Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- মিসাইল টেস্ট করতে গিয়ে নিজেরাই ল্যাজেগোবরে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। তারা একটা মিসাইলেরই সফল পরীক্ষা চালাতে পারে না। তবে, ভারতকে নানা ভাবে হুমকি দেয়। সম্প্রতি, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর করুণ পরিস্থিতির আর একটি ছবি সামনে এসেছে। শাহিন-৩ মিসাইল টেস্ট করতে গিয়ে তারা ব্যর্থ হয়েছে। মিসাইলটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে পাঞ্জাব প্রদেশের ডেরা গাজি খানের একটি পারমাণবিক কেন্দ্রের কাছে গিয়ে পড়ে। এর ধ্বংসাবশেষ বালুচিস্তানের ডেরা বুগতি জেলায় পড়ে। লোকলয়ের খুব কাছেই মিসাইলটির ধ্বংসাবশেষ পড়েছে। একটু এদিক ওদিক হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত।
এই ঘটনা কেবল পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতা নিয়েই প্রশ্ন তোলেনি, বরং বালুচিস্তানের জনগণের নিরাপত্তাও ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। ২০২৫ সালের ২২ জুলাই এই দুর্ঘটনার পর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ওই এলাকার ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়, মিডিয়ায় সম্প্রচার বন্ধ করে দেয় এবং সাধারণ মানুষকে ঘরে থাকতে বলে।
শাহিন-৩ কী?
শাহিন-৩ পাকিস্তানের সবচেয়ে শক্তিশালী মিসাইলগুলির মধ্যে একটি। এটি একটি ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ব্যালিস্টিক মিসাইল। যা ২৭৫০ কিলোমিটার দূরে থাকা লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। অর্থাৎ, এটি দিল্লি, মুম্বাই এবং বেঙ্গালুরুর মতো ভারতের অনেক শহরে পৌঁছতে পারে।
পরমাণু অস্ত্র বহন করার ক্ষমতা: এটি ২০-২৫ থেকে ৩০০-৫০০ কিলোটন পর্যন্ত পরমাণু অস্ত্র বহন করতে পারে।
কঠিন জ্বালানি: এটি কঠিন জ্বালানিতে চলে, যা এটিকে দ্রুত উৎক্ষেপণে সাহায্য করে।
চিনের সাহায্য: পাকিস্তান ২০০০ সালে চিনের প্রযুক্তিগত সহায়তায় এই মিসাইল তৈরি শুরু করে। পাকিস্তান এটিকে তার প্রতিরক্ষা কৌশলের একটি অংশ বলে মনে করে, বিশেষ করে ভারতের সামরিক শক্তির জবাব দেওয়ার জন্য। কিন্তু বারবার পরীক্ষামূলক ব্যর্থতা এর নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
২২ জুলাই কী ঘটেছিল?
২২ জুলাই পাকিস্তান ডেরা গাজি খানের রাখি এলাকা থেকে শাহিন-৩ মিসাইল উৎক্ষেপণ করা হয়। কিন্তু মিসাইলটি তার লক্ষ্যবস্তু থেকে বিচ্যুত হয়। এটি বালুচিস্তানের ডেরা বুগতি জেলার ম্যাট এলাকায় পড়ে। এই স্থানটি লোকালয় থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে ছিল। লুপ সেহরানি লেভি স্টেশনের কাছে গ্রাপান উপত্যকায় ধ্বংসাবশেষ পড়ে, যার ফলে বড় বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণ এতটাই শক্তিশালী ছিল যে বালুচিস্তান এবং খাইবার পাখতুনখোয়ার এলাকা সহ ২০-৫০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত এর শব্দ শোনা গিয়েছিল। সেনাবাহিনী দ্রুত ওই এলাকায় ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়, মিডিয়ায় সম্প্রচার ব্লক করে দেয় এবং মানুষকে ঘরে থাকতে বলে।
ডেরা গাজি খান কেন বিশেষ?
ডেরা গাজি খান পাকিস্তানের বৃহত্তম পরমাণু কেন্দ্র। এখানে ইউরেনিয়াম সংরক্ষণ এবং প্রক্রিয়াজাত করা হয়। ১৯৭০ সালে পাকিস্তান পরমাণু শক্তি কমিশন (PAEC) এখানে একটি পাইলট প্ল্যান্ট তৈরি করেছিল, যা প্রতিদিন ১০,০০০ পাউন্ড ইউরেনিয়াম প্রক্রিয়াজাত করে। যদি মিসাইলটি এই কেন্দ্রের উপর পড়ত, তাহলে এটি একটি বড় দুর্ঘটনা হতে পারত।