গীতা নাকি বেদ , কোনটি হিন্দুদের কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ? জানুন কাহিনী

By Bangla News Dunia Desk - Pallab

Published on:

Bangla News Dunia , পল্লব চক্রবর্তী : সৃষ্টির আদি থেকে বেদ প্রধান ধর্মগ্রন্থ। কিন্তু বর্তমানে গীতার গ্রহণযোগ্যতা বেশি। কারণ গীতা, বেদ অপেক্ষা সহজবোধ্য। বেদ-র বাংলা অনুবাদ দুর্লভ। সেক্ষেত্রে, গীতার বঙ্গানুবাদ অত্যন্ত সুলভ। গীতার জ্ঞান বর্তমান জীবন ধারায় সহজে উপলব্ধি করা যায়। তাই বেদ আক্ষরিক ভাবে প্রধান ধর্মগ্রন্থ হলেও, সহজবোধ্যতার কারণে গীতা হিন্দুদের প্রতিদিনের কাজে প্রধান ধর্মগ্রন্থেে পরিণত হয়েছে।

হিন্দুধর্মের দুই শ্রেণির গ্রন্থ আছে — শ্রুতি ও স্মৃতি।

শ্রুতি : ‘শ্রুতি’ শব্দের অর্থ— যা শ্রবণ করা যায় এবং যা উপলব্ধি করা যায়। শ্রুতি হিন্দুদের সবচেয়ে প্রাচীন ধর্মগ্রন্থ। শ্রুতিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়; যথা — ১. বেদ, ২. উপনিষদ।

স্মৃতি : ‘স্মৃতি’ শব্দের অর্থ— যা মনে রাখা হয়। শ্রুতির মত স্মৃতি অত প্রাচীন গ্রন্থ নয়। ‘স্মৃতি’কে
ঐশীগ্রন্থ হিসেবেও বিবেচনা করা হয় না। তবুও আজ হিন্দুদের মধ্যে ‘স্মৃতি’ সবচেয়ে জনপ্রিয়। ‘স্মৃতি’ মানুষের লেখা। স্মৃতির মধ্যে হিন্দুর জীবনবিধান ও ধর্মাচরণের পদ্ধতি লিপিবদ্ধ আছে।

১. ‘বেদ’ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত ‘বিদ’ ধাতু থেকে, যার অর্থ জানা। তাই ‘বেদ’ শব্দটির অর্থ ‘সর্বোত্তম জ্ঞান’। বেদকে চারভাগে ভাগ করা হয়; যথা- ঋক্, সাম, যজুঃ, অথর্ব। ঋগ্বেদ, যজুর্বেদ এবং সামবেদ অধিকতর প্রাচীন গ্রন্থ। এদের ‘বিদ্যাত্রয়ী’ বা ‘বিজ্ঞানত্রয়ী’ বলা হয়। এদের মধ্যে ঋগ্বেদ প্রাচীনতম। চতুর্থ বেদ হল অথর্ববেদ যা অপেক্ষাকৃত নবীন। ঋগ্বেদে আছে স্তুতি গান। যজুর্বেদে আছে আত্মত্যাগের নিয়মনীতি। সামবেদ সঙ্গীতমুখর। অথর্ববেদে আছে রোগ নিরাময়ের উপায়।

diana collage

চারটি বেদ কখন লেখা হয়েছে সেই ব্যাপারে সর্বসম্মত কোনও মত নেই। আর্যসমাজের প্রতিষ্ঠাতা দয়ানন্দ স্বামীর মতে, বেদ লেখা হয়েছিল কোটি কোটি বছর আগে। কিছু পণ্ডিতদের মতে, চার হাজার বছরের আগে বেদ লিপিবদ্ধ হয়নি। বেদ হিন্দুদের সবচেয়ে প্রামাণিক ধর্মগ্রন্থ। প্রকৃত হিন্দুত্ব বেদ ছাড়া ভাবা যায় না।

ভাগবদ্গীতা হিন্দুদের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সবচেয়ে পরিচিত ধর্মগ্রন্থ। এটি মহাভারত মহাকাব্যের অংশ। এতে ১৮টি অধ্যায় আছে। গীতা মূলত কৃষ্ণের উপদেশ যা যুদ্ধক্ষেত্রে প্রদত্ত হয়েছিল অর্জুনের উদ্দেশে।

পুরাণও হিন্দুদের বহু পঠিত ধর্মগ্রন্থ। ‘পুরাণ’ কথাটির অর্থ ‘প্রাচীন’। পুরাণে আছে সৃষ্টির ইতিহাস, আর্যদের ইতিহাস, বিভিন্ন স্বর্গীয় আত্মার গল্প। বেদের ঠিক পরেই পুরাণের আবির্ভাব। মহর্ষি বৈশ্য পুরাণকে ১৮টি খণ্ডে বিভক্ত করেছিলেন। পুরাণের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল ভবিষ্যপুরাণ। হিন্দুরা মনে করেন ভবিষ্যপুরাণ স্বয়ং ঈশ্বরের বাণী, মহর্ষি বৈশ্য একে শুধু বিভিন্ন পর্বে বিভাজিত করেছিলেন।

আরো খবর পেতে ফলো করুন আমাদের চ্যানেল

Bangla News Dunia Desk - Pallab

মন্তব্য করুন