কোচবিহার: কোচবিহার জেলার মাথাভাঙ্গা ১ নং ব্লকের শিকারপুরের বাসিন্দা গবেষক মোসলেম হোসেন তাঁর পিএইচডি গবেষণার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ সফলভাবে উপস্থাপন করলেন বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সিটি অব সান্তো তোমাসে (University of Santo Tomas)। ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় অবস্থিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৬১১ সালে।
মোসলেম হোসেন ৪ ও ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ তারিখে আয়োজিত ‘২য় ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন মাইগ্রেশন লিঙ্গুইস্টিক্স’-এ তাঁর গবেষণা উপস্থাপন করেন। সুইজারল্যান্ড, ফিনল্যান্ড ও ইতালিতে সফল উপস্থাপনার পর ফিলিপাইন হলো তাঁর বিদেশে চতুর্থ আন্তর্জাতিক অঙ্গন।
উপস্থাপিত গবেষণার মূল বিষয়
এই সম্মেলনে তিনি উপস্থাপন করেন তাঁর গবেষণার গুরুত্বপূর্ণ অংশ—
“স্বামীর বহির্গমন কি নারীর স্বায়ত্তশাসনে প্রভাব ফেলে? গ্রামীণ ভারতের প্রমাণভিত্তিক বিশ্লেষ —কোচবিহার জেলার উপর ভিত্তিক গবেষণা”।
গবেষণায় উঠে এসেছে—
- গ্রামীণ নারীর স্বায়ত্তশাসন
- স্বামীর অভিবাসনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব
- স্বাস্থ্যসেবা ব্যবহারের ধরণ
- গ্রামাঞ্চলে বিদ্যমান সামাজিক–অর্থনৈতিক বৈষম্য
- ভবিষ্যৎ নীতি–নির্ধারণে গবেষণা–তথ্যের গুরুত্ব
গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি
এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদানের জন্য তিনি ভারতের বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (CSIR) থেকে Foreign Travel Grant পেয়েছেন—যা তাঁর গবেষণার মান ও গুরুত্বকে আরও একবার স্বীকৃতি দিয়েছে।
উপস্থাপনার শেষে বিভিন্ন দেশের গবেষক, অধ্যাপক ও অংশগ্রহণকারীরা তাঁর কাজের প্রশংসা করেন। গবেষণার নীতি–প্রাসঙ্গিক দিকগুলোও বিশেষভাবে উল্লেখ করেন তাঁরা।
তত্ত্বাবধায়ক ও শিক্ষকদলের মন্তব্য
তাঁর পিএইচডি তত্ত্বাবধায়ক ড. সঞ্জিত সরকার সামাজিক মাধ্যমে লেখেন—
“মোসলেমের নিষ্ঠা, পরিশ্রম এবং গবেষণার গভীরতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মান অনেকগুণ বৃদ্ধি করেছে।”
কলেজ জীবনের অধ্যাপক ও পথপ্রদর্শক ড. নজরুল ইসলাম (সহযোগী অধ্যাপক, কুচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়) বলেন—
“মোসলেমের অধ্যবসায় সকল শিক্ষার্থীর জন্য অনুপ্রেরণা।”
নিজের অনুভূতি জানালেন গবেষক
নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে মোসলেম হোসেন বলেন—
“সুইজারল্যান্ড, ফিনল্যান্ড ও ইতালির পর ফিলিপাইনে চতুর্থ আন্তর্জাতিক উপস্থাপনা করতে পারা আমার জন্য গর্বের। কোচবিহারের মতো আমার নিজের জেলার সমস্যা ও বাস্তবতাকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরতে পারা আমার কাছে দায়িত্ব ও আনন্দ—দুটোই।”
স্থানীয় গবেষণা অগ্রযাত্রায় নতুন অধ্যায়
স্থানীয় গবেষণা ও আন্তর্জাতিক একাডেমিক অঙ্গনে মোসলেম হোসেনের এই সাফল্যকে কোচবিহার ও উত্তরবঙ্গের গবেষণা উন্নয়নের পথে একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায় হিসেবে দেখা হচ্ছে।














