Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- রাজ্যের ভূমি ও ভূমি সংস্কার খাতে ডিজিটাল পরিষেবায় নতুন নজির গড়ল পশ্চিমবঙ্গ । 2024 সালে দেশের অন্যান্য রাজ্যকে পিছনে ফেলে বাংলার ভূমি সংস্কার দফতরের ডিজিটাল লেনদেনের সংখ্যা 25 কোটি 27 লক্ষ ছাড়িয়েছে । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্যমন্ত্রিত্বে প্রশাসনের একাধিক পরিষেবা অনলাইনে সরিয়ে আনা হয়েছে ৷ যার ফলে এই সাফল্য এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে প্রশাসনের তরফে ।
ভূমি সংক্রান্ত কাজের জন্য দফতরে যাওয়ার দিন শেষ
প্রশাসন সূত্রে দাবি, এখন রাজ্যের মানুষকে আর আগের মতো ভূমি সংস্কার দফতরের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয় না । কারণ, অনলাইনে খাজনা জমা দেওয়া, জমির মিউটেশন, জমির চরিত্র বদলের আবেদন— সবই এখন বাড়ি বসেই করা সম্ভব । কেন্দ্রীয় ই-তাল (ইলেকট্রনিক ট্রানসাকশান অগ্গ্রেগেশন অ্যান্ড এনালাইসিস লেয়ার) পোর্টালের রিপোর্ট অনুযায়ী, 2024 সালে বাংলায় মোট 39 কোটি 32 লক্ষ অনলাইন লেনদেন হয়েছে ।
এর মধ্যে শুধুমাত্র ভূমি রাজস্ব ক্ষেত্রেই 25 কোটিরও বেশি লেনদেন হয়েছে, যা রাজ্যের অন্যান্য ডিজিটাল পরিষেবা যেমন অনলাইনে শংসাপত্র আবেদন, বাণিজ্যিক কর, স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং সম্পত্তির রেজিস্ট্রেশনকেও ছাপিয়ে গিয়েছে । কেন্দ্রীয় রিপোর্ট অনুসারে, ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের ডিজিটাল লেনদেনে তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশ, অসম, ওড়িশার মতো রাজ্যকেও পিছনে ফেলে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ।
রাজস্ব আদায়ে বড়সড় সাফল্য
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিজিটাল লেনদেনের প্রসার ভূমি রাজস্ব আদায়েও ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে । রাজ্যে জমির লিজ পুনর্নবীকরণের হার বেড়েছে, অ-কৃষি জমির খাজনা দেওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে । ভূমি রাজস্বের আর্থিক বছর শুরু হয় 16 এপ্রিল এবং শেষ হয় পরের বছরের 15 এপ্রিল । 2024 সালের 16 এপ্রিল থেকে 2025 সালের 7 ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজস্ব আদায় ছিল 2416 কোটি টাকা, যা 10 ফেব্রুয়ারি বেড়ে দাঁড়ায় 2830 কোটি টাকা । আর সেই জায়গা থেকেই অনুমান করা হচ্ছে, বছর শেষে এই রাজস্ব আদায় কোথায় গিয়ে দাঁড়াতে পারে ।
চলতি অর্থবর্ষের শেষে এই রাজস্ব আদায় নতুন রেকর্ড তৈরি করবে বলে মনে করা হচ্ছে । গত অর্থবর্ষে এই খাতে রাজস্ব আদায় ছিল 1 হাজার কোটি টাকার সামান্য বেশি । প্রশাসনের মতে, অ-কৃষি জমির খাজনা, সরকারি জমির স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি লিজ, খনি ও খনিজ পদার্থ বাবদ আদায়, ইটভাটা থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব বৃদ্ধি পাওয়াতেই এই সাফল্য এসেছে । সম্প্রতি রাজ্য সরকার জমির লিজ পুনর্নবীকরণের খরচ কমিয়েছে, যা আরও বেশি মানুষকে অনলাইনে লেনদেন করতে উৎসাহিত করেছে ।
ডিজিটাল পরিষেবার প্রসারে এগিয়ে বাংলা
রাজ্য প্রশাসনের এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, “2011 সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনের বিভিন্ন পরিষেবাকে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিয়ে যাওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন । স্বাস্থ্য, পৌর পরিষেবা, আর্থিক লেনদেন, সব ক্ষেত্রেই অনলাইন ব্যবস্থা চালু হয়েছে । অর্থদফতরের কাজও এখন নির্দিষ্ট পোর্টালের মাধ্যমে পরিচালিত হয় । মূলত এই পথে হেঁটেই সাফল্য এসেছে ।”
এই ডিজিটাল ব্যবস্থার ফলে মানুষের ভোগান্তি যেমন কমেছে, তেমনই প্রশাসনিক কাজের গতিও বেড়েছে । বাংলার এই সাফল্য দেশের অন্যান্য রাজ্যের জন্য মডেল হতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা ।
আরও পড়ুন:- রাজ্য পুলিশে সরাসরি ইন্টারভিউর মাধ্যমে প্রচুর কর্মী নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত দেখে শীঘ্রই আবেদন করুন
আরও পড়ুন:- এভাবে রোজ রুটি খেলে গলগলিয়ে বেরোবে খারাপ কোলেস্টেরল, রইল বিস্তারিত