Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- গাজায় সাম্প্রতিক অতীতের সবচেয়ে বড় হামলা চালাল ইজরায়েল। মঙ্গলবার ভোরে একের পর এক মিসাইলের বিকট শব্দে কেঁপে উঠল গাজা। যুদ্ধবিরতি নস্যাৎ করে আকাশ ঢাকল ইজরায়েলি বোমারু বিমানে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১০০ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। গাজা সিটি, দেইর আল-বালাহ, খান ইউনিস এবং রাফাহ সহ একাধিক স্থানে এই হামলা চালানো হয়।
যুদ্ধবিরতি চুক্তির লঙ্ঘন
মঙ্গলবার ভোরের এই হামলা যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির সম্পূর্ণ লঙ্ঘন, তা বলাই বাহুল্য। সিরিয়াল বোমাবর্ষণে ঘুমের মধ্যেই মৃত্যু হল প্রায় ১০০ গাজাবাসীর। প্যালেস্তাইনের হাসপাতাল-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অগুনতি জখমের ভিড়।
স্বাস্থ্য়কর্মীরা বলছেন, নিহতদের বেশিরভাগই শিশু। কারণ, মূলত লোকালয় এলাকায় এই বোমাবর্ষণ করা হয়েছে। আর তার ফলে তাসের ঘরের মতো ধসে পড়েছে একের পর এক বাড়ি। ধ্বংসস্তূপের নিচে হারিয়েছে নিষ্পাপ প্রাণ। সব মিলিয়ে মঙ্গলবার ভোরে এক নারকীয় পরিস্থিতি তৈরি হল গাজায়।
আরও পড়ুন:- হঠাত্ সোনা ও মিউচুয়াল ফান্ড থেকে টাকা তুলে নিচ্ছে লোকে, কী ঘটবে?
জানত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
হামলা শুরুর আগেই পুরো ব্যাপারটাই জানত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গাজায় যখন একের পর এক বোমারু বিমান তান্ডব চালাচ্ছে, ঠিক সেই সময়েই হোয়াইট হাউসের একজন মুখপাত্র এমনটাই জানালেন। তাঁর কথায়, হামলা চালানোর আগে ইজরায়েল ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে শলা-পরামর্শ করেছিল। ফক্স নিউজের ‘হ্যানিটি’ অনুষ্ঠানে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট বলেন, ‘আজ রাতে গাজায় হামলার বিষয়ে ইজরায়েলিরা ট্রাম্প প্রশাসন এবং হোয়াইট হাউসের পরামর্শ নিয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হামাস এবং ইরান-সমর্থিত হুথিসহ অন্যান্য গোষ্ঠীদেরও অন্তিম হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন। তিনি সাফ জানিয়েছেন, ‘যেকোনও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ করলেই তার ‘চরম মূল্য দিতে হবে’।
গত জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতি চুক্তি
গাজায় গত জানুয়ারিতে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী ঠিক ছিল যে, হামাসকে ৫৯ জন ইজরায়েলি যুদ্ধবন্দীকে ছেড়ে দিতে হবে। এদিকে হামাস একে একে, অল্প সংখ্যক যুদ্ধবন্দীদের ছাড়ছিল। তবে ইজরায়েল তো বটেই, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও চাইছিল যাতে একসঙ্গে সমস্ত যুদ্ধবন্দীদের ছেড়ে দেয় হামাস। কিন্তু সেই দাবিতে কর্ণপাত করেনি হামাস। ফলে পুরো আলোচনাটাই কার্যত ব্যর্থ হয়ে যায়। সেই প্রেক্ষাপটেই ইজরায়েল এই হামলা চালাল বলে মনে করা হচ্ছে।
ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দফতর বলছে, হামাস বারবার যুদ্ধবন্দীদের ছাড়তে অস্বীকার করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতা সত্ত্বেও এমন পরিস্থিতি হয়ে আছে।
এদিকে হামাসের এক প্রতিনিধির পাল্টা দাবি, ইজরায়েলই একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতি বাতিলের চেষ্টা করছে। তাঁর পাল্টা হুঁশিয়ারি, এর ফলে পরিস্থিতি আরও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর প্রায় ২,০০০ প্যালেস্তাইনের বন্দীর বিনিময়ে ৩৩ জন ইজরায়েলি এবং ৫ জন থাই যুদ্ধবন্দী মুক্তি পান।
ইজরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি
যদিও ইজরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি, হামাস কমান্ডারদের বাড়ি এবং তাদের ঘাঁটি লক্ষ্য করেই হামলা চালানো হয়েছে। তবে, প্যালেস্তাইনের চিকিৎসক এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, গাজা শহরের একটি বড় বিল্ডিং এবং দেইর আল-বালাহতে লোকালয়ের বাড়িঘর বিমান হামলায় গুঁড়িয়ে গিয়েছে। ইজরায়েল যে শুধুমাত্র হামাসের ঘাঁটিতেই হামলা চালিয়েছে, সেই দাবি নস্যাৎ করছেন তাঁরা।
প্যালেস্তাইনের স্বাস্থ্য মন্ত্রক বলছে, গাজার হাসপাতাল ব্যবস্থা এমনিতেই দুর্বল। তার মধ্যে একসঙ্গে এত হতাহতকে সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
আরও পড়ুন:- ফাইন বাড়ল ট্র্যাফিকে, কোন আইন ভাঙলে কত জরিমানা? জেনে নিন
আরও পড়ুন:- টুপিতে ‘804’ নম্বর থাকার কারণে কড়া শাস্তির মুখে পাক ক্রিকেটার, জানুন এর পিছনে কারণ কি ?