Bangla News Dunia , পল্লব চক্রবর্তী : ভারতের বিভিন্ন অংশে রথ যাত্রা আয়োজিত হয়ে থাকে। আষাঢ় মাসের শুক্ল পক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে এই রথ যাত্রা হয়ে থাকে। জগন্নাথ নিজের দাদা বলরাম ও বোন সুভদ্রার সঙ্গে রথে সওয়ার হয়ে বের হন। চলতি বছর ১ জুলাই রথ যাত্রা। জ্যৈষ্ঠ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে আয়োজিত হয় স্নান যাত্রা। এই দিন ১০৮ ঘড়া জল দিয়ে বলরাম, সুভদ্রা ও জগন্নাথকে স্নান করানো হয়। অসুস্থ হয়ে তিনদিনের জন্য একান্তবাসে থাকেন তাঁরা।
পঞ্জিকা অনুযায়ী ৩০ জুন সকাল ১০টা ৪৯ মিনিটে আষাঢ় শুক্ল দ্বিতীয়া তিথির সূচনা হচ্ছে। যা সমাপ্ত হবে ১ জুলাই দুপুর ১টা ৯ মিনিটে। উদয়া তিথির কারণে ১ জুলাই, শুক্রবার পালিত হবে রথ যাত্রা। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রথযাত্রা বিশ্ব প্রসিদ্ধ। তবে আমাদের পশ্চিমবঙ্গেও কয়েকটি স্থানের রথযাত্রা প্রসিদ্ধ এবং এঁদের নিজস্ব মাহাত্ম্য রয়েছে। বাংলার এই রথ যাত্রাগুলি সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক —-
নদীয়া জেলার মায়াপুরের ইস্কন মন্দিরের রথযাত্রা পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম বিখ্যাত রথ উৎসব। এখানে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা রথে চড়ে আসেন। প্রচলিত কাহিনি অনুযায়ী মায়াপুর ও তার পার্শ্ববর্তী একটি গ্রাম ছিল রাজাপুর। রাজাপুর গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দাই বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বী। প্রতিবছর মায়াপুর ও রাজাপুর গ্রামে রথ উৎসব পালিত হয়ে আসছে।
পশ্চিমবঙ্গের প্রসিদ্ধ রথযাত্রার তালিকায় মাহেশের রথ যাত্রার নাম থাকবেই। প্রচলিত কাহিনি অনুযায়ী, ১৩০০ খ্রিস্টাব্দে ধ্রুবনন্দ ব্রহ্মচারী রথ উৎসবের সূচনা করেছিলেন এখানে। মাহেশের রথযাত্রার ইতিহাস প্রায় ৬০০ বছর পুরনো। ১৩৯৬ সাল থেকেই এখানে রথের দড়িতে টান পড়ছে। মাহেশের রথযাত্রার সময় বিশাল মেলার আয়োজন করা হয়। কথিত আছে যে, একদা মাহেশের রথের চূড়ায় এক নীলকন্ঠ পাখি এসে বসে। কিন্তু পুরীর রথযাত্রা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উড়ে যায়।
১৭৪০ সালে গুপ্তিপাড়ায় এই রথ উৎসবের সূচনা করেন মধুসূদানন্দ। এখানে রথযাত্রার দিনে ৪০ কুইন্টাল খাবার লুটিয়ে দেওয়া হয়। বহুকাল ধরে জনগণের উদ্দেশে খাবার লুটানোর প্রথাটি প্রচলিত রয়েছে। গুপ্তিপাড়ার এই রথের উচ্চতা ৩৬ ফুট। এই স্থানে শাক্ত ও বৈষ্ণব– উভয় ধর্মাবলম্বী মানুষই বসবাস করে। কিন্তু ১৮৭৩ সালে একটি দুর্ঘটনার পর সেই রথের চাকার সংখ্যা ক্রমশ কমিয়ে আনা হয়েছে।
হুগলির রাজবলহাট শুধু তাঁতের কাপড়ের জন্য নয়, বরং এখানকার রথযাত্রার জন্যও বিখ্যাত। রাজবলহাটের রথে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার মূর্তি থাকে না। এখানে রাধাকৃষ্ণ রথে সওয়ার হয়ে বের হন।
মাহেশের মতোই পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের রথযাত্রাও বিখ্যাত। এই রথযাত্রার ইতিহাস প্রায় ২০০ বছরের পুরনো। ১৭৭৬ সালে মহিষাদলের জমিদার আনন্দলালের স্ত্রী জানকী দেবী এখানে রথযাত্রার সূচনা করেন।
আরও খবর পেতে ফলো করুন আমাদের চ্যানেল