ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ছে কলকাতায়। আক্রান্ত ২৯০ জন, কলকাতার এই ৭টি ওয়ার্ড ‘হাই রিস্ক’ চিহ্নিত করল পুরসভা

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:-  প্রতিবারই পুজোর মুখে ডেঙ্গির প্রকোপ বেড়ে যায় কলকাতায়। এবারও ব্যাতিক্রম হল না। শহরে ডেঙ্গি পরিস্থিতি ফের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। কলকাতা পুরসভা জানিয়েছে, চলতি বছরে জানুয়ারি থেকে আক্রান্তের সংখ্যা অনুযায়ী অন্তত ৭টি ওয়ার্ডকে ডেঙ্গি-ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বালিগঞ্জের সানি পার্ক ও কুইন্স পার্ক, লেক গার্ডেন, তপসিয়া, পিকনিক গার্ডেন, খিদিরপুর, যোধপুর পার্ক এবং ভবানীপুরের কিছু অংশ।

পুরসভা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত ওয়ার্ডগুলো হলো-৬৬, ৬৭, ৬৯, ৭০, ৭৭, ৯৩ এবং ১০৮। এই এলাকাগুলিতে একাধিক সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। মনে করা হচ্ছে এই এলাকাগুলিতে ডেঙ্গির বাহক মশার প্রজননের এলাকা সক্রিয় রয়েছে।

মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা 
অগাস্ট মাসেই শহরে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে অন্তত দুজনের মৃত্যু হয়েছে। বালিগঞ্জ সানি পার্কের বাসিন্দা স্বরূপ মুখার্জি (৭৫) ৯ অগাস্ট জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপর বেহালার গাবতলা লেনের বাসিন্দা অরিজিৎ দাস (৩৫) ডেঙ্গিতে প্রাণ হারান। এর আগে, ২১ জুন দমদম ক্যান্টনমেন্টের ১৩ বছরের কিশোরী সরোণী ব্যানার্জির মৃত্যু ঘটে।

পুরসভার হিসেবে, জানুয়ারি থেকে কলকাতায় এখন পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন অন্তত ২৯০ জন। পাশাপাশি বিধাননগরে ৯১ জন, হাওড়ায় ১৪০ জন এবং নিউ টাউনে ১১ জন সংক্রমিত হয়েছেন।

মশার বংশবৃদ্ধি রুখতে পদক্ষেপ
কলকাতা পুরসভার ‘ভেক্টর কন্ট্রোল’ দল প্রতিনিয়ত আক্রান্ত পাড়াগুলোতে টহল দিচ্ছে। প্রতি ২-৩ দিন অন্তর তারা সম্ভাব্য প্রজনন ক্ষেত্র খুঁজে বের করে পরিষ্কার করছে। কিন্তু সানি পার্কের এক বাসিন্দা জানান, এলাকার নির্মীয়মান বিল্ডিংগুলিতে জমে থাকা জলই মশার প্রজননের বড় উৎস।

বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণ চক্রবর্তী অভিযোগ করেছেন, সল্টলেকের ফাঁকা জমিতে অবৈধভাবে বর্জ্য ফেলার কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। হাওড়ার পুরসভা ইতিমধ্যেই বস্তি এলাকায় পাত্র ঢাকতে কাপড় ও মশারি বিলি শুরু করেছে।

বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, জ্বর হলেই গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। যাদের ঠান্ডা-কাশির মতো সাধারণ ভাইরাল লক্ষণ নেই, অথচ টানা কয়েকদিন ধরে জ্বর, শরীরে ব্যথা বা শীত শীত ভাব থাকছে, তাঁদের অবশ্যই ডেঙ্গি পরীক্ষা করাতে হবে।

একজন পতঙ্গবিদ জানান, যে কোনও ছোট-বড় ফেলে দেওয়া পাত্রে জমে থাকা জল এডিস ইজিপ্টি মশার প্রজননের ক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে। যা ডেঙ্গির প্রধান বাহক।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রশাসনের উদ্যোগ যথেষ্ট হলেও সাধারণ মানুষকেও সতর্ক হতে হবে। বাড়ির চারপাশে জমে থাকা জল নিয়মিত ফেলে দেওয়া, ফুলদানি ও টবের জল বদলানো এবং মশারি ব্যবহার করাই ডেঙ্গি প্রতিরোধের মূল চাবিকাঠি।

আরও পড়ুন:- দেশে বিপদের মুখে মধ্যবিত্তরা, বিশেষজ্ঞরা কেন এমন আশংকা করছেন ? জানুন

আরও পড়ুন:- ‘প্রমাণ দিন, না হলে ক্ষমা চান’, রাহুলকে ৭ দিন সময় কমিশনের

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন