি বিকল্প রইল না আমেরিকায়।
এবার ভারতেই আসছে রানা
এই রায়ের পর তাহাও্বুর রানার ভারত প্রত্যর্পণের প্রক্রিয়া কার্যত চূড়ান্ত ধাপে পৌঁছে গেছে। ভারতীয় তদন্ত সংস্থাগুলোর জন্য এটা এক বড় সাফল্য, কারণ রানার প্রত্যর্পণ হলে ২৬/১১ সংক্রান্ত তদন্ত নতুন মোড় নিতে পারে।
ডেভিড হেডলি, যে বর্তমানে আমেরিকায় শাস্তি ভোগ করছে, সে স্বীকার করেছে যে রানার সহায়তাতেই সে ভারতে প্রবেশ করেছিল এবং একাধিক শহরে রেকি করেছিল। হেডলির এই স্বীকারোক্তিতে রানার জড়িত থাকার প্রমাণ আরও শক্তিশালী হয়।
ন্যায়বিচারের পথে বড় পদক্ষেপ
দীর্ঘদিন ধরে ভারত সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো রানাকে হস্তান্তরের জন্য চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। অবশেষে সেই চেষ্টা সফল হচ্ছে। এই রায় শুধু আইনত এক বড় পদক্ষেপ নয়, ২৬/১১ হামলায় শহিদদের প্রতি এক ধরনের ন্যায়বিচারও বটে।যদিও এখনও চূড়ান্ত বিচার বাকি, তবে এটা নিশ্চিত—তাহাও্বুর রানা এবার আর পালাতে পারবে না।
চোখ এখন ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলোর দিকে—তারা কীভাবে রানাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং তার থেকে কী নতুন তথ্য সামনে আনে, সেটাই এখন দেখার বিষয়। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত-পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদের রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক চাপ আরও জোরদার হতে পারে।
আরও পড়ুন:- SSC-র চাকরিহারাদের জন্য টাস্কফোর্স গঠন, বড় পদক্ষেপ মুখ্যমন্ত্রী মমতার