Bangla News Dunia , পল্লব চক্রবর্তী : আষাঢ় মাসে মৃগশিরা নক্ষত্রের তৃতীয় পাদ অতীত হলে চতুর্থ পাদে আর্দ্রা নক্ষত্রের প্রথম পাদের মধ্যে ধরিত্রীদেবী ঋতুমতী হন । এই সময়কে অম্বুবাচী বলে। একই সময়ে অসমের নীলাচল পাহাড়ে যোনিরূপা মহামায়া কামাখ্যা ঋতুমতী হন। তিনদিন দেবী মন্দির বন্ধ থাকে। এদিন থেকেই হয় অম্বুবাচী শুরু। অর্থাৎ, পৃথিবী এই সময়ে ঋতুমতী হন।
হিন্দু শাস্ত্রে ধরিত্রীকে মা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। জননী মাতা, দেশ মাতা, ধরিত্রী মাতা।অম্বুবাচীর তিন দিন পর্যন্ত কোনো ধরনের মাংগলিক কার্য করা যায়না। চতুর্থ দিন থেকে মঙ্গলিক কাজে কোনো বাধা থাকেনা। অম্বুবাচীর সময় হাল ধরা, গৃহ প্রবেশ, বিবাহ ইত্যাদি শুভ কাজ করা নিষিদ্ধ থাকে ও এই সময়ে মঠ-মন্দিরের প্রবেশদ্বার বন্ধ থাকে।
প্রতি বছর আষাঢ় এর ৭ তারিখে এটা শুরু হয় এবং ১০ তারিখে শেষ হয় । এটা আসলে হিন্দুদের একটা লৌকিক আচার। অর্থাৎ ২২ জুন হতে ২৫ জুন পর্যন্ত অম্বুবাচী ব্রতটি বিভিন্ন প্রদেশের মানুষ পালন করে থাকলেও অসমের কামাখ্যা মন্দিরে অম্বুবাচীকে কেন্দ্র করে বিশাল উৎসব অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়ে থাকে।
শস্য শ্যামল উর্বর পৃথিবীর জন্য সন্তানগণ ধরণী মায়ের নিকট এই তিনদিন প্রার্থনা করেন। যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তার বুক থেকে উৎপন্ন শস্য খাদ্য হিসাবের গ্রহণ করে দুধে ভাতে বেচে থাকতে পারে। ঐতিহাসিক দিক থেকে দেখতে গেলে এই অম্বুবাচীর সঙ্গে কৃষিকাজের সম্পর্ক সম্পূর্ণ ভাবে জড়িত রয়েছে। শুধু ধরণী কেন এই ধরণীর বুকে বসবাসকারী গাছপালা পশু পাখি ফুল ফল জল প্রতিটি জিনিসের প্রতি সনাতন হিন্দু ধর্ম তার শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে প্রকৃতির প্রতি নিজের পূজা কে উৎসর্গ করে থাকেন।
কালের আবর্তে পড়ে বর্বরদের হাতে পড়ে হিন্দু ধর্মের সেই সুপ্রাচীন নিয়ম আজও পাল্টে যাইনি। আজও প্রতিটি হিন্দু এই অম্বুবাচী পালন করে প্রকৃতির প্রকৃতি ও তার প্রতিটি জীবের প্রতি প্রেম শ্রদ্ধা ভালোবাসাকে অর্পণ করে থাকেন।
আরো খবর পেতে ফলো করুন আমাদের চ্যানেল