Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- সোমবার ভোরে ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল দিল্লি-সহ ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিয়ন। এর উৎসস্থল ছিল দিল্লির ধৌলাকুঁয়ায়, মাটি থেকে ৫ কিলোমিটার গভীরে, জানিয়েছে ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি। ভোর ৫টা ৩৬ মিনিটে অনুভূত হওয়া এই ভূমিকম্পের জন্য আতঙ্কে বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তায় এসেছিলেন নয়া দিল্লি, নয়ডা, গ্রেটার নয়ডার বাসিন্দাদের অনেকেই।
রিখটার স্কেলে এই কম্পনের মাত্রা ছিল ৪, যা মাঝারি ক্ষমতাসম্পন্ন। কিন্তু তা সত্ত্বেও এই কম্পন জোরালো ভাবে অনুভূত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের কথায়, এর অন্যতম কারণ কম্পনের উৎসস্থল মাটি থেকে খুব একটা গভীরে ছিল না। তা ছিল জনবহুল এলাকার খুবই কাছে। শহরের মধ্যে উৎসস্থল হওয়ার কারণে আরও বেশি করে কম্পন অনুভূত হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। দিল্লি সিসমিক জোন (ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা) IV-এর মধ্যে পড়ে (মাঝারি থেকে শক্তিশালী ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা)। দিল্লির ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর নেই। পরিস্থিতির উপরে ক্রমাগত নজর রেখে চলছেন সিসমোলজিস্টরা।
আরও পড়ুন:- চালকের ঘুম তাড়াতে সেফটি ডিভাইসের পরামর্শ পুলিশের, জানতে বিস্তারিত পড়ুন
দিল্লির ভূমিকম্পের ঘটনায় কেন এত জোরে কম্পন অনুভূত হলো?
এই প্রশ্নের জবাবে বেশ কিছু কারণ খুঁজে পেয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এই কারণগুলির মধ্যে অন্যতম
> দিল্লির মধ্যে উৎসস্থল: ভূমিকম্পের উৎসস্থল শহরের মধ্যেই। ফলে এর ফলে তৈরি হওয়া তরঙ্গ খুব শক্তিশালী ভাবে অনুভূত হয়েছে। মাটির অগভীরে তা ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ খুব বেশি ছিল না।
>কম্পনের উৎসস্থল খুব গভীরে নয়: এই কম্পনটির উৎসস্থল ভূপৃষ্ঠ থেকে অগভীরে। এর ফলে রিখটার স্কেলে মাত্রা ৪ থাকলেও কম্পন গভীর ভাবে অনুভূত হয়েছিল।
> শহরের পরিকাঠামো: দিল্লি, নয়ডা, গাজিয়াবাদে একাধিক বহুতল রয়েছে। উচ্চতার কারণে এই বহুতল আবাসনগুলিতে কম্পন্ন অপেক্ষাকৃত বেশ অনুভূত হয়েছে।
>দিল্লির কিছু এলাকায় নরম অ্যালুভিয়াল মাটি রয়েছে যা কম্পনের তরঙ্গ ছড়িয়ে দেয় এবং সেই কারণে আরও বেশি করে কম্পন অনুভূত হয়েছে।
কেন বারবার ভূমিকম্প দিল্লিতে?
ভূ-বৈজ্ঞানিকদের মতে, দিল্লির ভৌগলিক অবস্থান এমন এক জায়গায় যা মহেন্দ্রগড়-দেরাদুন চ্যুতিরেখার খুবই কাছাকাছি অবস্থিত। হিমালয়ান রেঞ্জের থেকেও এর দূরত্ব মাত্র ২০০ থেকে ৩০০ কিলোমিটার। ইন্ডিয়ান ও ইউরেশিয়ান টেকটোনিক প্লেটের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে তৈরি হয়েছিল হিমালয় পর্বত। এই দুই পাতের মধ্যে সংঘর্ষ এখনও ঘটে চলেছে। ফলে প্রাই সেখানে কম্পন অনুভূত হয়।
কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?
ভূবিজ্ঞানী সুজীব কর বলেন, ‘দিল্লির ভূমিকম্পের স্থায়িত্ব ছিল প্রায় ৩২ সেকেন্ড এবং তার উৎসস্থল ছিল দিল্লি শৈলশিরার উপরে। আর এই কারণের জন্য কম্পন এত তীব্র ভাবে অনুভূত হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, গত ২৩ জানুয়ারি দিল্লি ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় একই ভাবে প্রবল কম্পন অনুভূত হয়েছিল। সেই কম্পনের উৎসস্থল ছিল চিনের জিনজিয়াং প্রদেশে। তার দু’সপ্তাহ আগে ১১ জানুয়ারি দিল্লি ও তার লাগোয়া এলাকা আফগানিস্তানের ভূমিকম্পে কেঁপে উঠে।
উল্লেখ্য, সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দিল্লির ভূমিকম্পের আড়াই ঘণ্টার পরে কম্পন অনুভূত হয় বিহারের সিওয়ানে। সোমবার সকাল ৮টা ২ মিনিটে সিওয়ানে ভূমিকম্প হয়। ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি সূত্রে খবর, রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৪। মাটির উপরিভাগ থেকে ১০ কিলোমিটার নীচে ছিল কম্পনের উৎসস্থল।
আরও পড়ুন:- কোটি কোটি মানুষের মহাকুম্ভ ‘ফালতু’: লালুপ্রসাদ
আরও পড়ুন:- কেন্দ্র দেয়নি, সুন্দরবনে নদী বাঁধ সংস্কারে রাজ্যের বরাদ্দ 200 কোটি ! জানুন বিস্তারিত