আজও নররক্তে তুষ্ট হন দেবী ! জানুন কোচবিহার রাজবাড়ীর অজানা ইতিহাস

By Bangla News Dunia Desk - Pallab

Published on:

Bangla News Dunia , পল্লব চক্রবর্তী : বিভিন্ন রূপে অবতীর্ণ হন মা দুর্গা। কোচবিহারের রাজবাড়িতে ‘বড়দেবী’ নামে অবতীর্ণ হন দেবী দুর্গা। দুর্গার সঙ্গে থাকেন না লক্ষ্মী, গণেশ, কার্তিক, সরস্বতী। প্রতিমার দু’পাশে থাকে জয়া ও বিজয়া। রক্তবর্ণ দেবী নররক্তে তুষ্ট হন। আর নিয়ম মেনে আজও চলে গুপ্ত পুজো।

কথিত আছে, কোচবিহার রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা মহারাজা বিশ্বসিংহ ছেলেবেলায় তাঁর তিন ভাই শিষ্যসিংহ, চন্দন ও মদন এবং খেলার সঙ্গীদের নিয়ে ১৫১০ সালে অসমের ‘চিকনা’ নামক গভীর বনে ময়না কাঠের ডালকে দেবী দূর্গা কল্পনা করে পুজো করেছিল। এক বন্ধুকে পাঠার ন্যায় কাল্পনিক হাড়িকাঠে আটকে রাখা হয়েছিল। কুশ দিয়ে তাকে আঘাত করা মাত্রই ধর থেকে মাথা আলাদা হয়ে যায়। দেবীর অলৌকিক ক্ষমতা বলে তা হয়েছে। ওই মৃত বন্ধুর মাথা দেবীর কাছে নিবেদন করা হবয়েছিল। তার পরে পরেই চিকনার অধিপতি তুরকা কোতোয়ালকে পরাজিত করে কোচবিহারের সিংহাসনে বসেছিলেন বিশ্বসিংহ। মহারাজা বিশ্বসিংহের পুত্র কোচবিহারের দ্বিতীয় মহারাজা নর নারায়ণ স্বপ্নাদেশে স্ববংশে দশভুজা দূর্গা মূর্তির পূজার প্রচলন করেন।

avilo home

কোচবিহার রাজবাড়ি বড়দেবী দুর্গার চেহারা উদ্রেককারী। তাঁর গাত্রবর্ণ লাল, অসুরের গাত্রবর্ণ সবুজ। দেবীর বাহন সিংহ ও বাঘ। মহালয়ার পরদিন থেকেই শুরু হয়ে যায় বড়দেবী দূর্গা পুজো। মহাষষ্ঠীর দিন থেকে পুজো পুরোমাত্রায়। একদা রাজবাড়িতে নরবলির প্রচলণ ছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে নরবলির বীভৎসতা দেখে কোচবিহারের ১৯তম কোচ মহারাজা নরেন্দ্র নারায়ণ ভূপ পন্ডিতদের সঙ্গে আলোচনা করে নরবলি বন্ধ করেন।

যদিও বড়দেবী নররক্ত ছাড়া পুজো না নেওয়ায় প্রতি বছর অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে রাতে বিশেষ ধরনের বলির ব্যবস্থা করা হয়। সেসময় কেউ মন্দিরে প্রবেশ করতে পারে না। কামসানাইট উপাধিধারী প্রতিনিধি তাঁর আঙুল কেটে কয়েক ফোঁটা রক্ত দেন দেবীর পদতলে। বলি দেওয়া হয় চালের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি মানুষের প্রতীক পুতুলকে। উচ্চস্বরে বাজে ঢাক।একে ‘গুপ্তপুজো’ বলা হয়।

অন্নভোগে থাকে ৫ টি পাঠা, বোয়াল মাছ দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি। দশমীর দিনেই বিসর্জন হয় কোচবিহারের রাজবাড়ির দুর্গাপ্রতিমা। বিসর্জনের আগে পুকুর ঘাটে হালুয়া পুজো হয়। পুজোয় ফুল জোগান দেন, তাকে বলে হালুয়া। তিনি শাপলার চালের ভাত করে দেবীর নামে ভোগ দেয় তারপর শূকর বলি দেওয়া হয়। পুজো শেষে প্রতিমা খণ্ড খণ্ড করে নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়। প্রতিমা বিসর্জনের সময় কোচবিহার রাজপরিবারের সদস্যদের দেখা নিষিদ্ধ বলে তারা বিসর্জনে থাকেন না।

আরও খবর পেতে ফলো করুন আমাদের চ্যানেল

Bangla News Dunia Desk - Pallab

মন্তব্য করুন