দোলের আগে শ্রীরামপুরে পূজিত হন মা দুর্গা, জেনে নিন অজানা ইতিহাস

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- দোলের উৎসবে অকাল দুর্গা বা মহিষাসুরমর্দিনীর পুজো হয়ে আসছে শ্রীরামপুরের পঞ্চানন তলায় ৷ 221 বছর ধরে চলে আসছে এই রীতি ৷ শ্রীরামপুরের দে পরিবার এই পুজো শুরু করে। দোলের দিন রাধাকৃষ্ণের বদলে দে পরিবারে দুর্গাপুজোর প্রচলন হয়।

1212 বঙ্গাব্দে শ্রীরামপুরের পঞ্চাননতলায় দোলের দিন মহিষাসুরমর্দিনীর পুজোর প্রচলন করেন ওই পরিবারের দুই সদস্য পুলিনবিহারী দে এবং নগেন্দ্রনাথ দে। জানা যায়, নগেন্দ্রনাথ দে এবং পুলিনবিহারী দে স্বপ্নাদেশে পান। সে সময় থেকে শ্রীরামপুরের পঞ্চানন তলায় এই মহিষাসুরমর্দিনীর পুজোর আয়োজন ৷ তন্ত্র মতে, পুজো করা হয় দেবীকে । বঙ্গদেশে দুর্গাপুজোর সঙ্গে মহিষাসুরমর্দিনীর পুজোর প্রচলন রয়েছে বিভিন্ন জায়গায়। তার জন্য নির্দিষ্ট তিথিও রয়েছে ৷ কিন্তু শ্রীরামপুরের এই মহিষাসুরমর্দিনী পুজো দোলপূর্ণিমা তিথিতে পালন করা হয়।

Dol utsav with Durga puja

দোলে অকাল দুর্গাপুজো

দুর্গাপুজোর মতো কলা বউ স্নান বা বোধন না-হলেও সপ্তমী থেকে দশমী নিয়ম মেনে পালন হয়। আগে মোষ ও ছাগল বলির প্রথা ছিল এই পুজোয়।কালক্রমে তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে ৷ তবে নবমীর দিন মাছ ভোগ দেওয়া হয় মা মহিষমর্দিনীকে। প্রচলিত মত অনুযায়ী, মহিষাসুরমর্দিনী আদতে দুর্গার আর এক রূপ। তবে শ্রীরামপুরের দে পরিবারের পুজোয় দুর্গার দু’পাশে কার্তিক, গণেশ, লক্ষী, সরস্বতীর বদলে থাকেন তাঁর দুই সখী জয়া-বিজয়া। অষ্টমী ও নবমীতে ভোগের আয়োজন করা হয়। বহু মানুষ অকাল দুর্গা দেখতে ভিড় জমান শ্রীরামপুরে ৷

আরও পড়ুন:- মোবাইল গেমে মেতে সন্তান ! ওদিকে বাবা-মায়ের অ্যাকাউন্ট থেকে খোয়া গেল 25 লাখ, বিস্তারিত জানুন

1970 সাল থেকে স্থানীয় শ্রীরামপুর টাউন ক্লাবের পরিচালনায় এই পুজো হচ্ছে । এই দুর্গাপুজো উপলক্ষে অষ্টমীর দিন পংক্তিভোজনে পুজোর ভোগ বিতরণ করা হয়। পুজোর দায়িত্বে থাকা ক্লাবের সদস্য তন্ময় ভট্টাচার্য বলেন, “শ্রীরামপুরের দে পরিবারের দুই সদস্য নগেন্দ্রনাথ দে এবং পুলিনবিহারী দে এই পুজোর প্রতিষ্ঠা করেন বলে লোক মুখে শোনা যায় ৷ প্রথমে এটি পারিবারিক পুজো হিসেবেই হত। পরে বারোয়ারিতে রূপান্তরিত হয়। বর্তমানে শ্রীরামপুর টাউন ক্লাব এই পুজোর পরিচালনা করে । দোলের দিন সপ্তমী ধরে নিয়ে এই পুজো শুরু হয় । চার দিনব্যাপী চলে ৷ অষ্টমীর দিন মহাভোগ ও নবমীর দিন মৎস্য ভোগের আয়োজন করা হয় । দু-তিন হাজার মানুষের ভোগের আয়োজন করা হয়।”

 

 

এই পাড়ার কোন বাড়িতেই রান্না হয় না এই কয়েকটা দিন ৷ এমন কী অতিথিদেরও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। দুর্গার রূপেই মাকে পুজো করা হয় মহিষাসুরমর্দিনী রূপে। ক্লাবের মহিলা সদস্যা দীপ্তি সান্যাল বলেন, “দোলের দিনে আমরা মায়ের পায়ে আবির দিয়ে দোল উৎসব শুরু করি । সকাল থেকেই প্রভাত ফেরির মধ্যে দিয়ে একে অপরের মধ্যে আবির খেলা শুরু হয় ৷”

পুরোহিত ত্যাগী নাথ অঘোর পি বলেন, “কালিকাপুরাণ মতে এই পুজো হয়ে আসছে ৷ তন্ত্র মতে হওয়ায় এখানে আগে বলি প্রথা ছিল। দুর্গাপুজোর রীতিমেনে সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী তিথি না-থাকলেও বিধি মেনে এখানে পূজিতা হন দেবী। পূর্ণিমা তিথিতে এই পুজো শুরু হয়। প্রতিপদ, দ্বিতীয়া ও তৃতীয়া পর্যন্ত চলে । 221 বছর ধরে এই রীতিমেনে আজও পুজো হয়ে আসছে।”

আরও পড়ুন:- স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় হাসপাতাল পরিষেবা না-দিলে কী করবেন ? জানালেন চন্দ্রিমা

আরও পড়ুন:- গ্রীষ্মে প্রচুর পরিমাণে লেবু খান, এই রোগগুলি ছুঁতেও পারবে না

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন