Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- খড়গপুর IIT-তে পরপর ছাত্রমৃত্যু ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য। গত সাত মাসে পাঁচ পড়ুয়ার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। এই প্রেক্ষিতে দেশের শীর্ষ আদালত সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিতভাবে হস্তক্ষেপ করেছে। বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বর্ষীয়ান আইনজীবী অপর্ণা ভাটকে আদালত বন্ধু হিসেবে নিয়োগ করেছেন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
মঙ্গলবার আদালতে সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ স্পষ্ট প্রশ্ন তোলে—
‘কোনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যদি অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটে, তারা কি সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানায় বা FIR দায়ের করে?’
এর আগে মার্চ মাসেই সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে FIR দায়ের করা বাধ্যতামূলক। আদালতের পর্যবেক্ষণ, অনেক প্রতিষ্ঠান সেই নির্দেশ যথাযথভাবে মানছে না। যদি নির্দেশ না মানা হয়, আদালত অবমাননার প্রক্রিয়া শুরু করা হতে পারে বলে সতর্ক করেছে শীর্ষ আদালত। এই নির্দেশ পালিত হচ্ছে কি না, তা নিয়ে তথ্য সংগ্রহের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আদালত বন্ধুকে।
একের পর এক মৃত্যুতে উদ্বেগ
সাম্প্রতিক সময়ে IIT খড়গপুরে যেসব ঘটনা ঘটেছে—
৪ মে: সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আসিফ কামার ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার।
২১ এপ্রিল: জগদীশচন্দ্র বসু হলে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় অনিকেত ওয়াকরকে (গোন্ডিয়া, মহারাষ্ট্র)।
১২ জানুয়ারি: আজাদ হল থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র শাওন মালিকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার।
গত সপ্তাহে: রাজেন্দ্র প্রসাদ হল থেকে উদ্ধার ঋতম মণ্ডলের ঝুলন্ত দেহ (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, চতুর্থ বর্ষ)। পরিবারের সূত্রে জানা গেছে, ফোনে কথা কাটাকাটির পর থেকেই যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না।
মঙ্গলবার রাত: নেহরু হলে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র চন্দ্রদীপ পাওয়ারের মৃত্যু। ওষুধ খাওয়ার সময় ট্যাবলেট শ্বাসনালিতে আটকে যায়। BC রায় টেকনোলজি হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা CPR দিয়ে ওষুধ বের করেন, তবু হৃদযন্ত্র কাজ শুরু করেনি। রাত ১১টার পর তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
তদন্ত শুরু, প্রশাসনিক দায়বদ্ধতার দাবি
পুলিশ প্রতিটি ঘটনার ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে এবং তদন্ত চালাচ্ছে। তবুও পরপর এই ধরনের ঘটনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছাত্রছাত্রীদের মানসিক স্বাস্থ্য, রেসিডেন্সিয়াল হলগুলির নিরাপত্তা ও কাউন্সেলিং ব্যবস্থা আরও জোরদার করা প্রয়োজন।
শীর্ষ আদালতের হস্তক্ষেপের ফলে এই ঘটনাগুলির তদন্ত ও প্রশাসনিক দায়বদ্ধতার প্রশ্নে নতুন দিগন্ত খুলবে বলে আশা করছেন শিক্ষাজগতের অনেকেই। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে FIR দায়েরের বিষয়টি কড়াভাবে কার্যকর হবে কি না, সে দিকেও নজর থাকছে সবার।
আরও পড়ুন:- রান্না করার ফলে মহিলাদের বাড়ছে ফুসফুস ক্যানসারের ঝুঁকি ! বলছে গবেষণা
আরও পড়ুন:- 2026 আসলে দিল্লি দখলের প্রস্তুতি, মোদি সরকারকে উৎখাতের বার্তা মমতার