Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- স্বাধীনতা দিবসের আগে জাতীয় পতাকার চাহিদা প্রতিবারই বাড়ে ৷ তবে এবার পতাকার চাহিদা অন্যবারের থেকে বেড়েছে অনেকটাই ৷ কারণটা অবশ্যই জাতীয়তাবোধ এবং তার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ভাবাবেগ এবং দেশপ্রেম ৷ এপ্রিল মাসে কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় পর্যটকদের প্রাণ যায় ৷ তার প্রতিশোধ নিয়ে দেশের সামরিক বাহিনী অপারেশন সিদুঁর করে ৷
এর ফলে তরুণদের মধ্যে জাতীয়তাবোধ নতুন করে আলোড়নের সৃষ্টি করেছে ৷ দেশপ্রেম এক নতূুন মাত্রায় পৌঁছেছে ৷ এমনই নানা কারণে স্বাধীনতা দিবসের আগে তেরঙার বিক্রি অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে ৷ এমনটাই বলছেন, তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটুরের জাতীয় পতাকা তৈরির সঙ্গে যুক্ত কারিগররা ৷

স্বাধীনতা দিবসের মূল অনুষ্ঠান হয় লালকেল্লায়
আর দিন দশেক পর ভারতের 79তম স্বাধীনতা দিবস ৷ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে, স্কুল, কলেজ এবং সরকারি অফিসে উদযাপন করা হয় ‘আজাদ কি অমৃত মহোৎসব’ ৷ মূল অনুষ্ঠান হয় দিল্লির লালকেল্লায় ৷ প্রধানমন্ত্রীর পতাকা উত্তোলন করেন ৷ জাতির উদ্দেশে ভাষণও দেন। যাঁদের প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীনতা এসেছে তাঁদের শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি দেশ আগামিদিনে কীভাবে পরিচালিত হবেন সেই পথও দেখান প্রধানমন্ত্রী ৷ একইভাবে, রাজ্যপাল এবং মুখ্যমন্ত্রীদের উপস্থিতিতে দেশের সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চলে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান হয়। এর জন্য, স্বাধীনতা দিবসের কয়েক মাস আগে থেকে জাতীয় পতাকা তৈরির কাজ পুরোদমে চলতে থাকে।

স্বাধীনতা দিবসের আগে চাহিদা বেড়েছে জাতীয় পতাকার
স্বাধীনতা দিবসের আগে তামিলনাড়ুর কোয়োম্বাটুরের একমাস আগে থেকেই তেরঙা তৈরির কাজ চলছে পুরোদমে ৷ কোয়েম্বাটুরের টাউন হলে জাতীয় পতাকা তৈরি হচ্ছে খাদি, মখমল এবং মাইক্রো ফেব্রিক দিয়ে ৷
জাতীয় পতকার দাম কেমন ?
জাতীয় পতাকা বিক্রির বাজারদর কেমন ? দোকানদাররা বলছেন, খাদি কাপড় দিয়ে তৈরি জাতীয় পতাকা সর্বনিম্ন 5 টাকা থেকে সর্বোচ্চ 2000 টাকায় বিক্রি হয়। একইভাবে, মাইক্রো কাপড় দিয়ে তৈরি পতাকা সর্বনিম্ন 30 টাকা থেকে 1500 টাকা এবং মখমল কাপড় দিয়ে তৈরি পতাকা 100 টাকা থেকে 2000 টাকায় বিক্রি হয়। এখানে তৈরি পতাকাগুলি 1 ইঞ্চি থেকে 42 ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে ৷ পতাকার আকারের উপর নির্ভর করে অশোক চক্র দিয়ে স্ক্রিন-প্রিন্ট করা হয়।
কোথায় কোথায় এই পতাকা যায় ?
এখানকার তৈরি পতাকাগুলি শুধু তামিলনাড়ুর বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হয় না, বরং কেরল, কর্ণাটক এবং অন্ধ্রপ্রদেশের মতো প্রতিবেশী রাজ্যগুলিতে পাঠানো হয় ৷
সবাই কি জাতীয় পতাকা তৈরি করতে পারে ?
জাতীয় পতাকা তৈরি করাটাও একটা শিল্প ৷ এমনটাই জানাচ্ছেন, দোকানদার ৷ শুধুমাত্র খাদি ও গ্রামোদ্যোগ কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত কোম্পানিগুলি দ্বারা পরিচালিত দোকানগুলিকে পতাকা তৈরির বরাত দেওয়া হয় ৷ বেশিরভাগ পতাকা খাদি কাপড় দিয়ে তৈরি হয়। অনুমোদিত নয় এমন কোনও সংস্থা জাতীয় পতাকা তৈরি করতে পারে না। জাতীয় পতাকা তৈরি এবং ব্যবহারের জন্য কিছু নিয়ম রয়েছে।

তরুণদের মধ্যে জাতীয় পতাকা কেনার প্রবণতা বেড়েছে
জাতীয় পতাকার চাহিদা বেড়ে যাওয়ার কারণ ?
- জাতীয় পতাকা তৈরির সঙ্গে জড়িত রাজেন্দ্রন বলেন, “আমি 40 বছরেরও বেশি সময় ধরে জাতীয় পতাকা তৈরি করছি। প্রতিবছর স্বাধীনতা দিবস এবং প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে তেরঙা বিশেষভাবে তৈরি করা হয় ৷ অন্যান্য সময়, এখানে নানা রাজনৈতিক দলের পতাকা তৈরি করা হয়। তামিলনাড়ুতে তৈরি বেশিরভাগ জাতীয় পতাকা কেরলে যায়। একইভাবে, এখান থেকে অন্ধ্রপ্রদেশ, কর্ণাটক এবং তামিলনাড়ুর বিভিন্ন অংশে পতাকা পাঠানো হয় ৷”
- তিনি আরও বলেন, “সম্প্রতি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সংঘাত হয়েছে ৷ তার জেরে তরুণদের মধ্যে আরও বেশি করে জাতীয়তাবাদী মনেভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে ৷ অনেকেই প্রচুর পরিমাণে জাতীয় পতাকা কিনছেন। তরুণদের মধ্যে এই জাতীয়তাবাদেরর বোধ বেড়ে যাওয়ার কারণ, কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় পর্যটকদের প্রাণ যাওয়া এবং তারপর হওয়া অপারেশন সিদুঁরের সাফল্য ৷”
- রাজেন্দ্রনের আরও সংযোজন, “বছরের বিভিন্ন সময়ে নির্বাচন এবং রাজনৈতিক দলের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে থাকে ৷ তাই সারাবছর ধরেই পতাকা তৈরির কাজ চলতে থাকে। এবছর 8×10 থেকে 15×30 ফুট উচ্চতার জাতীয় পতাকা তৈরি হচ্ছে। গত বছর কেরলে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে বিক্রি কম ছিল। কিন্তু এখন পতাকা বিক্রি বেড়েছে। এবছর এখনও পর্যন্ত 1.50 লক্ষ পতাকা তৈরি করা হয়েছে।”