Bangla News Dunia , পল্লব চক্রবর্তী : শিব রাত্রির ব্রত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্রতকথা অনুযায়ী শিবরাত্রি ব্রতের ব্যাখ্যা করেছিলেন মহাদেব স্বয়ং। এই ব্রত পালন করলে নাকি মেয়েদের সব কামনা বাসনা পূর্ণ হয়। মেয়েরা যা চায়, যেমন – ভাল স্বামী, সুন্দর পুত্র ও সাংসারিক মঙ্গল। মধ্যযুগের এই ব্রতের প্রচলন হয়, সেখানে মেয়েদের মধ্যে সধবা বা বিধবা যাই হোক না কেন সব বয়সের মহিলারা এই পুজো করতেন। অনেকে মনে করেন শিবরাত্রি শুধু মেয়েদের জন্য। আদতে মোটেও তা নয়। ছেলেরাও শিবরাত্রি করতে পারেন। করেনও। আসলে প্রথম শিবরাত্রি কিন্তু একজন পুরুষই করেছিলেন। গল্পও শুনিয়েছেন স্বয়ং শিবই।
ফলে নারী পুরুষ উভয়েই এই উৎসবে মেতে ওঠেন। ভগবান শিব শম্ভুর ওই বিশেষ দিনে তার আরাধনা করা হয় যাতে তার আশির্বাদ লাভ করা যায়। তাই সব মিলে দেবাদিদেব মহাদেবের চরণে নিজের মন কামনা রাখে। শিব মহাপুরাণ অনুসারে, অতি প্রাচীনকালে কাশীধামে এক নিষ্ঠুর ব্যাধ বাস করতেন। যাঁর ধর্মকর্মের বালাই ছিল না। পশুহত্যাই ছিল তাঁর টিকে থাকার একমাত্র অবলম্বন। একদিন শিকারে বেরিয়ে জঙ্গলে পথ হারিয়ে ফেলেন তিনি। সন্ধ্যা নেমে আসে।
তখন তিনি হিংস্র জন্তু-জানোয়ারের কবলে পড়ার ভয়ে গাছের উপরে আশ্রয় নেন। খাওয়ার মতো কোনও শিকার না পেয়ে প্রচণ্ড হতাশ হয়। না ভেবেই আনমনে গাছ থেকে একটা একটা করে পাতা ছিঁড়ে তিনি নীচে ফেলতে থাকেন। সেই গাছটি ছিল বেলগাছ। আর সেই বেলগাছের নীচেই ছিল একটি শিবলিঙ্গ। দিনটি ছিল শিবচতুর্দশী অর্থাৎ মহা শিবরাত্রি। আর ব্যাধও ছিল উপবাসী। তাঁর ফেলা বেলপাতা গুলো টুপটাপ করে শিবলিঙ্গের মাথায় পড়েছিল।
পর দিন ব্যাধ বাড়ি ফিরে এসে দেখেন তাঁর বাড়িতে এক অতিথি এসেছেন। তখন তিনি নিজে না খেয়ে তাঁর খাবারটা তিনি অতিথিকে দিয়ে দেন। মন্ত্রোচারণ না করলেও, ব্রত পালনটা কিন্তু না জেনেই তিনি ঠিকঠাক মতোই সম্পন্ন করেছিলেন। পরে ব্যাধ মারা যাওয়ার পর শিবদূত আর যমদূতদের মধ্যে তাঁকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ধুন্ধুমার কাণ্ড শুরু হয়ে যায়। শেষে শিবের দূতেরা জয়ী হন। হেরে গিয়ে যমরাজও স্বীকার করে নেন যে, কেউ শিবচতুর্দশী পালন করলে তাঁর উপরে যমের আর কোনও অধিকার থাকবে না।
আরও খবর পেতে ফলো করুন আমাদের চ্যানেল