Bangla News Dunia, Pallab : মাস দুয়েক আগে চিপস চুরির অপবাদ সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হয়েছিল সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্র৷ পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের নবম শ্রেণির এক ছাত্রের আত্মহত্যার ঘটনা সামনে এল। এবার ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরেরই কাঁথিতে। আত্মঘাতী ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, একটি মেয়েকে উত্যক্ত করার। মিথ্যে অপবাদ সহ্য করতে না পেরেই ছাত্রটি চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। মর্মান্তিক এই ঘটনায় রীতিমতো শোকের ছায়া নেমে এসেছে কাঁথির পিছাবনি এলাকায়৷
আরও পড়ুন : পশ্চিমবঙ্গ ভোটার তালিকা সংশোধন, দেখে নিন সকলের প্রয়োজনীয় গুরুত্বপুর্ন প্রশ্ন-উত্তর
জানা গিয়েছে, ১৫ বছরের ওই কিশোর কাঁথির স্থানীয় একটি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল৷ বৃহস্পতিবার স্কুল থেকে ফেরার পথে এক বন্ধুর বাড়ি থেকে নিজের বই আনতে গিয়েছিল। অভিযোগ, যাওয়ার সময় তাকে আটকে রেখে মারধোর করে এক কিশোরীর বাবা ও আরও পরিচিত কয়েকজন। কিশোরীর বাবার অভিযোগ, তাঁর মেয়েকে উত্যক্ত করতো ছেলেটি। ওই ছাত্র বার বারই দাবি করে, সে এই কাজ করেনি৷ এমন কি, ওই ছাত্রের বন্ধু এবং তার অভিভাবকরাও জানান যে সত্যিই ওই ছাত্র তাদের বাড়ি থেকে বই নিতে এসেছিল৷ কিন্তু ঘটনাস্থলে এসে অষ্টম শ্রেণির সেই ছাত্রী দাবি করে, ওই ছাত্রই তাকে উত্যক্ত করেছিল৷
এরপরেই ছাত্রের বাড়িতে ফোন করে খবর পাঠান কিশোরীর বাবা। খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছে মিটমাট করে ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। যেহেতু কিশোরী নিজেই অভিযোগ করেছিল ইভটিজিংয়ের, সেহেতু নিজের ছেলেকে বাড়িতে প্রচণ্ড বকাবকি করেন বাবা। এই অপবাদ সহ্য করতে না পেরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে ছাত্রটি। শুক্রবার সকালে বাড়ির দোতলার কড়িকাঠ থেকে ছাত্রকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান তার পরিবারের সদস্যরা৷ ছাত্রের ঘর থেকে উদ্ধার হয় একটি সুইসাইড নোট।
সুইসাইড নোটে তার বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে ওই ছাত্র৷ সুইসাইড নোটে সে বাবার উদ্দেশে লিখে গিয়েছে, ‘বাবা আমি ভুল করিনি, ওই মেয়েটাকে আমি চিনি না৷’ মৃত কিশোরের বাবার দাবি, বাজারের মাঝখানে ওই কিশোরীর বাবা অপদস্থ করার কারণেই আত্মহত্যা করেছে তাঁর ছেলে৷
ছাত্রের আত্মহত্যার ঘটনার পর বিপাকে পড়ে যায় ছাত্রীর পরিবার। যদিও ওই ছাত্রীর বাবার দাবি, বৃহস্পতিবার পিছাবনি বাজারে ওই ছাত্রকে আটকে রাখা এবং মারধরের ঘটনার সময় তিনি সেখানে উপস্থিতই ছিলেন না৷ ছাত্রকে আটকে রেখেছিল স্থানীয় কয়েকজন। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়েকে নিয়ে চলে আসেন বলে দাবি করেছেন ওই ছাত্রীর বাবা৷ গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখছে কাঁথি থানার পুলিশ৷ মর্মান্তিক এই ঘটনায় রীতিমতো শোকের ছায়া নেমে এসেছে কাঁথির পিছাবনি এলাকায়৷