Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- পাকিস্তানে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে বন্দি কুলভূষণ যাদবের সঙ্গে ফের অন্যায্য আচরণের ঘটনা সামনে এসেছে। পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে এবার তা কার্যত স্বীকার করল শাহবাজ শরিফ সরকার। ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (ICJ) নির্দেশ দিয়েছিল কুলভূষণকে কনস্যুলার অ্যাক্সেস দিতে হবে এবং হাইকোর্টে আপিলের সুযোগ দিতে হবে। যদিও, বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের আইনজীবী জানিয়েছেন— সেই অধিকার বাস্তবে কুলভূষণকে দেওয়া হয়নি।
সামরিক আদালতের রায়, কিন্তু নেই আপিলের সুযোগ
‘ডন’ পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, আইনজীবী স্পষ্ট বলেন— আইসিজের সিদ্ধান্তের পরেও কুলভূষণ যাদব সামরিক আদালতের রায়কে হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করতে পারেননি। যদিও পাকিস্তানি আইন পরে সংশোধন করা হয়েছে, তবুও সেই অনুযায়ী কোনও বাস্তব পদক্ষেপ হয়নি বলে অভিযোগ।
একই অধিকার সকলের নয়?
সুপ্রিম কোর্টে একটি পৃথক মামলায় শুনানি চলছিল, যেখানে ২০২৩ সালের ৯ মে ইমরান খানের গ্রেফতারির পর সামরিক আদালতে দোষী সাব্যস্ত পাকিস্তানি নাগরিকদের বিষয়ে আলোচনা হচ্ছিল। আদালত জানতে চায়— যাদবের ক্ষেত্রে যেখানে কনস্যুলার অ্যাক্সেস ও আপিলের অধিকার দেওয়া হয়েছিল, সেখানে ওই পাকিস্তানি নাগরিকদের কেন সেই অধিকার দেওয়া হয়নি? এই প্রশ্নের উত্তরে আদালতে আইনজীবী কার্যত স্বীকার করেন, যাদবের ক্ষেত্রেও সেই অধিকার বাস্তবায়িত হয়নি।
আরও পড়ুন:- পুরুলিয়ায় ভূতের আতঙ্ক ! ভয় কাটাতে রাত্রিযাপন করবে বিজ্ঞান মঞ্চ । জানুন বিস্তারিত
ভিয়েনা কনভেনশন লঙ্ঘন
পাকিস্তানের আইনজীবী আদালতে আরও বলেন, কনস্যুলার সম্পর্ক সংক্রান্ত ভিয়েনা কনভেনশনের ৩৬ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, গ্রেফতারকৃত বিদেশি নাগরিকের তার দেশের কনস্যুলেটের সঙ্গে যোগাযোগের পূর্ণ অধিকার থাকা উচিত ছিল। কিন্তু পাকিস্তান সেই নিয়ম মানেনি, যা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল।
যাদবের গ্রেফতার ও মৃত্যুদণ্ড
২০১৬ সালের মার্চ মাসে বেলুচিস্তান থেকে কুলভূষণ গ্রেফতার করে পাকিস্তান। ২০১৭ সালে এক সামরিক আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। পাকিস্তান দাবি করে, যাদব RAW-এর এজেন্ট এবং তিনি বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে যুক্ত। ভারত এই দাবি একেবারে উড়িয়ে দিয়ে জানায়, যাদব ইরানে ব্যবসায়িক কাজে গিয়েছিলেন এবং সেখান থেকেই তাকে অবৈধভাবে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
আন্তর্জাতিক আদালতের নির্দেশ মানেনি পাকিস্তান?
ভারতের দাবি, পাকিস্তান আইসিজের নির্দেশ যথাযথভাবে মানেনি এবং এখনও পর্যন্ত যাদবের বিচার প্রক্রিয়া স্বচ্ছ নয়। সামরিক আদালতের রায় পুনর্বিবেচনার সুযোগ না দেওয়াও গুরুতর আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের সামিল। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে ফের কূটনৈতিক উত্তেজনা তৈরি হতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন:- কীভাবে ও কারা হিংসা ছড়াল মুর্শিদাবাদে? জানুন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত