Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- পুলিশের সামনে মামলার পর মামলা আসে, কিন্তু এমন ঘটনা? শনিবার কানপুরের কল্যাণপুর থানায় ঘটল এক বিরল ও মজার ঘটনা, যা উপস্থিত সকলকে চমকে দেওয়ার পাশাপাশি হাসির খোরাকও জুগিয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে কল্যাণপুর থানার ‘সমাধান দিবস’-এ। অভিযোগকারীরা ছিলেন দুই মহিলা— চন্দ্রা দেবী ও মীনা কুমারী। দু’জনেই দাবি করেন, একটি ছাগলের বাচ্চা তাঁদের ছাগলেরই সন্তান। কিন্তু ছাগলের বাচ্চাটির রঙ সাদা ও কালো— একেবারে মধ্যম পন্থা! চন্দ্রার ছাগল সাদা, মীনার ছাগল কালো। কে আসল মা?
বিতর্ক চরমে ওঠে। ফলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুই মহিলাকে ছাগল ও ছাগলের বাচ্চাসহ থানায় নিয়ে আসে। থানার ইন্সপেক্টর সুবোধ কুমার এই অদ্ভুত ‘মা-সন্তান মামলা’ দেখে সিদ্ধান্ত নেন— যেহেতু কথায় সমাধান হচ্ছে না, তখন পশুর স্বাভাবিক প্রবৃত্তিকেই বিচারকের আসনে বসানো যাক!
পরিকল্পনা অনুযায়ী, দুই ছাগলকে আলাদা জায়গায় বেঁধে রাখা হয় এবং তাদের বাচ্চাটিকে মুক্ত করা হয়। সে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরির পর সোজা গিয়ে সাদা ছাগলের কাছে দাঁড়িয়ে পড়ে এবং দুধ খেতে শুরু করে। মুহূর্তের মধ্যে স্পষ্ট হয়ে যায় আসল মা কে। উপস্থিত জনতা হাততালি দিয়ে ওঠে।
এই ঘটনার পর মীনা কুমারী নিজের ভুল মেনে নেন। তিনি জানান, তাঁর ছাগলের বাচ্চাও কালো-সাদা ছিল, কয়েকদিন আগে হারিয়ে যায়, তাই ভুল করে এই ছাগলের বাচ্চাটিকেই নিজের বলে ধরে নেন। চন্দ্রা দেবীও উদার মনোভাব দেখিয়ে বলেন, এমন পরিস্থিতিতে তিনি থাকলেও হয়তো এমনটাই করতেন।
ইন্সপেক্টর সুধীর কুমার পরে জানান, “বাচ্চা হোক মানুষ বা পশু, সে তার মাকে চিনতে পারে— এই সহজ সত্যটিই কাজে লেগেছে। কথার জট ছাড়াতে না পেরে এই পদ্ধতি নেওয়া হয়েছিল, এবং ফল মিলেছে দুর্দান্ত।”
থানায় এই ঘটনাটি রেকর্ড করা হয়নি, কারণ এটি কোনো আইনি মামলা ছিল না। তবে উপস্থিত প্রত্যেকেই এই মানবিক ও বুদ্ধিদীপ্ত সমাধানে খুশি হন এবং মুখে হাসি নিয়ে ফিরে যান।
এ যেন বাস্তবের ‘সলোমনের বিচার’ – যেখানে যুক্তি, বুদ্ধি আর সামান্য মানবিক অনুভবই হয়ে উঠল বিচারের চাবিকাঠি।
আরও পড়ুন:- এটাই পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্গম জায়গা, যেখানে মানুষ পৌঁছলে আর ফিরতে পারবে না