Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- সরাসরি রাজ্যের প্রশাসনের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দিলেন বনগাঁর সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর৷ বললেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনকে সেকেন্ডের মধ্যে চুপসে দিতে পারি, যদি আইনগত ব্যবস্থা নিই ৷’’
পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে অনেকেই সংবিধানের 355 ধারা (রাজ্যপালের শাসন) বা 356 ধারা (রাষ্ট্রপতি শাসন) জারির দাবি তুলছেন ৷ শান্তনু কি সেই দিকেই ইঙ্গিত করলেন ? তিনি কি বোঝাতে চাইলেন, কেন্দ্রীয় সরকার চাইলেই বাংলায় রাজ্যপালের বা রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করতে পারে ? যদি শান্তনু স্পষ্ট করেননি যে তিনি কী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছেন ৷
শান্তনু ঠাকুর এই কথা বলেছেন গতকাল, রবিবার ৷ ওইদিন বিকেলে উত্তর 24 পরগনার গাইঘাটা থানার সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিজেপি ৷ সেই কর্মসূচির মঞ্চ থেকে এই কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রী পরিষদের এই সদস্য ৷ তিনি বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গ তো আমার মাতৃভূমি, পশ্চিমবঙ্গে যারা শাসক ক্ষমতায় আছে, তারা নিজেদের ভাবে কী ! সারা ভারতে আমরা দায়িত্বে রয়েছি, পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনকে সেকেন্ডের মধ্যে চুপসে দিতে পারি, যদি আইনগত ব্যবস্থা নিই ৷’’
বিজেপির ওই অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচি করা হয় শিক্ষক আন্দোলনে পুলিশি সক্রিয়তা, ওয়াকফ বিল বিরোধী আন্দোলনে পুলিশ নিস্ক্রিয়তা-সহ একাধিক বিষয় ৷ এই অভিযোগগুলি তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি পুলিশমন্ত্রীও, তাঁর পদত্যাগের দাবি তোলা হয় ৷ সেই মঞ্চে উপস্থিত হয়ে কেন্দ্রের জাহাজ, বন্দর ও জলপথ পরিবহণ রাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর তোপ দাগেন পুলিশের বিরুদ্ধে ৷
তিনি বলেন, ‘‘ওয়াকফ বিল নিয়ে যেটা হল, বনগাঁয় আগে কখনও দেখিনি বাইরে থেকে কেউ এসে জেহাদি ঘোষণা করে গেল ৷ পুলিশ-প্রশাসন ভয় পেয়ে চুপ করে বসে আছে, তারাও জানে গন্ডগোল হতে পারে ৷ হিংসা ঠেকানোর ক্ষমতা নেই এদের ৷ এসব লোকেদের খোঁজ রাখার দরকার নেই এদের ৷ এরা কাদের ধরবে, যারা সমাজে সভ্যভাবে বসবাস করছেন, সঠিকভাবে চলছেন, নিরীহ মানুষ ৷ তাদের বলির পাঁঠা করে এদের সংসার চলবে ৷’’
আরও পড়ুন:- দেড় টনের এসি রোজ ৫ ঘণ্টা চললে কত বিল আসবে মাসে? দেখে নিন হিসেব
শুধু পুলিশ নয়, গাইঘাটা থানার ওসির বিরুদ্ধেও সরব হন শান্তনু ৷ তিনি বলেন, ‘‘চার বছর ধরে ট্রান্সফার হয়ে এখানে আছে ৷ এখানকার ইতিহাস জানে না ৷ এখানকার ওসিকে বলছি, গাইঘাটা-ঠাকুরনগর এলাকার ইতিহাস সম্পর্কে কোনও ধারণা আছে ! কোথায় কার বিরুদ্ধে কেস নিতে হবে, কীভাবে নিতে হবে, দালালির চরমসীমায় পৌঁছে গিয়েছে এরা ৷’’
এখানেই না থেমে পুলিশের বিরুদ্ধে আরও সুর চড়ান তিনি ৷ বলেন, ‘‘আজ এই ক’জন এসেছে ৷ আজ এখানে দাঁড়িয়ে বলে গেলাম, সারা ভারতে, পশ্চিমবঙ্গে যে পরিমাণে আমার সম্প্রদায়ের মানুষ আছে, এখানে যদি ডাকি, এখানে দাঁড়িয়ে দেখতে হবে না ৷… বিবেচনা করতে হবে, কার বিরুদ্ধে কী করছি৷ বহু ওসি এখানে এল গেল, সব নাকের জল, চোবানির জল খেয়ে গিয়েছে ৷’’
গাইঘাটায় অবস্থান-বিক্ষোভ বিজেপির৷ মঞ্চে শান্তনু ঠাকুর-লকেট চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে রয়েছেন অর্জুন সিং৷
শান্তনু আরও বলেন, ‘‘কাঁটাতার মুকুট বিশিষ্ট আপনাদের ওই সম্রাট আছে না, কলকাতার ওই অট্টালিকায় বসে থাকে, তাকে কিন্তু এখান থেকে খেদিয়ে তাড়িয়েছি ৷’’ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করার হুঁশিয়ারিও দেন শান্তনু ৷ বলেন, ‘‘একদম হাইকোর্টে টেনে নিয়ে যাব ৷ বুঝিয়ে দেব আমরা কারা ৷ অতএব সাবধান ৷ …দ্বিতীয়বার ভুল হলে, এই ক’টা লোক এখানে থাকবে না ৷ পাঁচদিন-এক সপ্তাহ বের হতে দেব না থানা থেকে ৷’’
গাইঘাটায় অবস্থান-বিক্ষোভ বিজেপির
গাইঘাটা থানার সামনে আয়োজিত ওই কর্মসূচি শান্তনু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিং, হুগলির প্রাক্তন সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর প্রমুখ ৷ সেখানে বক্তৃতা করতে গিয়ে হিন্দুদের হাতে ‘অস্ত্র’ তুলে নেওয়ার নিদান দেন লকেট ও সুব্রত ৷
আরও পড়ুন:- বাড়ি বাড়ি আর পৌঁছবে না রান্নার গ্যাস! চরম দুর্ভোগের মুখে গ্রাহকরা! সমাধানের উপায় জেনে নিন