২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC) শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত প্রার্থীদের একটি মামলা সুপ্রিম কোর্ট খারিজ করে দিয়েছে। এই মামলায় আবেদনকারীরা নিজেদের “অযোগ্য” তালিকা থেকে বাদ দিয়ে নতুন SLST পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতি এবং ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত চাকরি চালিয়ে যাওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন।
মামলার প্রেক্ষাপট
২০১৬ সালের SSC নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রায় ২৬,০০০ শিক্ষক ও কর্মচারীর নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় বহু চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের পর মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে পৌঁছায়। আবেদনকারীরা নিজেদের “যোগ্য” প্রমাণ করতে এবং নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদন করেন।
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ
১২ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫-এ বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। শুনানির সময় আবেদনকারীদের আইনজীবী মুকুল রোহতগি যুক্তি দেন যে, তাঁর মক্কেলদের নাম সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া “অযোগ্য” প্রার্থীদের তালিকায় ছিল না। তিনি একটি স্বাধীন সংস্থাকে দিয়ে তাঁদের যোগ্যতা খতিয়ে দেখারও আবেদন করেন।
কিন্তু বিচারপতি সঞ্জয় কুমার স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, সুপ্রিম কোর্ট আগেই এই প্রার্থীদের “অযোগ্য” বলে ঘোষণা করেছে এবং তাঁদের ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত চাকরি চালিয়ে যাওয়ার অনুমতিপ্রাপ্ত শিক্ষকদের তালিকায় রাখা হয়নি। বিচারপতি ১৭ই এপ্রিলের একটি রায়ের কথা উল্লেখ করে বলেন যে, সিবিআই-এর তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য এবং বেআইনি কার্যকলাপের ভিত্তিতেই এই প্রার্থীদের “অযোগ্য” বিভাগে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এসএসসি-র অবস্থান এবং চূড়ান্ত রায়
শুনানির সময় এসএসসি-র পক্ষ থেকে আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় স্বীকার করে নেন যে, আবেদনকারীরা সত্যিই “অযোগ্য” ছিলেন। সমস্ত পক্ষের যুক্তি শোনার পর, সুপ্রিম কোর্ট এই মামলাটি খারিজ করে দেয়। “বিকাশ পাত্র বনাম পশ্চিমবঙ্গ সেন্ট্রাল স্কুল সার্ভিস কমিশন” নামের এই মামলাটি খারিজ করার কারণ হিসেবে আদালত জানায় যে, এই আবেদনের কোনো উপযুক্ত ভিত্তি নেই।
এই রায়ের ফলে, ২০১৬ সালের SSC নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অভিযুক্ত প্রার্থীদের পুনরায় চাকরিতে ফেরার বা নতুন পরীক্ষায় বসার আর কোনো সুযোগ রইল না। সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্ত নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।