Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- বিগত কয়েকদিন ধরে পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত হচ্ছে যে আগামী মাস থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে ৩০০০ টাকা করে দেবে। এবং নতুন সার্টিফিকেট দিয়ে আবেদন করলে ১২০০ টাকার পরিবর্তে ৩০০০ টাকা করে দেওয়া হবে। এই বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রচুর প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আগামী মাস থেকে কি সত্যিই এই প্রকল্পে (Lakshmir Bhandar Scheme) ৩০০০ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে? মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata Banerjee) এই বিষয়ে সত্যিই কি কোনও ঘোষণা করেছেন? এই প্রতিবেদন থেকে বিস্তারিত জেনে নিন। প্রথমে, যে খবরটি বিভিন্ন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত হয়েছে, সেটি পড়ে নিন।
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে প্রতিমাসে ৩০০০ টাকা করে দেবে?
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়াতে শোনা যাচ্ছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে নাকি, এবার থেকে মহিলারা প্রতি মাসে পাবেন ৩০০০ টাকা করে? ওই প্রতিবেদনেও দাবি করা হয়েছে, সেপ্টেম্বর থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে (Lakshmir Bhandar Scheme) মিলবে ৩০০০ টাকা প্রতি মাসে। এই সুবিধা পাবেন ২৫ থেকে ৬০ বছর বয়সী মহিলারা। তবে, সরকারি কর্মচারী মহিলারা এই প্রকল্পের আওতায় আসবেন না। আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মহিলারাই এই সুবিধা পাবেন। বার্ষিক আয় আড়াই লক্ষ টাকার কম হতে হবে তাহলেই বাড়তি টাকা পাবেন। এজন্য ইনকাম সার্টিফিকেট জমা করতে হবে। এমনটাই প্রকাশিত হয়েছে একাধিক সামাজিক মাধ্যমে। এবার এই বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে শেষ তথ্য পাওয়া পর্যন্ত যা জানা গেছে, সেটাই উল্লেখ করা হলো।
লক্ষ্মীর ভান্ডারের গুরুত্ব 🌍
পশ্চিমবঙ্গে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প চালু হওয়ার পর থেকেই মহিলাদের আর্থিক স্বাধীনতা ও কিছুটা হলেও নিজের শখ পূরণ করার সুযোগ পেয়েছেন। বিশেষ করে যারা প্রান্তিক এলাকায় থাকেন এবং আর্থিক দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়া, তাদের জন্য ওই ১০০০ টাকাই হাতখরচ ও সংসারের একাধিক প্রয়োজন মেটাতে সাহায্য করে। এই প্রকল্প মহিলাদের জীবনে আর্থিক স্থিতিশীলতা এনেছে। এই প্রকল্প বাংলার মহিলাদের আর্থিক স্বনির্ভরতার পথে একটি বড় পদক্ষেপ। তৃণমূল কংগ্রেসের এই উদ্যোগ ভোটবাক্সেও দিয়েছে বিরাট সাফল্য।
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বাংলার মহিলাদের জন্য একটি গেম-চেঞ্জার প্রকল্প। এটি শুরু হয়েছিল মহিলাদের আর্থিকভাবে স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে। প্রাথমিকভাবে সাধারণ শ্রেণির মহিলারা পেতেন মাসে ৫০০ টাকা। তফসিলি জাতি ও উপজাতি মহিলাদের জন্য ছিল ১০০০ টাকা। লোকসভা নির্বাচনের আগে এই পরিমাণ বাড়িয়ে ১০০০ ও ১২০০ টাকা করা হয়।
লক্ষ্মীর ভান্ডারে কারা আবেদন করতে পারবেন? 🤔
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের এই নতুন সুবিধা পেতে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। নিচে যোগ্যতার বিবরণ দেওয়া হলো:
-
- বয়স: ২৫ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে হতে হবে।
- আয়: বার্ষিক আয় আড়াই লক্ষ টাকার কম হলে ভালো হয়।
- পেশা: সরকারি কর্মচারী হলে আবেদন করা যাবে না।
- নাগরিকত্ব: পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে
- ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট: সক্রিয় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে।
- আর্থিক অবস্থা: আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মহিলারা অগ্রাধিকার পাবেন।
প্রয়োজনীয় নথি 📋
নতুন করে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে আবেদনের জন্য আমাদের পাড়া আমাদের সরকার ক্যাম্পে গিয়ে নিম্নলিখিত নথিগুলো জমা দিয়ে এই প্রকল্পে আবেদন করতে পারবেন।
-
- আধার কার্ডের কপি
- ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিবরণ
- ইনকাম সার্টিফিকেট
- বয়সের প্রমাণপত্র
- পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দার প্রমাণ
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি
Fact Check : লক্ষ্মীর ভান্ডারে ৩০০০ টাকা 💰
বিগত কয়েকদিন ধরে পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে দাবি করা হচ্ছে যে সেপ্টেম্বর মাস থেকে নাকি লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে ৩০০০ টাকা করে দেওয়া হবে। মাসিক আয় ২৫০০০০ এর কম হলে তারা ৩০০০ টাকা করে পাবেন। আর এটা চালু করার জন্য নাকি ইনকাম সার্টিফিকেট জমা করতে হবে। আর এই নিয়ে নাকি সরকার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে। আর মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী (CM Mamata Banerjee) ও নাকি এই বিষয়ে ঘোষণা করবেন। এই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হওয়ার পর ফেসবুক ও একাধিক লোকাল নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত হয়। এরপর আমাদের বিভিন্ন সুত্র মারফত জানতে পারি যে, ৩০০০ টাকা করে দেওয়ার মতো খবর বা সিদ্ধান্ত এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকারের তরফ থেকে নেওয়া হয়নি।
সম্প্রতি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ৫০০০ টাকা করে শ্রমশ্রী প্রকল্পের জন্য ঘোষণা করেছেন। কিন্তু লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা বাড়ানো নিয়ে কোনও ঘোষণা হয়নি। তবে বিধান সভা ভোটের আগে এই প্রকল্পের ভাতার পরিমাণ বাড়তে পারে। তবে তা এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত নয়। আর সেপ্টেম্বর থেকেই ১০০০ এর বদলে এক লাফে ৩০০০ টাকা করে পাবেন, এই খবরটি সম্পূর্ণ মিথ্যা খবর। সুতরাং অহেতুক এই খবরে বিভ্রান্ত হবেন না।
শেষ কথা 🗣
লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বাংলার মহিলাদের জন্য একটি আশীর্বাদ। এই লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে বর্তমানে ১০০০ ও ১২০০ টাকা করেই দেওয়া হচ্ছে। আপাতত লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা বৃদ্ধি নিয়ে কোনও সরকারি ঘোষণা হয়নি। আর মাসে ৩০০০ টাকার এই ঘোষণা নিয়ে বিশ্বস্ত কোনও খবর ও নেই। তাই অহেতুক ভুয়ো খবরে বিভ্রান্ত হবেন না।