কেরলে হরিয়ানার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে মরিয়া কংগ্রেস ! সুর চড়াচ্ছেন শশী ?

By Bangla News Dunia Dinesh

Published on:

Bangla News Dunia, Pallab : কেরলে বিধানসভা ভোটের আর একবছর বাকি রয়েছে। ভোটের আগে শাসক সিপিএমের নেতৃত্বাধীন এলডিএফ এবং বিরোধী কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ উভয় শিবিরই শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সারতে ব্যস্ত। রাজনৈতিক মহলের জল্পনা, দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর সরকারে পরিবর্তনই কেরলের পরম্পরা। ২০২১ সালে অবশ্য সেই পরম্পরা ভেঙে বামেদের প্রত্যাবর্তন হয়েছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের নেতৃত্বাধীন এলডিএফ সরকারের বিরুদ্ধে কেরলে যেভাবে অভিযোগের পাহাড় জমছে, তাতে আগামী বছর ইউডিএফের ক্ষমতা দখলের সম্ভাবনা যথেষ্ট।

আরও পড়ুন : RBI-এর বড় ঘোষণা, ব্যাঙ্ক থেকে ২৫ হাজার টাকার বেশি তোলা যাবে না !

এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের তরফে কে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হবেন তা নিয়ে ক্রমশ চর্চা বাড়ছে কেরলের রাজনীতিতে। তিরুবনন্তপুরমের চারবারের সাংসদ শশী থারুরকে নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে যে বিতর্ক শুরু হয়েছে, তার নেপথ্যে মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবিদার হওয়ার বিষয়টি একেবারে উড়িয়ে দিতে নারাজ রাজনৈতিক মহল। সূত্রের দাবি, কেরলের মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি নিয়ে রাষ্ট্রসংঘের প্রাক্তন আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল শশী থারুর কংগ্রেস হাইকমান্ডের ওপর চাপ সৃষ্টি করতেই ইদানীং সুর চড়াচ্ছেন।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের কাজের প্রশংসার মধ্যেও সেই দর কষাকষির ছায়া দেখা যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। তাঁকে ঘিরে কংগ্রেসের অন্দরে অস্বস্তি শুরু হলেও তাতে খুব একটা আমল দিচ্ছেন না থারুর। তিনি সাফ বলেছেন, আমার বক্তব্য নিয়ে এত বিতর্কের কী হল সেটাই তো বুঝতে পারছি না।’ তিনি কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপি বা বাম শিবিরের দিকে ঝুঁকছেন বলে যে জল্পনা চলছে, তাতেও জল ঢেলেছেন থারুর। তাঁর বক্তব্য, ‘আমি সর্বদা নিজেকে কংগ্রেসি হিসেবেই দেখেছি। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে আমি কখনও কারও সঙ্গে আলোচনা করিনি। কারণ, আমার সেরকম কোনও অভিপ্রায়ও নেই।’ তবে শুধু থারুর নয়, কংগ্রেসের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) কেসি বেণুগোপাল এবং কেরলের বিরোধী দলনেতা ভিডি সতীশন। তাঁরাও মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হতে চান। আর এতেই অস্বস্তি ক্রমশ বাড়ছে কংগ্রেস হাইকমান্ডের।

আরও পড়ুন : ২ বছরের জন্য সিম কার্ড বন্ধ হবে, নতুন নিয়ম চালু !

গত লোকসভা ভোটে কেরলে বিপুল জয় পেয়েছে কংগ্রেস। এর আরও একটি বড় কারণ হল, লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধি এবং ওয়েনাডের বর্তমান সাংসদ প্রিয়াংকা গান্ধি ভদরা। তাঁদের সামনে রেখে এবার বিধানসভা ভোটেও বাজিমাত করতে চায় কংগ্রেস ও ইউডিএফ। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হওয়া নিয়ে যেভাবে কংগ্রেসের অন্দরে দর কষাকষি শুরু হয়েছে, তাতে সিঁদুরে মেঘ দেখছে দলেরই একাংশ। কারণ, ভালো অবস্থানে থাকা সত্ত্বেও হরিয়ানা বিধানসভা ভোটে ভূপেন্দ্র সিং হুডা ,কুমারী সেলজা ও রণদীপ সুরযেওয়ালার মধ্যের লড়াই সরাসরি প্রভাব ফেলেছিল কংগ্রেসের ভোটবাক্সে। সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় তাই আগেভাগে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং রাহুল গান্ধি শুক্রবার কেরালার শীর্ষনেতাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন।

কংগ্রেসের মূল লক্ষ্য, আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় ঐক্য বজায় রাখা। সূত্রের খবর, শশী থারুর এই বৈঠকে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করলেও কোনও কড়া মন্তব্য করবেন না। তাঁর ঘনিষ্ঠমহল জানিয়েছে, তিনি আপাতত বিতর্ক থেকে দূরে থাকতে চান এবং নির্বাচনের আগে দলের কার্যক্রমে সক্রিয় অবস্থান নেবেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, থারুর নিজেকে ভবিষ্যতের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তুলে ধরতে চাইছেন। মঙ্গলবারই কেরলে কংগ্রেসের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেত্রী দীপা দাশমুন্সির সঙ্গে দেখা করেন থারুর-ঘনিষ্ঠ লোকসভার সাংসদ কে রাঘবন। প্রদেশ নেতারা যেন থারুরের বিরুদ্ধে আক্রমণের সুর নরম করে সেই অনুরোধও জানান তিনি। জানা গিয়েছে, দিল্লির বৈঠকে কংগ্রেস সাংসদ কোডিকুনিল সুরেশ, রমেশ চেন্নিথালা, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কে সুধাকরণ-সহ শীর্ষনেতৃত্ব উপস্থিত থাকবেন।

আরো পড়ুন : UPI লেনদেনে বড় পরিবর্তন ! না জানলে পড়বেন বিপদে

Bangla News Dunia Dinesh

মন্তব্য করুন