Bangla News Dunia, দীনেশ :-পহলগামের ঘটনা (Pahalgam Terror Attack) আমাদের কাশ্মীরিদের (J&K) বুকে আঘাত করেছে। ঘটনার পর থেকে আমি ঠিকমতো খেতে পর্যন্ত পারছি না। যা ঘটনা ঘটেছে, সেটা নিন্দা করার ভাষা নেই। আমি এখানে দিনে প্রায় ৫০ হাজার টাকার ব্যবসা করি। রাষ্ট্র যদি বলে তাহলে ব্যবসা ছেড়ে বন্দুক নিয়ে সীমান্তে চলে যাব।
আমাদের সর্বনাশকারীদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য।
আসলে একটা পক্ষ কোনওদিনই চায় না, কাশ্মীরের অর্থনীতির উন্নতি হোক। ৩৭০ ধারা ওঠার আগে কাশ্মীরে জঙ্গিদের প্রভাব অনেকটাই ছিল। আমি নিজের বাড়ির বাইরে পর্যন্ত অতটা বের হতাম না। সেই ধারা ওঠার পর আমরা স্বাধীন হয়েছিলাম। শিলিগুড়িতে এসে আড়তে বন্ধুর সঙ্গে অংশীদারিতে ব্যবসা করছি। ‘বেকার’ কথাটাই আমাদের কাশ্মীর থেকে চলে গিয়েছিল। একটা কথা এখানে বোঝানো প্রয়োজন, আমাদের ওখানে অর্থনীতির ২০ শতাংশ নির্ভর করে ফল ও শুকনো খাবারের ব্যবসার ওপর। বাকি ৮০ শতাংশই নির্ভর করে পর্যটনের ওপর।
আরও পড়ুন : ভারত VS পাকিস্তান, স্থল-জল-আকাশে কার কত ক্ষমতা ? বিস্তারিত জেনে নিন
গত তিন বছরে পর্যটকরা মন খুলে আসায়, আমাদের ওখানে কেউ বেকার ছিলাম না। কোথাও জায়গা খালি না থাকায় বাড়িতে পর্যন্ত আমরা পর্যটকদের অনেককে জায়গা দিয়েছি। এই কারণে এবারের জঙ্গি আক্রমণ এতটা আমাদের কষ্ট দিয়েছে। এই ঘটনার পর আমাদের ওখানে আর পর্যটকরা যাবেন না। ফের বেকারত্ব বাড়লে তরুণ প্রজন্ম ভুল পথে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। কী থেকে কী হয়ে গেল, এখনও বুঝে উঠতে পারছি না! আবার আমরা পেছনের দিকে চলে গেলাম।
আরও পড়ুন:- আম্পায়ারকে ঘুষ? IPL-এ গড়াপেটা? সামনে আসলো চাঞ্চল্যকর VIDEO, দেখুন
আর এসবের মধ্যে গোটা দেশবাসীর কাছে আমরাই খারাপ হচ্ছি। আমরা সব দিক দিয়েই যেন খারাপ। কাশ্মীর যেন এখন গোটা দেশের কাছে কলঙ্ক হয়ে দঁাড়িয়েছে। পহলগামকে আমরা ‘মিনি সুইৎজারল্যান্ড’ বলে থাকি। ওই জঙ্গিরা তো সীমান্ত পেরিয়েই এসেছে। সীমান্তরক্ষীদের আরও সতর্ক থাকা প্রয়োজন ছিল। যে জায়গায় ওই আক্রমণ হয়েছে, সেটা অনেকটাই উঁচু জায়গা। সেখানকার চেক পয়েন্ট অনেকটা দূরে। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, শিলিগুড়ি জঙ্গি আক্রমণের ওই জায়গা হলে, দুধিয়া হল চেক পয়েন্ট। জঙ্গিরা জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে এসে হামলা করেছে।
আরও পড়ুন:- ওষুধের দোকানে বিক্রি হওয়া নকল ওষুধ চিনবেন কীভাবে? বিস্তারিতভাবে বুঝে নিন
ঘটনার পর থেকে হিন্দু-মুসলিম নিয়ে যে তর্জা শুরু হয়েছে, সেটা আরও বেদনাদায়ক। একটা বিষয় সকলের বোঝা উচিত, এই হামলা হিন্দুর ওপর নয়, এই হামলা মনুষ্যত্বের ওপর। আমরা কাশ্মীরিরা হিন্দু-মুসলিম বুঝি না। আমরা ওখানে একই থালায় খাবার খাই। অনেকে বলেন, আমাদের ওখান থেকে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের তাড়ানো হয়েছে। এটাও জঙ্গিরাই করেছিল। আমরা কাশ্মীরিরা তখনও কাশ্মীরি পণ্ডিতদের বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছিলাম। সত্যি কথা বলতে, জঙ্গি হামলার কথা ভাবতেই চোখে জল আসছে। এখন সবকিছুই সরকারের হাতে। কাশ্মীরের সবাই আমরা রাস্তায় রয়েছি। আমাদের সবার মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। সরকার ওই জঙ্গিদের বিনাশ করুক। ফের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হোক।
আরও পড়ুন:- পর্যটকদের লক্ষ্য করে গুলি, প্রকাশ্যে পহেলগাঁও হামলার নতুন Video