নভেম্বরের মধ্যেই চূড়ান্ত হতে পারে ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য চুক্তি (Trade Agreement)। সম্প্রতি ওয়াশিংটনের অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ফলে সম্পর্কের টানাপোড়েন সত্ত্বেও, কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল দাবি করেছেন যে নভেম্বরের মধ্যে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি (BTA) স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি যে পরিস্থিতি শীঘ্রই আবার সঠিক পথে ফিরে আসবে এবং আমরা নভেম্বর বা তার কাছাকাছি সময়ে একটি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করব, যেমনটি ফেব্রুয়ারিতে আমাদের দুই নেতা আলোচনা করেছিলেন।’ এদিন মুম্বাইয়ে বার্ষিক গ্লোবাল ইনভেস্টর কনফারেন্স ২০২৫-এ ভার্চুয়াল ভাষণে পীযূষ গোয়েল এই দাবি করেন। তিনি স্বীকার করেছেন যে “আলোচনায় বাণিজ্য সংক্রান্ত বিষয়গুলিকে ভূ-রাজনৈতিক ইস্যুগুলি ছাড়িয়ে গেছে।” উল্লেখ্য কয়েকদিন আগে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ফক্স নিউজকে বলেছিলেন, ‘দুই দেশ তাদের মতপার্থক্য দূর করবে। কারণ ভারত বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল গণতন্ত্র। তাদের মূল্যবোধ রাশিয়ার চেয়ে আমাদের অনেক কাছাকাছি।’
পীযূষ গোয়েল আরও বলেন যে ভারত সরবরাহ শৃঙ্খলে স্থিতিস্থাপকতা তৈরি এবং অটো এবং ইলেকট্রনিক্সের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে মনোনিবেশ করছে। মন্ত্রী আরও বলেন, ‘যে অস্থির বিশ্ব পরিস্থিতিও সুযোগ নিয়ে আসে, এটি একটি অর্ধ-পূর্ণ গ্লাসের গল্প… বেসরকারি খাতের পাশাপাশি, সরকার দীর্ঘমেয়াদী সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য নিজেদেরকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করছে।’ পীযূষ গোয়েল এদিন অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনার অগ্রগতির দিকেও ইঙ্গিত করেছেন। কারণ ভারত অস্ট্রেলিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, মরিশাস, যুক্তরাজ্যর সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনা একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে প্রবেশ করছে।
উল্লেখ্য, ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মার্চ থেকে পাঁচ দফা আলোচনা করেছে, যার লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বর্তমান ১৯১ বিলিয়ন ডলার থেকে দ্বিগুণ বাড়িয়ে ৫০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি ভারতীয় পণ্যের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। ২৫ শতাংশ পারস্পরিক শুল্ক এবং অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ রাশিয়ান তেল কেনায় জরিমানা হিসেবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে ছাড়যুক্ত অপরিশোধিত তেল কিনে এবং তা প্রক্রিয়াকরণ করে পুনরায় বিক্রি করে রাশিয়ার যুদ্ধ প্রচেষ্টাকে ইন্ধন যোগানোর অভিযোগ তুলেছেন। অন্যদিকে ভারত জাতীয় স্বার্থের বিষয় হিসাবে তার জ্বালানি নীতি বহাল রেখেছে। ট্রাম্প উল্লেখ করেছেন যে ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন এবং চিন সহ অন্যান্য প্রধান অর্থনীতির দেশগুলি মস্কোর বৃহত্তম জ্বালানি ক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে।