উড়ে গেল প্রায় দেড় কোটির নতুন বাঁধ, বানভাসি প্রায় দেড় লাখ মানুষ

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- গত বছর কপাল পুড়িয়েছিল গঙ্গা, এবার ফুলহর ৷ প্রবল জলের চাপে বুধবার সকালে ভূতনি চরে উড়ে গেল ফুলহরের বাঁধ ৷ বাঁধের প্রায় 50 মিটার জায়গা দিয়ে এখন প্রবল বেগে জল ঢুকতে শুরু করেছে চরে ৷ বানভাসি হতে চলেছেন অন্তত দেড় লাখ মানুষ ৷ এই ঘটনায় রাজনৈতিক অভিসন্ধি দেখতে পাচ্ছেন চরবাসী ৷ গোটা ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা ৷ এই মুহূর্তে যে বাঁধ মেরামত সম্ভব নয়, তা সাফ জানিয়ে দিয়েছে সেচ দফতর ৷

গত বছর ভূতনির উত্তর চণ্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কেশরপুর কলোনিতে উড়ে গিয়েছিল গঙ্গার বাঁধ ৷ জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল প্রায় গোটা চর ৷ ভৌগোলিকভাবে গামলার মতো আকৃতি হওয়ায় দীর্ঘদিন চরে আবদ্ধ হয়ে ছিল বানের জল ৷ সেই জল নিষ্কাশনের জন্য গ্রামবাসীদের একাংশ দক্ষিণ চণ্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় থাকা ফুলহরের বাঁধ কেটে দিয়েছিলেন ৷ চরের জমা জল সেখান দিয়ে বেরিয়েও যায় ৷

কিন্তু তখনই আশঙ্কা করা হয়েছিল, ফুলহরের এই কাটা বাঁধ ভবিষ্যতে আরও বড় দুর্যোগ নিয়ে আসতে পারে ৷ কারণ, গঙ্গার তুলনায় ফুলহরের জলধারণ ক্ষমতা বেশি ৷ মাসপাঁচেক আগে সেই ভাঙা বাঁধ মেরামত করে সেচ দফতর ৷ প্রায় দেড় কোটি টাকায় বাঁধ মেরামত করা হয় ৷ সেচ দফতরের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, সংস্কার করা বাঁধের তেমন কোনও ক্ষতি হবে না ৷ যদিও কাজের মান নিয়ে তখনই প্রশ্ন তুলেছিলেন চরবাসী ৷ তাঁদের সেই আশঙ্কাই এদিন সত্যি হয়েছে ৷

এদিন সকালে দক্ষিণ চণ্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কাটাবাঁধ এলাকায় বাঁধ ভাঙার খবর মেলে ৷ সেই খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে যান ভূতনি থানার ওসি সুবীর সরকার, মানিকচকের বিডিও অনুপ চক্রবর্তী, সেচ দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র শিবনাথ গঙ্গোপাধ্যায়-সহ পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকরা ৷ চলে আসেন বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারাও ৷ তবে বেলা 1টা পর্যন্ত শাসকদলের কোনও নেতা-নেত্রীকে ঘটনাস্থলে দেখা যায়নি ৷ তবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এসডিও (সদর) পঙ্কজ তামাং ৷ খোদ জেলাশাসক নিতিন সিংহানিয়া মানিকচক বিডিও দফতরে বিশেষ বৈঠক করেন ৷ প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, নবান্নের তরফে জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে দ্রুত বাঁধ ভাঙার রিপোর্ট তলব করা হয়েছে ৷

বাঁধের ভাঙা অংশ পর্যবেক্ষণ করে জেলা সেচ দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র শিবনাথ গঙ্গোপাধ্যায় দাবি করেন, “আজ ভোর সাড়ে পাঁচটা নাগাদ খবর পাই, বাঁধের যে অংশে হিউম পাইপ বসানো রয়েছে, সেখানে বাঁধ দিয়ে জল চুঁইছে ৷ আমরা সঙ্গে সঙ্গে বাঁধের সেই অংশ মেরামতিতে হাত দিই ৷ কিন্তু সেখানে কাজ শুরু করার পর পাশের অংশটি দুর্বল হয়ে পড়ে ৷ ফুলহরের জলের চাপে শেষ পর্যন্ত বাঁধের ওই অংশটি ভেঙে যায় ৷ ফুলহর এখন প্রায় চূড়ান্ত বিপদসীমা ছুঁয়ে বইছে ৷ বাঁধ বাঁচাতে আমরা প্রতি মুহূর্তে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছি ৷ এই বাঁধ কখনও দুর্বল ছিল না ৷ আমরা সব কিছু পরীক্ষা করেই বাঁধ তৈরি করেছিলাম ৷ এখন নদীর জল ঢোকা যত দ্রুত আটকানো যায়, আমরা তার চেষ্টা করছি ৷”

 

এই নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে রাজি হননি মানিকচকের বিডিও ৷ তবে সদর মহকুমাশাসক পঙ্কজ তামাং বলেন, “ইমারজেন্সি পরিস্থিতি৷ খবর পেয়ে আমরা সকালেই মানিকচকে চলে এসেছি ৷ জেলাশাসক সেখানে বৈঠক করছেন ৷ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আমি তাঁকে রিপোর্ট দেব ৷ এই মুহূর্তে এলাকার পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে রয়েছে ৷ সেচ দফতর সকাল থেকেই কাজে নেমে পড়েছে ৷ তবে যেভাবে প্রবল স্রোত বইছে, আমার মনে হয় না সেচ দফতর এখনই বাঁধের কোনও কাজ করতে পারবে ৷ সেচ দফতরকে বিকল্প পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে ৷’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা এখানে সিভিল ডিফেন্স ও এনডিআরএফ টিম নিয়োগ করছি ৷ সকাল থেকে চরের গর্ভবতী মহিলাদের নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ৷ পঞ্চায়েতের মাধ্যমে চরবাসীকে নিরাপদ জায়গায় সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে ৷ আজ থেকে মথুরাপুরে ফ্লাড রিলিফ সেন্টার খুলে যাচ্ছে ৷ চরবাসীদের জন্য পর্যাপ্ত নৌকা, খাদ্যসামগ্রী, পানীয় জল, স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ তবে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পিছনে মানুষের হাত রয়েছে বলে আমি মানতে পারছি না ৷ ফুলহরের জল এই মুহূর্তে ফুলে রয়েছে ৷ বাঁধের নীচের অংশে জল ধাক্কা মারছে ৷ সেখান দিয়ে জল চুঁইতে শুরু করেছে ৷ জলের প্রবল চাপ সহ্য করতে না-পেরে স্বাভাবিক কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে ৷”

সদর মহকুমাশাসক বিষয়টি স্বাভাবিক বলে উল্লেখ করলেও দক্ষিণ চণ্ডীপুর অঞ্চলের শঙ্করপুর গ্রামের বাসিন্দা ঘনেশ্বর মণ্ডল বলছেন, “পরিস্থিতি খুব খারাপ ৷ বাঁধ কেটে গিয়েছে ৷ এই বাঁধ নির্মাণে নাকি এক কোটিরও বেশি টাকা খরচ হয়েছে ৷ কিন্তু দেখে মনে হচ্ছে না এটা এক কোটির বাঁধ ৷ 10-15 লাখ টাকায় বাঁধ করা হয়েছে ৷ আজ ভোরে এলাকার এক মাছ ব্যবসায়ী মাছ কিনতে গিয়েছিলেন ৷ তিনি জানিয়েছেন, তখন বাঁধ ঠিক ছিল ৷ হঠাৎ করে শুনি বাঁধ কেটে গিয়েছে ৷’’

New Embankment Washed Away

ভূতনি চরে বাঁধ ভেঙে বানভাসি প্রায় দেড় লাখ মানুষ

ঘনেশ্বর মণ্ডল আরও বলেন, ‘‘আমার ধারণা, এর পিছনে রাজনৈতিক চক্রান্ত রয়েছে ৷ বাঁধ কাটলে রাজনীতিবিদদের লাভ তো হবেই ৷ আবার কাজ, আবার টাকা পকেটে আসবে ৷ ভূতনিতে ত্রাণ আসবে ৷ ত্রাণ লুট-সহ আরও কত কিছু হবে ৷ ভূতনিতে এখন অনেক দালাল তৈরি হয়েছে ৷ তারা গোটা ভূতনিকে ফাঁপা করে দিয়েছে ৷ গত বছর বাঁধ কেটে ভূতনিতে বন্যা হয়েছিল ৷ এবারও বাঁধ কেটেছে ৷ এখানকার তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাই ভেসে যাবে ৷ জানি না সরকার আমাদের জন্য কী করবে ৷ তবে বাঁধের কাজ ভালো হলে আমাদের এই অবস্থা হতো না ৷ বাঁধ তৈরির সময় কোনও রোলার চলেনি ৷ এভাবে কি কাজ হয় ? আজ বাঁধ কাটার পিছনে শাসকদলেরই হাত রয়েছে বলে ধরে নিতে হবে ৷”

একই বক্তব্য আরেক চরবাসী গৌতম মণ্ডলেরও ৷ তিনি বলেন, “বাঁধের কাজ হওয়ার সময় আমি ঠিকাদার আর প্রধানকে সরাসরি বলেছিলাম, কাজ ঠিকমতো হচ্ছে না ৷ এটা কোনও বাঁধ নয় ৷ এই রিং বাঁধের কোনও কাজই হয়নি ৷ গতবার বন্যায় ভূতনির মানুষ না-খেতে পেয়ে মরেছে ৷ এবারও সেটাই হবে৷ বিপুল পরিমাণ পাট চাষ ভেসে গেল ৷ এবারও আমরা গরিব মানুষ মরে যাব ৷ আমার মনে হয়, ষড়যন্ত্র করে এই বাঁধ কাটা হয়েছে ৷ এর পিছনে রাজনীতি আছে ৷ কে বা কারা বাঁধ কেটেছে, তা বলতে পারব না ৷ তবে বাঁধ কাটলে ঠিকাদারদের লাভ হবে ৷ ভূতনির বন্যার্ত মানুষকে খাবার না-দিয়ে অনেকে টাকা পকেটে ঢোকাবে ৷ নৌকার টাকা মারবে ৷ গতবার কোটি কোটি টাকা মেরে খেয়েছে, এবারও খাবে ৷ সরকারের কাছে আর্জি, এখনও কাটা বাঁধ বন্ধ করে দেওয়া হলে ভূতনিবাসী রক্ষা পাবে ৷ এখনও অত দেরি হয়নি ৷”

এই ঘটনাকে ম্যান মেড বলে আখ্যা দিয়েছে সিপিআইএম ও বিজেপি ৷ এলাকার বাসিন্দা, সিপিআইএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য দেবজ্যোতি সিনহা ভোর থেকেই ভূতনি চষে বেড়িয়েছেন ৷ তিনি বলেন, “ভূতনির এই অবস্থা তৈরি করেছেন এখানকার বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র, জেলা প্রশাসন ও সেচ দফতর ৷ সবাই চোর ৷ এক কোটি 35 লাখ টাকায় বাঁধের এই কাজ ? মানস ভুঁইয়া এখানে এসে বাঁধে লকগেট তৈরির কথা বলে গিয়েছিলেন ৷ কিন্তু এখানে একটা কালভার্ট বানানো হয়েছে ৷’’

তাঁর অভিযোগ, ‘‘গতবার ভূতনিতে টাকা লুট হয়েছে ৷ সেচ দফতরের লোকজনকে জলে ডোবানো উচিত ৷ প্রতি বছর এখানে বন্যা হয় ৷ জেনারেটরের তেলের টাকা চুরি হয়, খিচুড়ির বিলের টাকাও চুরি হয় ৷ ভূতনির মানুষকে বলব, এদের বুঝে নাও ৷ আজ বিডিওকে সাফ জানিয়ে দিয়েছি, ত্রাণ নিয়ে সর্বদলীয় কমিটি গড়তে হবে ৷ এক্ষেত্রে রাজনীতি হলে ছেড়ে কথা বলা হবে না ৷ কেউ এই বাঁধ কাটেনি৷ ভূতনিবাসী কি নাবালক ? আমরা হয়তো ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করিনি ৷ কিন্তু একটা হিউম পাইপের কাজে এক কোটি 35 লাখ টাকা খরচ হতে পারে কি পারে না, সেটা জানি না ? একটা হিউম পাইপ পাঁচ হাজার টাকায় পাওয়া যায় ৷’’

New Embankment Washed Away

ভূতনি চরে বাঁধ ভেঙে বানভাসি প্রায় দেড় লাখ মানুষ 

তিনি আরও বলেন, ‘‘এখানে কোনও বোল্ডার পিচিং হয়নি ৷ বাঁধ রক্ষার কিছু ব্যবস্থা হয়নি ৷ সেচমন্ত্রী চুরি করেন ৷ এখানে দেড় লাখ মানুষকে ডোবানো হল ৷ মুখ্যমন্ত্রীর কথামতো এখানে ম্যান মেড বন্যা হল ৷ এর জন্য এখানকার বিধায়ক ও প্রশাসন দায়ী ৷ একদিন এখানে ডিএম এসেছেন ৷ নৌকার বিল হয়েছে এক লাখ টাকা ৷ এখন প্রশাসন অজুহাত দিচ্ছে, এ নাকি প্রাকৃতিক বিপর্যয় ৷ বিধায়ক এখানে কোনোদিন আসেন না ৷ ভূতনিকে ডোবানো তাঁর রাজনৈতিক ইচ্ছে ৷ কারণ, ভূতনিবাসী তাঁকে ভোট দেননি ৷”

স্থানীয় বাসিন্দা, মালদা জেলা পরিষদের প্রাক্তন সভাধিপতি তথা বিজেপির দক্ষিণ মালদা সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক গৌরচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “এটা ম্যান মেড বন্যা ৷ পরিকল্পনার অভাবে রাজ্য সরকার, এখানকার প্রশাসন আর তৃণমূলের নেতা ভূতনিকে ভাসিয়ে দিল ৷ ভূতনিবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে ৷ গতবারের মতো এবারও ভূতনিবাসীকে দুর্দশার মধ্যে ঠেলে দেওয়া হল ৷ এটা নাকি এক কোটি 35 লাখের বাঁধ !’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘এখনও ওরা এখানে বাঁশের কাজ করছে ৷ দেড়শো বাঁশ কিনে হাজার হাজার বাঁশের বিল বানানো হচ্ছে ৷ আসলে এটা তৃণমূল নেতত্ব আর প্রশাসনের আধিকারিকদের পৌষ মাস আর ভূতনিবাসীর সর্বনাশ ৷ আত্মসাৎ করা টাকা নবান্ন থেকে নীচুতলা পর্যন্ত ভাগ বাটোয়ারা হবে ৷ এখানকার বিধায়ক নাকি অভিযোগ করেছেন, বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিআইএম বাঁধ কেটেছে ৷ মাথায় রাখুন, বিজেপি অত নোংরা রাজনীতি করে না ৷ আপনার কুকীর্তি ভূতনিবাসী বুঝতে পেরেছেন ৷ এবার তাঁরা আপনাকে ফুলহর-গঙ্গার জলে বিসর্জন দেবেন ৷’’

New Embankment Washed Away

ভূতনি চরে বাঁধ ভেঙে বানভাসি প্রায় দেড় লাখ মানুষ 

বিজেপির এই নেতা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘আপনারা এখানে পরিস্থিতি দেখতে আসছেন না কেন ? শুধু বিডিও অফিসে বসে কোনও তৃণমূল নেতার ঘরে কত ত্রিপল যাবে, কতটা চিঁড়ে-গুড় যাবে, তার হিসাব করতে ব্যস্ত ৷ সাধারণ মানুষকে ক’টা ত্রিপল দিয়েছেন ? সরকারি আধিকারিক থেকে শুরু করে তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা বুকে হাত দিয়ে বলুন ৷ মানুষ কিছু পাচ্ছে না ৷ তাহলে এত ত্রিপল, চিঁড়ে-গুড় কোথায় গেল ?’’

তাঁর অভিযোগ, ‘‘এর আগে ছ’কোটি টাকা বাঁধ তৈরির নামে 90 লাখ টাকা খরচ হয়েছে ৷ বাকি টাকা সেচ দফতর আর তৃণমূলের লোকজন ভাগ করে নিয়েছে ৷ ভোটের সময় এসে আপনারা বলবেন, আপনাদের ভোট দিলে ভূতনিকে রক্ষা করবেন ৷ ভূতনিবাসীর কাছে আমার আবেদন, এবার ওদের বিসর্জন দিন ৷ আমরা পাশে আছি ৷ ডাবল ইঞ্জিনের সরকার হলে ভূতনির ছেলে হিসাবে কথা দিচ্ছি, ভূতনিতে গঙ্গা ভাঙনের স্থায়ী সমাধান হবে ৷ ভূতনি উন্নয়নের ভূতনি হবে ৷”

মানিকচকের তৃণমূল বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র বলছেন, “কাটাবাঁধে যেভাবে কাজ করা হয়েছিল তাতে ওই বাঁধ ভাঙার কথা নয় ৷ আমরা পরে বালির বস্তা দিয়ে বাঁধটা আটকেছিলাম ৷ গতকাল রাত চারটে নাগাদ সিপিআইএম আর বিজেপির লোকজন রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে বাঁধ থেকে দু’তিনটি বস্তা সরিয়ে দিয়ে লিকেজ করে দেয় ৷ সেই লিকেজ দিয়ে জল ঢুকতে ঢুকতে একসময় বাঁধ উড়ে যায় ৷ এভাবে ভূতনির মানুষকে ডুবিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করা ঠিক হয়নি ৷’’

বিধায়কের দাবি, ‘‘এরা সেচ দফতরকে দোষারোপ করছে ৷ তাদের কোনও দোষ নেই ৷ কাজ যেভাবে করা দরকার সেভাবেই হয়েছে ৷ এরা কাটমানি-সহ নানা কথা বলে ৷ ওদের কথা ওরা বলুক ৷ কিন্তু যারা বাঁধ কেটেছে, ভূতনির এত মানুষকে যারা ডুবিয়েছেন, তাদের শাস্তি হোক৷ ওখানকার মানুষজনও বলছে, আজ সকালে বাঁধ কাটা হয়েছে ৷ আমাদের লোক এই কাজ করবে না ৷ ওরা বাঁধের পক্ষে দিন-রাত খাটছে ৷ দেবজ্যোতিরা বলেছিল, ভূতনি ডুবলে সাবিত্রী মিত্রকে ডোবাব ৷ এটা এদেরই চাল ৷ ব্যবস্থা তো অবশ্যই নেব ৷’’

New Embankment Washed Away

ভূতনি চরে বাঁধ ভেঙে বানভাসি প্রায় দেড় লাখ মানুষ 

তৃণমূলের এই বিধায়ক আরও বলেন, ‘‘যেভাবে এখন জল ঢুকছে, এখন কারও কিছু করার নেই ৷ ভূতনি প্লাবিত হওয়ার পরই জল স্থিতিশীল হতে পারে ৷ তার আগে কিছু হবে না ৷ সবাই জানে, মানুষকে আমরা বিপদে ফেলব না ৷ এরাই মানুষকে বিপদে ফেলতে পারে ৷ আগের বছর ভূতনির মানুষরাই এই বাঁধটা কেটে চরে জমে থাকা নোংরা জল বের করেছিল ৷ এক কোটিরও বেশি টাকায় বাঁধটি সংস্কার করা হয়েছে ৷ ওখানে একটা স্লুইস গেট করা হবে ৷ সবসময় তো সব কাজ একসঙ্গে করা যায় না ৷ তবে বালির বস্তা না সরালে ওই বাঁধ কাটতে পারে না ৷ আর আজ দেবজ্যোতি যে মন্তব্য করেছে তার জন্য ওর বিরুদ্ধে এফআইআর করা উচিত ৷ এদের সঙ্গে বিজেপির নেতৃত্বেই এই কাজ হয়েছে ৷”

এদিকে, কয়েকদিন ধরে একটানা বৃদ্ধির পর বুধবার থেকে জল নামতে শুরু করেছে গঙ্গা ও ফুলহরের ৷ এদিন সকাল 8টায় গঙ্গার জলস্তর ছিল 26.01 মিটার ৷ এখনও চরম বিপদসীমা 25.30 মিটার থেকে 71 সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে গঙ্গা ৷ একই সময়ে ফুলহরের উচ্চতা ছিল 28.21 মিটার ৷ বিপদসীমা 27.43 মিটার থেকে এখনও 78 সেন্টিমিটার উঁচুতে রয়েছে ফুলহর

আরও পড়ুন:- 5 টাকার নোট থাকলে পাবেন 6 লক্ষ টাকা, কীভাবে তা সম্ভব? জেনে নিন

আরও পড়ুন:- এটাই দেশের সবথেকে সস্তা SUV, একদম জলের দরে, জেনে নিন দাম

 

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন