Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- ভারত কৃষিপ্রধান দেশ ৷ এই প্রযুক্তির যুগেও চিরাচরিত প্রথায় কৃষিকাজ হয় দেশের বেশির ভাগ জায়গায় ৷ তবে কৃষিকাজ নিয়ে বহু গবেষণা হচ্ছে ৷ চলছে নতুন দিশার সন্ধান। এখানেই পথ দেখাল মহারাষ্ট্র। আখ চাষে ব্যবহার হল এআই। তাতে সুফল মিলল হাতেনাতে। কম সময়ে উৎপাদন বাড়ল 40 শতাংশ। কমেছে জলের ব্যবহারও।
মহারাষ্ট্রে বিপুল পরিমাণে আখ চাষ হয় ৷ যুগ যুগ ধরে চিরাচরিত প্রথায় আখ চাষ হয়ে আসছে ৷ সম্প্রতি কৃত্রিম মেধার সাহায্যে কীভাবে আখ চাষ করা যায়, তা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু হয়েছে ৷ বারামতীর কৃষি উন্নয়ন ট্রাস্ট দেশে প্রথম আখ চাষে এই ধরনের যুগান্তকারী পরীক্ষা করেছে ৷ কৃত্রিম মেধার ফলে তুলনায় কম খরচে অনেক বেশি আখ উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে ৷
কম খরচে আখ উৎপাদন
বারামতীতে কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে কৃষিকাজ সংক্রান্ত প্রদর্শনী ‘কৃষিক 2025’-এর আয়োজন করা হয়েছিল ৷ সেখানে এআই বা কৃত্রিম মেধার দ্বারা কীভাবে আখ উৎপাদন করা যায়, সেই পরীক্ষা করে দেখানো হয় কৃষকদের ৷
জানা গিয়েছে, বারামতী এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট, মাইক্রোসফ্ট এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে একটি আখচাষের ফার্ম তৈরি করে ৷ সেখানে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এর সাহায্যে অল্প খরচে বিপুল আখ উৎপন্ন হয় ৷ এই পরীক্ষাটি একহাজার জন কৃষক তাঁদের আখের ক্ষেতে করেছেন ৷ তাঁরা ভালো এবং কার্যকরী ফল পেয়েছেন ৷
আরও পড়ুন:- Mutual Fund থাকলেই এই বিরাট সুবিধা আপনিও পাবেন। এক ক্লিকে জেনে নিন
বিগত কয়েক বছরে আখ চাষে প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে ৷ পাশাপাশি গবেষণাও হয়েছে ৷ এর ফলে কৃষকরা সুবিধা পেয়েছেন ৷ তারপরও বহু কৃষক চিরাচরিত প্রথায় আখ চাষ করে যাচ্ছেন ৷ কারণ তাঁদের কাছে আখ চাষ সম্পর্কিত এই নয়া তথ্য পৌঁছয়নি ৷ ফলে আখ চাষের খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে ৷ এদিকে আখের উৎপাদন কমছে ৷ কিন্তু এখন এআই ব্যবহার করে আখ চাষের সুফল পাচ্ছেন কৃষকরা ৷ 40 শতাংশ পর্যন্ত উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে ৷ উৎপাদন খরচ হ্রাস পেয়েছে 20-40 শতাংশ এবং জল বেঁচেছে 30 শতাংশ ৷
এই বিষয়ে ট্রাস্টের অন্যতম কর্তা ডঃ ভূষণ গোসাভি বলেন, “আমরা আখ চাষে একটা বিপ্লব করেছি ৷ এআই ব্যবহার করে প্রতি একরে 160 টনেরও বেশি আখ কীভাবে উৎপাদন করা যায়, তার একটা প্রেজেন্টেশন আমরা করে দেখিয়েছি ৷ তিন বছর আগে এই পরীক্ষা শুরু হয় ৷ আধুনিক প্রযুক্তি ও কৃত্রিম মেধার সাহায্যে কীভাবে আখ চাষে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা যায়, তা আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছি ৷” তিনি আরও জানান, এই পরীক্ষার অন্যতম মূল লক্ষ্য চাষে জল ব্যবহার কমানো ৷ এছাড়া রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধিও তাঁদের লক্ষ্য ৷ 2024 সালের মার্চ মাস থেকে এক হাজার কৃষকের ক্ষেতে এই পরীক্ষা শুরু হয়েছে ৷
কী করে কাজ করে এআই?
এআই বা কৃত্রিম মেধার মাধ্যমে কৃষকরা মাটির চরিত্র, জমির বিষয়ে তথ্য, সার থেকে শুরু করে জলবায়ু পরিবর্তন এবং চাষের জন্য কী কী প্রয়োজনীয় তা জানতে পারছেন ৷ জমিতে পুঁতে রাখা সেন্সর মাটির আর্দ্রতা, তাপমাত্রা এবং পরিবর্তন সংক্রান্ত তথ্য জানাচ্ছে কৃষককে ৷ এই পরীক্ষা-নিরীক্ষার নজরদারি চালায় স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম উপগ্রহ ৷ সেখান থেকে কৃষকরা সবসময় চাষের বিষয়ে বিভিন্নরকম বার্তা পান ৷ এই এক হাজার কৃষকের জমিতে আখ চাষ নিয়ে যে পরীক্ষা হচ্ছে, সে বিষয়ে ডঃ গোসাভি বলেন, “গত বছরের তুলনায় কৃষকদের আখের ফলন 40 শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে ৷” এআই ব্যবহার করলে আখের উৎপাদন 40 শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি হতে পারে ৷ এর ফলে 30-40 শতাংশ জল কম লাগবে, উৎপাদনের খরচ 20-40 শতাংশ হ্রাস পাবে এবং এর সঙ্গে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পাবে ৷
অরগ্যানিক কার্বন অ্যাসেসমেন্টের মাধ্যমে কৃষকরা ভবিষ্যতে কার্বন ক্রেডিটের বিষয়ে সুবিধা পাবেন ৷ তাঁদের কৃষিকাজে দক্ষতা উন্নত হবে 35 শতাংশ ৷ নিরবচ্ছিন্ন নজরদারির ফলে রাসায়নিক সার ব্যবহার কমবে 25 শতাংশ এবং কীটনাশক ব্যবহার বাঁচবে 25 শতাংশ পর্যন্ত ৷
আরও পড়ুন:- ভবিষ্যতের জন্য শিশুদের এটা শেখান। জানুন কি মত হার্ভার্ড অধ্যাপকের ?
আরও পড়ুন:- এটাই পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্গম জায়গা, যেখানে মানুষ পৌঁছলে আর ফিরতে পারবে না, বিস্তারিত জেনে নিন