Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা। জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র বাইসরান মাঠে গুলি চালিয়ে ২৬ জনকে হত্যা করল সন্দেহভাজন লস্কর-ই-তইবার (LeT) শাখা সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (TRF)। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন দুই বিদেশিও। মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ এই হামলা চালানো হয়, যেটিকে সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম ভয়াবহ সন্ত্রাসবাদী হামলা বলেই মনে করা হচ্ছে।
সেনাবাহিনীর পোশাক পরে আসে
সূত্রের খবর, হামলাকারীরা সেনাবাহিনীর পোশাক পরে আসে এবং পর্যটকদের লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি চালাতে শুরু করে। যে স্থানটিকে ‘মিনি সুইৎজারল্যান্ড’ বলা হয়, সেখানে হঠাৎ এই হামলায় রীতিমতো আতঙ্ক ছড়ায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, লোকজন প্রাণ বাঁচাতে ছোটাছুটি করতে থাকেন। চারদিক জুড়ে শুধু আর্তনাদ আর লাশ ছড়িয়ে ছিল। স্থানীয়রা ও নিরাপত্তা কর্মীরা মিলিতভাবে আহতদের উদ্ধার কাজে হাত লাগান।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, হামলার মূল চক্রী লস্কর নেতা সইফুল্লাহ কাসুরি ও তার দুই পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর (PoK)-ভিত্তিক সঙ্গী। হামলার কয়েকদিন আগেই তারা উপত্যকায় অনুপ্রবেশ করে বলে সন্দেহ। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, পাঁচ থেকে ছয় জন জঙ্গি এই হামলায় অংশ নেয়।
আরও পড়ুন:- শিশুদেরও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট-ATM কার্ড-চেকবুক, কী কী সুবিধা পাবে শিশুরা ? জেনে নিন
পহেলগাঁও জঙ্গি হামলা: কী কী ঘটল এক নজরে
ভয়াবহ হামলা: মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার পহেলগামের বাইসারান ঘাসের মাঠে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা হয়। সন্ত্রাসবাদীরা পর্যটকদের লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালায়।
মৃত ২৬ জন, আহত বহু
এই হামলায় এখনও পর্যন্ত ২৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন দুই বিদেশিও। বহু পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দা গুরুতর আহত হয়েছেন।
‘মিনি সুইৎজারল্যান্ড’ রক্তাক্ত
বাইসারান এলাকা ‘মিনি সুইৎজারল্যান্ড’ নামে পরিচিত। পাহাড় ও ঘাসের মাঠে ঘেরা এই এলাকা সাধারণত খুব শান্তিপূর্ণ ও পর্যটকে ভরা থাকে। সেই জায়গাই এক লহমায় রক্তাক্ত হয়ে যায়।
সেনার পোশাকে জঙ্গিরা
চোখে ধুলো দিতেই জঙ্গিরা সেনার পোশাক পরে এসেছিল। তারপর আচমকাই পর্যটকদের উপর গুলি চালাতে শুরু করে।
TRF জঙ্গি সংগঠনের সন্দেহ
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই হামলার পিছনে রয়েছে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (TRF)। এটি নিষিদ্ধ সংগঠন লস্কর-ই-তইবার একটি শাখা।
মূল চক্রী সইফুল্লাহ কাসুরি
হামলার পিছনে মূল মাথা বলে ধরা হচ্ছে লস্করের শীর্ষ নেতা সইফুল্লাহ কাসুরি ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে থাকা তার দুই সহযোগীকে।
প্রধানমন্ত্রী মাঝপথে সফর বাতিল
এই হামলার খবর পেয়ে সৌদি আরব সফর মাঝপথে ছেড়ে তড়িঘড়ি দেশে ফিরে আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিমানবন্দরেই জরুরি বৈঠক করেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, ‘এই জঘন্য কাজের সঙ্গে যারা যুক্ত, তারা কেউ রেহাই পাবে না। শাস্তি পেতেই হবে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কাশ্মীরে
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বর্তমানে শ্রীনগরে গিয়ে গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন। তিনি উচ্চপর্যায়ের বৈঠকও করেছেন।
বিরোধীদের তোপ
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এই হামলাকে ‘ভয়ঙ্কর’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করে বলেন, ‘কাশ্মীরে স্বাভাবিক পরিস্থিতির দাবি মিথ্যে প্রমাণিত হল।’
বন্ধ ঘোষণা, আতঙ্ক পর্যটনে
এই ঘটনার পর পহেলগাঁওয়ে বনধ ঘোষণা করা হয়েছে। সমস্ত প্রাইভেট স্কুলও এক দিনের জন্য বন্ধ রাখা হয়েছে। বহু পর্যটক দ্রুত ফিরে যাচ্ছেন।
বিমান সংস্থাগুলির সাহায্য
আহত ও আতঙ্কগ্রস্ত যাত্রীদের সাহায্যে এয়ার ইন্ডিয়া ও ইন্ডিগো বাড়তি বিমান পরিষেবা চালু করেছে শ্রীনগর থেকে দিল্লি ও মুম্বইয়ের দিকে।
অভিযান চলছে
পাহাড়ি এলাকা ও জঙ্গলে জঙ্গিদের খোঁজে ব্যাপক তল্লাশি চালাচ্ছে সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনী। গোয়েন্দারা মনে করছেন, হামলার আগে জঙ্গিরা এলাকা রেকি করে রেখেছিল।
আরও পড়ুন:- ধামাকা অফার! ফ্রিতে 5000GB ডেটা দিচ্ছে Jio! কিভাবে পাবেন জেনে নিন