একদিকে যেখানে টাটা কোম্পানি তাদের বহুকর্মী ছাতা এর জন্য নোটিশ জারি করেছে অন্যদিকে আসার আলো জ্বালাচ্ছে ক্যাপগেমিনি সংস্থা। যদিও এই সংস্থাটি বাইরের দেশের তবুও এর ভারতের শাখা কর্মসংস্থানের জন্য বিরাট পদক্ষেপ নিতে চলেছে। এবার ভারতীয় বেকার যুবক-যুবতীদের জন্য ফের এক আশার আলো আসতে চলেছে। কেননা এখানে একটি দুটি নয় প্রায় ৪৫ হাজার শূন্য পদে নিয়োগ করা হবে। তাহলে দেরি না করে আসুন এই এ সংক্রান্ত সম্পূর্ণ খবরটি দেখে নি-
আমরা সকলে জানি বর্তমান সময়ে তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে ঘিরে রয়েছে নানা ধরনের অনিশ্চয়তা খবর। বিগত কয়েক মাসে অনেক নামী কোম্পানি হাজার হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিশেষত টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিস (TCS)-এর মতো বৃহৎ সংস্থা ১২ হাজার কর্মী ছাঁটাই করার ঘোষণার পর থেকে আইটি সেক্টরে এক ধরনের গুমোট ভাব সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু এই অনিশ্চয়তার মধ্যেও বেকার যুবক যুবতীদের জন্য সুখবর আছে, যা আইটি কর্মী এবং চাকরি প্রার্থীদের জন্য আশার আলো দেখাচ্ছে।
ক্যাপজেমিনির বিশাল নিয়োগ পরিকল্পনা
এই অনিশ্চয়তার মধ্যেই ক্যাপজেমিনি ইন্ডিয়ার সিইও অশ্বিন ইয়ারদি একটি আশার আলো জাগানোর মতো ঘোষণা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, চলতি বছরে এই সংস্থাটি ৪০ থেকে ৪৫ হাজার নতুন কর্মী নিয়োগ করতে চলেছে। এর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হবে অভিজ্ঞ পেশাদার এবং বাকিরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত ফ্রেশার প্রার্থী।
ভারতে ক্যাপজেমিনির প্রভাব ও কর্মী সংখ্যা
ক্যাপজেমিনি সাধারণত একটি ফরাসি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা হলেও, ভারতের বাজারে এই কোম্পানির প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। সংস্থার ভারতীয় শাখায় বর্তমানে প্রায় ১ লক্ষ ৭৫ হাজার কর্মী নিযুক্ত আছেন। এই বিশাল কর্মীবাহিনী সংস্থার বৈশ্বিক প্রকল্পগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। ভারতের প্রযুক্তি শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ক্যাপজেমিনি আজ বিশ্বমানের ক্লায়েন্টদের কাছে নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে গণ্য হয়েছে।
কে কোথা থেকে নিয়োগ পাবেন?
কোম্পানির সিইও অশ্বিন ইয়ারদি জানিয়েছেন, সংস্থার এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ৩০-৪০ শতাংশ কর্মী অভিজ্ঞ প্রোফেশনালদের জন্য হবেন, যাদের ইতিমধ্যেই আইটি সেক্টরে দক্ষতা আছে। অন্যদিকে বাকি ৬০-৭০ অংশ নিয়োগ করা হবে দেশের প্রথম সারির শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে, যেমন IIT, NIT, BITS Pilani, Jadavpur University, এবং অন্যান্য টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট থেকে।
ক্যাম্পাস রিক্রুটমেন্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তরুণ ও মেধাবী ফ্রেশারদের বহু সংখ্যায় টার্গেট করা হবে।জানা গিয়েছে এই সংস্থা ইতিমধ্যেই অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে বা পার্টনারশিপ করেছে যাতে তারা সময়মতো ট্যালেন্ট সংগ্রহ করা যায়।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব
এদিকে ক্যাপজেমিনি শুধু সংখ্যাগত নিয়োগ নয়, নিয়োগের মানের উপরেও জোর দিতে চলেছে। এই কোম্পানির সিইও স্পষ্ট করেছেন যে, যে সমস্ত নতুন কর্মীদের নিয়োগ করা হবে তাদের মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI), মেশিন লার্নিং, ডেটা অ্যানালিটিক্সের মত আধুনিক স্কিল থাকা থাকলে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এমনকি যারা ফ্রেশার হিসেবে যোগ দেবেন, তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই স্কিল গড়ে তুলতে সাহায্য করতে পারবেন।
এ থেকে স্পষ্ট হচ্ছে যে, ক্যাপজেমিনি ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে, যেখানে AI এবং অটোমেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে চলেছে। এই পরিকল্পনা কোম্পানিকে প্রতিযোগিতামূলক করে রাখবে এবং কর্মীদেরও ভবিষ্যৎ নিরাপদে রাখবে।