দু’মুঠো চালও এখন সোনা! চালের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ার কারণ কি ?

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- ভেতো ভাঙালির নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে চাল। গত ১৫ দিনে অস্বাভাবিক বেড়েছে চালের দাম। তার ফলে খাবি খেতে হচ্ছে আমবাঙালিকে। মিনিকিট থেকে বাঁশকাঠি, সব চালের দামই কেজিতে ১০-২৫ টাকা বেড়েছে। কম আয়ের মানুষদের অন্যতম ভরসা যে রত্না চাল— তারও দাম কেজিতে ৭ টাকা বেড়েছে। বছরের এই সময়ে ফি–বছরই চালের দাম কিছুটা বাড়ে। কিন্তু স্মরণাতীত কালের মধ্যে চালের দামে এত লম্বা লাফ দেখা যায়নি।

চাল–ব্যবসায়ী এবং চালকল মালিকরা বলছেন, ধানের উৎপাদন কম হওয়ায় চালের জোগান কম। আর তাতেই বেড়েছে দাম। কিন্তু খুচরো ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কৃত্রিম অভাব তৈরি করে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, বর্ধমানে টাস্ক ফোর্সকে বাজারে নামিয়েছে জেলা প্রশাসন। এই অবস্থায় ভিন্‌ রাজ্য থেকে চাল এনে দাম সামাল দেওয়ারও চেষ্টা চলছে। নতুন চাল উঠলে চালের বাজারে স্থিতাবস্থা ফিরতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

বাংলায় প্রায় সব পরিবারেই ভাতের চল, দপুরে তো বটেই, অনেক পরিবারে রাতেও। ফলে রাজ্যে চালের চাহিদা সব সময়েই বেশি। সেই চাল কিনতে এখন বেজায় বেগ পেতে হচ্ছে। দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই যে চাল খেতেন তার থেকে কম দামের চাল কিনছেন। কী ভাবে এত দাম বাড়ল, তা বুঝে উঠতে পারছেন না ছোট ব্যবসায়ীরাও। মধ্যবিত্ত পরিবারে মিনিকিট চালের কদর বেশি।

সেই চালের দাম গত কয়েক দিনে কেজিতে ১০ থেকে ১২ টাকা বেড়েছে। অর্থাৎ ২৬ কেজির এক বস্তায় মিনিকিট চালের দাম বেড়েছে প্রায় ২৫০ টাকা। কয়েক দিন আগেও খুচরো বাজারে মিনিকিট চাল বিক্রি হচ্ছিল ৫০ টাকা কেজি দরে। সেটা এখন অন্তত ৬০ টাকা। সাধারণ রত্না চালের দাম ছিল ৪৩ টাকা প্রতি কেজি, বেড়ে হয়েছে ৫০ টাকা। প্রতি কেজি বাঁশকাঠি চালের দাম ৫৭-৫৮ টাকা থেকে বেড়ে ৭০ ছাড়িয়েছে। গোবিন্দভোগের দাম ছিল ৮৫ টাকা প্রতি কেজি। এখন ১০০ টাকা!

চাল–বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, মাত্র কয়েক দিনে চালের দাম এতটাই বেড়েছে যে খদ্দেরদের জবাব দিতে নাজেহাল হতে হচ্ছে। সবাই এসে জানতে চাইছেন, এত দাম কেন বাড়ছে। অনেকে বিশ্বাসই করতে পারছেন না। বাগুইআটির বাসিন্দা সেবাব্রত সরকার স্থানীয় চাউলপট্টি থেকে বরাবর চাল কেনেন। তিনি বলেন, ‘চাল কিনতে গিয়ে ভাবতে হচ্ছে। কম দামের চাল কিনতে হবে। তবে একটা চালে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি তো, অসুবিধা হবে।’

রাজ্যে চালের সবচেয়ে বেশি জোগান আসে বর্ধমান থেকে। আচমকা দাম বেড়ে যাওয়ায় নড়েচড়ে বসেছে বর্ধমান জেলা প্রশাসন। টাস্ক ফোর্সকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিষয়টি সরেজমিনে খতিয়ে দেখে রিপোর্ট জমা দিতে। বেঙ্গল রাইস মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল মালেক জানিয়েছেন, কিছু দিনের মধ্যে নতুন চাল বাজারে উঠলে এই দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে।

হাবড়া পাইকারি চাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সাগর সাহার বক্তব্য, ‘ধানের উৎপাদন কমেছে বলেই দাম বেড়েছে। কিন্তু কলকাতার বাজারে যে দামে চাল বিক্রি হচ্ছে, দাম অতটা বেশি হওয়ার কথা নয়। তবে আমরা দিল্লি এবং পাঞ্জাব থেকে চাল আনছি। তার ফলে দাম কিছুটা কমছে। মাসখানেকের মধ্যে বাজারে নতুন চাল এলে দাম কমবে।’

আরও পড়ুন:- সামনে এল দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকা, ভারত কত নম্বরে, দেখে নিন

আরও পড়ুন:- কোন খাতে কত টাকা, দেখে নিন রাজ্য বাজেট বরাদ্দের পূর্ণাঙ্গ চিত্র

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন