Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- কামনার বিকৃত রূপ দেখল মালদা ৷ একটি গ্রামে ছাগলকে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠল যুবকের বিরুদ্ধে ৷ গৃহপালিত পোষ্যকে নির্যাতন করার দৃশ্য ধরা পড়ে যায় ছাগল মালিকের চোখে ৷ তিনি আসায় ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় অভিযুক্ত যুবক ৷ পরে মদ্যপ অবস্থায় সে মালিকের পরিবারের উপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ ৷ মালিকের স্ত্রী বর্তমানে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৷ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়েছে মালিক ও তাঁর দাদাকেও ৷ যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে ৷ পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগও জমা দিয়েছেন তাঁরা ৷ তবে ঘটনার পর এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে অভিযুক্ত যুবক ৷
ঘটনাটি ঘটেছে মালদার এক প্রান্তিক গ্রামে ৷ এলাকার মানুষজন জানাচ্ছেন, গতকাল ওই গ্রামের এক বাসিন্দা তাঁর গৃহপালিত একটি ছাগলকে মাঠে ছেড়ে আসেন ৷ ছাগলটি ওই মাঠেই চড়ছিল ৷ ঘণ্টাখানেক পর তিনি মাঠে ফেরেন ৷ কিন্তু নিজের পোষা ছাগলটিকে দেখতে পাননি ৷ খোঁজাখুঁজি শুরু করেন ৷ হঠাৎ মাঠের একদিক থেকে ছাগলের গলার আওয়াজ শুনে তিনি দেখেন তাঁর পোষা ছাগলটির মুখ গামছা দিয়ে বেঁধে নির্যাতন করছে গ্রামেরই একটি ছেলে ৷ ছাগলের মালিককে দেখতে পেয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যায় ৷ এদিকে মালিক পোষ্যকে বাড়িতে নিয়ে এসে এলাকার লোকজনকে গোটা ঘটনা খুলে বলেন ৷ গোটা গ্রামে এই খবর চাউর হয়ে যায় ৷ তারপরই অভিযুক্ত যুবক মদ্যপ অবস্থায় মালিক ও তাঁর পরিবারের উপর চড়াও হয় ৷ সবাইকে বেধড়ক মারধর শুরু করে ৷ তার মারে আহত হন মালিকের বাড়ির চার সদস্য ৷ শেষ পর্যন্ত গ্রামবাসীরা এগিয়ে এলে ওই যুবক সেখান থেকে পালিয়ে যায় ৷
আরও পড়ুন:- শুধুমাত্র ইন্টারভিউর মাধ্যমে ভারতীয় রেলে কর্মী নিয়োগ চলছে! আবেদন পদ্ধতি সহ বিস্তারিত দেখেনিন
পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগও জমা দিয়েছেন তাঁরা
মালিকের বক্তব্য, “ঘাস খাওয়ার জন্য ছাগলটাকে ক্ষেতে রেখে এসেছিলাম ৷ পরে গিয়ে দেখি, ছাগল নেই ৷ বাড়িতে এসে সেকথা সবাইকে জানাই ৷ এরপর সবাই মিলেই ছাগল খুঁজতে বেরোই ৷ হঠাৎ দেখি, ওই ছেলেটি আমার ছাগলের সঙ্গে খারাপ কাজ করছে ৷ ছাগলের মুখ গামছা দিয়ে বেঁধে রেখেছিল ৷ আমি সেদিকে ছুটে যেতেই ছেলেটি সেখান থেকে পালিয়ে যায় ৷ আমি ছাগল নিয়ে ঘরে ফিরে আসি ৷ এরপর বাজার চলে যাই ৷ ফেরার সময় দেখি, ছেলেটি আমার স্ত্রী’কে মারছে ৷ স্ত্রী’কে বাঁচাতে গেলে ও আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ৷ লাঠি দিয়ে আমাকে বেধড়ক পেটায় ৷ আমাকে বাঁচাতে এলে আমার দাদা-মা’কেও মারধর করে ৷ আমি ওর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি ৷”
মালিকের স্ত্রী বলেন, “ছাগলটাকে মাঠে বেঁধে রেখে আসা হয়েছিল ৷ কিছুক্ষণ পর আমার স্বামী সেখানে গিয়ে দেখে, ছাগল নেই ৷ ওর বাচ্চাগুলো মাঠে রয়েছে ৷ বাড়িতে এসে সে আমাদের সব জানায় ৷ এরপর ও ফের ছাগল খুঁজতে বেরোয় ৷ পিছন পিছন আমার শাশুড়িও যান ৷ এক জায়গায় ছাগলের আওয়াজ পেয়ে ওরা দেখতে যায় ৷ সেখানেই ওদের চোখে এই ঘটনা ধরা পড়ে ৷ এই ঘৃণ্য কাজের জন্য ছেলেটিকে আমার স্বামী আর শাশুড়ি গালাগালি করে ৷ বাড়ি ফেরার পর ওরা সবাইকে গোটা ঘটনা খুলে বলে ৷ ছেলেটি পালিয়ে যায় ৷ পরে মদ খেয়ে ফিরে আসে ৷ হাতে মোটা ডান্ডা ছিল ৷ সবাইকে মারতে শুরু করে ৷ পরে ধরা পড়ার ভয়ে পালিয়ে যায় ৷”
এমন ঘটনায় হতভম্ব পুলিশও ৷ অ্যাডিশনাল এসপি সম্ভব জৈন বলেন, ‘‘হরিশ্চন্দ্রপুরের কেসটা আমরা খতিয়ে দেখছি ৷ যদি সেখানে এমন কোনও ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে নির্দিষ্ট ধারা অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে ৷’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক থানার এক আধিকারিক বলেন, “এমন অভিযোগ আগে কখনও আমাদের থানায় জমা পড়তে দেখিনি ৷ অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা অভিযুক্ত যুবকের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছি ৷ তবে গতকাল সন্ধে থেকেই সে পলাতক ৷ এই ঘটনায় চারজন আহত হয়েছেন ৷ তাঁদের মধ্যে তিনজনকে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে ৷ একজন চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৷ গোটা ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে ৷”
আরও পড়ুন:- যক্ষ্মা বহু বছর ধরে একটি গুরুতর সমস্যা, এই রোগ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি জেনে নিন
আরও পড়ুন:- জোয়ার-ভাটায় কি সত্যিই বাতের ব্যথা বাড়ে? জানুন বিজ্ঞান কি বলছে