নাসা’তে গবেষণার সুযোগ পেলেন বাংলার ইন্দ্রনীল, উচ্ছ্বসিত পরিবার‌

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- অভাবনীয় সাফল্য ৷ নাসার কেনেডি স্পেস রিসার্চ সেন্টারে গবেষণা করার সুযোগ পেল ব্যারাকপুরের মোহনপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা 17 বছরের ইন্দ্রনীল মণ্ডল । কলকাতার লা মার্টিনিয়ার ফর বয়েজ স্কুলের একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া সে । তার এই কৃতিত্বে স্বভাবতই খুশি পরিবার । খুশির ছোঁয়া ইন্দ্রনীলের স্কুলেও ।

কীভাবে মিলল সুযোগ ?

নাসার কেনেডি স্পেস রিসার্চ সেন্টারে প্রতি বছর বিভিন্ন দেশ থেকে বাছাই করা ছাত্রদের গবেষণার কাজে অংশগ্রহণ করার অনুমতি মেলে । তার জন্য প্রতি বছর একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় । সেই প্রতিযোগিতার একটি নির্দিষ্ট থিম বা বিষয় দেওয়া থাকে । সেই বিষয়ের উপরে একটি প্রোপোজ়াল লিখে জমা দিতে হয় । সেই প্রোপোজালের উপরে ভিত্তি করে প্রাথমিক পর্যায়ের নির্বাচন করা হয় ।

মোট চারটি পর্যায়ে চলে নির্বাচন । প্রথমে রিজিওনাল লেভেলে রাজ্যের স্কুলগুলির মধ্যে থেকে সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থীকে বেছে নেওয়া হয় । এরপরে ন্যাশনাল লেভেলে দেশের মধ্যে সবচেয়ে সেরাকে বেছে নিয়ে চলে এশিয়ান লেভেলের নির্বাচন । সবশেষে ইন্টারন্যাশনাল লেভেলে ফলাফলের ভিত্তিতে কেনেডি রিসার্চ সেন্টারে স্পেস ডিজাইন নিয়ে গবেষণার অনুমতি মেলে ।

Indranil Mandal

কলকাতার লা মার্টিনিয়ার ফর বয়েজ স্কুলের ছাত্র ইন্দ্রনীল 

কী নিয়ে রিসার্চ ইন্দ্রনীলের ?

এ বছর প্রতিযোগিতার বিষয় ছিল মঙ্গল গ্রহ । 2070 সালের মধ্যে মঙ্গল গ্রহকে মানুষের বসবাসযোগ্য করা যায় কি না সেই নিয়েই গবেষণা ইন্দ্রনীল মণ্ডলের । দিন-রাত এক করে এই প্রোজেক্টে কাজ করার সুযোগ পেতে পরিশ্রম করে গিয়েছে সে । আর তাতেই মিলেছে সাফল্য । এ দেশের বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল । তাদের মধ্যে এ বছরে একমাত্র ইন্দ্রনীলই এই সাফল্য পেয়েছে ।

Indranil Mandal

ইন্দ্রনীল মণ্ডলের পুরস্কার 

এই সাফল্যে কী বলছে ইন্দ্রনীল ?

এই প্রকল্পে সুযোগ পাওয়ার কৃতিত্ব পরিবারকেই দিয়েছে ইন্দ্রনীল । বিশেষ করে মায়ের প্রেরণার কথা বারবারই উঠে এসেছে তার গলায় । এছাড়া নিজের স্কুল থেকেও যথেষ্ট সাহায্য পেয়েছে বলে জানিয়েছে সে । ডেটা সায়েন্স এবং রকেট সায়েন্সের প্রতি ইন্দ্রনীলের আগ্রহ রয়েছে ছোট থেকেই । নাসা এবং স্পেস-এক্সের মতো সংস্থা বরাবরই প্রেরণা জুগিয়েছে তাকে । তাই প্রকল্পে সুযোগ পাওয়ার পরে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত এবং খুশি ইন্দ্রনীল । বারবার তা ঝরে পড়েছে মেধাবী এই পড়ুয়ার কথায় ।

ইন্দ্রনীল মণ্ডল বলে, “মায়ের জন্য এতটা করতে পেরেছি ৷ নাসার গবেষণার সুযোগ পাওয়ার জন্য অনেক পরিশ্রম করেছি ৷ পরিবার সবসময় পাশে ছিল ৷ স্কুলও খুব সাহায্য করেছে ৷ তাই আমি আজ এই জায়গায় পৌঁছতে পেরেছি ৷”

ইন্দ্রনীলের সাফল্যে কী বলছে পরিবার ?

ছেলের এই অভাবনীয় সাফল্যে যারপরনাই খুশি ইন্দ্রনীলের মা জ‍্যোতি মণ্ডল । তিনি বলেন, “নাসার রিসার্চ সেন্টারে ছেলে গবেষণার সুযোগ পেয়েছে এটা আমাদের কাছে গর্বের বিষয় । খুব ভালো লাগছে । এর জন্য ছেলে প্রচুর পরিশ্রম করেছে । সেই পরিশ্রমেরই ফল পেয়েছে । যেহেতু এটা নাসার বিষয় । সেহেতু এদের টাইম জোনও ছিল আলাদা । ছেলেকে দেখেছি সারারাত ওদের প্রোজেক্ট নিয়ে কাজ করতে । আবার সকালে স্কুলেও গিয়েছে । আন্তর্জাতিক লেভেলে পৌঁছনোর জন্য খুব খেটেছে । এজন্য আরও বেশি ভালো লাগছে । 2070 সালের মধ্যে মঙ্গল গ্রহে কীভাবে মানুষের বসবাসের যোগ্য করে তোলা যায় সেটা নিয়ে নিরন্তন গবেষণা চলছে বৈজ্ঞানিকদের মধ্যে । ছেলেও সেই গবেষণায় অংশ নেবে । ও’কে শুভেচ্ছা জানান সকলে । যাতে সাফল্যের শিখরে পৌঁছতে পারে‌‌‌‌ ।”

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন