নতুন এই স্কলারশিপে আবেদন করলে প্রতি মাসে পাবেন ₹2000 করে টাকা, জেনে নিন বিস্তারিত

By Bangla News Dunia Desk - Pallab

Published on:

শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার। ৬ থেকে ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে সমগ্র ভারতবর্ষের জুড়ে। এরপরে যারা উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে যান তার জন্য এবার আনা হয়েছে বিশেষ স্কলারশিপ। এর ফলে অর্থনৈতিক কারণে আর কারো পড়াশুনা বন্ধ হবে না। এই স্কলারশিপের মাধ্যমে প্রতি মাসে মাসে টাকা দেওয়া হবে ছাত্র-ছাত্রীদের। অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া মেধাবী পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষায় সহায়তা করতে কেন্দ্রীয় সরকার গত কয়েক বছর ধরে চালু করেছে Central Sector Scholarship (CSS)। ২০০৮ সালে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের উদ্যোগে শুরু হওয়া এই প্রকল্পটি আজও সমানভাবে কার্যকর। প্রচুর ছাত্র ছাত্রী এই স্কলারশিপের মাধ্যমে ভীষণভাবে উপকৃত হয়েছেন। চলতি শিক্ষাবর্ষ ২০২৫-এও আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে এবং হাজার হাজার ছাত্রছাত্রী ইতিমধ্যেই এই বৃত্তির জন্য রেজিস্ট্রেশন করছে। যারা যারা এখনো রেজিস্টার করেননি তারা অতি শীঘ্রই রেজিস্টার করতে পারেন কারণ এই স্কলারশিপে আবেদন করলে আপনি প্রতি মাসে মাসে টাকা পেয়ে যাবেন।

Central Sector Scholarship (CSS) কী?

এই স্কিম মূলত স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পড়ুয়াদের আর্থিক সহায়তা দেওয়ার জন্য। মূলত দেশের দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এই স্কলারশিপ আনা হয়েছে। দেশের প্রত্যন্ত এলাকার বহু প্রতিভাবান ছাত্রছাত্রী অর্থের অভাবে পড়াশোনা বন্ধ করে দেন, তাই মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে পড়াশোনা বন্ধ না করেন তার জন্যই মূলত এই স্কলারশিপ।

উদ্দেশ্য:

  • মেধাবী কিন্তু আর্থিকভাবে দুর্বল ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষা চালিয়ে যেতে সাহায্য করা। এর ফলে তারা তাদের পড়াশোনা শেষ করে নিজের ইচ্ছামত ক্যারিয়ার শুরু করতে পারে।
  • তাদের আত্মনির্ভরশীল করে তোলা। প্রতি মাসে মাসে ব্যাংক একাউন্টে টাকা দেওয়া হয় এর ফলে পড়াশোনা অনেকটাই সাহায্য হয়।
  • দেশের শিক্ষার মান উন্নত করা। এর ফলে সমাজেরও উন্নতি ঘটে।

কারা আবেদন করতে পারবেন?

বয়সসীমা: আবেদনকারীর বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে সকল ছাত্র-ছাত্রীরা এই স্কলারশিপে আবেদন জানাতে পারবেন।

শিক্ষাগত যোগ্যতা:

  • দ্বাদশ শ্রেণিতে স্বীকৃত বোর্ড থেকে ৮০ শতাংশ বা তার বেশি নম্বর পেতে হবে। অর্থাৎ মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এই স্কলারশিপ।
  • স্নাতক স্তরের শিক্ষার্থী হলে মাসে ১,০০০ টাকা বৃত্তি এবং স্নাতকোত্তরের ক্ষেত্রে মাসে ২,০০০ টাকা পাওয়া যাবে।

অর্থনৈতিক শর্ত:

  • আবেদনকারীর পরিবারকে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্ধারিত অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত হতে হবে। অর্থাৎ যারা অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল তারা এই স্কলারশিপের আবেদন জানাতে পারবেন।
  • ইতিমধ্যে যদি অন্য কোনো কেন্দ্রীয় বা রাজ্য বৃত্তি পাওয়া থাকে, তবে এই স্কলারশিপ পাওয়া যাবে না।

এই স্কলারশিপ মূলত স্নাতক স্তর এবং স্নাতক উত্তর স্তরের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য দেওয়া হয়।

বৃত্তির পরিমাণ কত?

  • স্নাতক স্তর: মাসে ১,০০০ টাকা (প্রতি শিক্ষাবর্ষে সর্বোচ্চ ১০ মাস)
  • স্নাতকোত্তর স্তর: মাসে ২,০০০ টাকা (প্রতি শিক্ষাবর্ষে সর্বোচ্চ ১০ মাস)

সর্বাধিক পাঁচ বছর পর্যন্ত বৃত্তি নেওয়া যাবে (কোর্সের মেয়াদের উপর নির্ভর করে)। অর্থাৎ এই স্কলারশিপ এ আবেদন করলে আপনার আর পড়াশোনার সময় অর্থনৈতিক চিন্তাভাবনা করতে হবে না সরকার আপনাকে সমস্ত ভাবে সাহায্য করবে।

আবেদন প্রক্রিয়া কীভাবে করবেন?

আবেদন করতে হলে অনলাইনে যেতে হবে ন্যাশনাল স্কলারশিপ পোর্টাল (NSP)–এ।

অফিসিয়াল ওয়েবসাইট: scholarships.gov.in

আবেদনের ধাপগুলো:

  1. ওয়েবসাইটে গিয়ে নতুন রেজিস্ট্রেশন করুন। রেজিস্ট্রেশন করার সময় অবশ্যই মোবাইল নাম্বার ও ইমেইল আইডি থাকতে হবে।
  2. এরপর আপনার প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্য দিয়ে যেমন- আপনার নাম, ইমেল, মোবাইল নম্বর দিয়ে প্রোফাইল তৈরি করুন।
  3. আধার কার্ড, জন্ম সনদ, শিক্ষাগত যোগ্যতার মার্কশিট, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ডিটেলস ও পরিবারিক আয়ের শংসাপত্র আপলোড করুন।
  4. সব তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করে সাবমিট করুন।
  5. সাবমিশনের পর অ্যাপ্লিকেশন নম্বর সেভ করে রাখুন।

আবেদনের শেষ তারিখ: ৩১ অক্টোবর, ২০২৫

কোন কোন ডকুমেন্টস লাগবে?

এখানে আবেদন করতে হলে আবেদনকারীর অবশ্যই প্রয়োজনীয় পেস্ট কিছু ডকুমেন্টস থাকতে হবে-

  • আবেদনকারীর আধার কার্ড
  • দ্বাদশ শ্রেণির মার্কশিট ও সার্টিফিকেট
  • জন্মতারিখের প্রমাণপত্র হিসেবে অ্যাডমিট কার্ড অথবা বার্থ সার্টিফিকেট
  • আয়ের শংসাপত্র (Income Certificate)
  • ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিবরণ ও প্রথম পাতার জেরক্স
  • কাস্ট সার্টিফিকেট (যদি থাকে), তবে জেনারেল প্রার্থীরাও এখানে আবেদন জানাতে পারবেন।

এই স্কলার্শিপ দেওয়ার পিছনে সরকারের প্রধান উদ্দেশ্য হল অনেক মেধাবী পড়ুয়া অর্থাভাবে উচ্চশিক্ষা চালিয়ে যেতে পারেন না। এর ফলে এই বৃত্তি তাদের পড়াশোনায় সহায়তা করে এবং আর্থিক চাপ কমায়। ফলে ছাত্রছাত্রীরা চাকরির প্রস্তুতি বা গবেষণায় আরও মনোযোগ দিতে পারে। এছাড়াও ছাত্র-ছাত্রীরা নিশ্চিন্তায় তাদের পড়াশুনো চালিয়ে যেতে পারে।

Bangla News Dunia Desk - Pallab

মন্তব্য করুন