পশ্চিমবঙ্গে বকেয়া ডিএ এর সাথে ১০ শতাংশ সুদ পাবেন ? কি জানাল কোর্ট ? জেনে নিন

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা (Dearness Allowance) নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court of India) চলছে দীর্ঘ লড়াই। এই মামলায় কর্মচারীরা দাবি করছেন যে রাজ্য সরকারকে বকেয়া ডিএ এর পুরো অংশ মেটাতে হবে, সঙ্গে কমপক্ষে ১০% সুদ দিতে হবে। এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই হলফনামা জমা দিয়েছেন মামলাকারী সরকারি কর্মীরা। সুপ্রীম কোর্টের মহামান্য বিচারপতিরা রাজ্য সরকারকে সতর্ক করে বলেছেন যে তারা নিজেদের কর্মচারীদের আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করুক। মামলাটি পঞ্চম বেতন কমিশনের (5th pay Commission) সুপারিশের উপর ভিত্তি করে, যা কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে DA এর সমতা নিশ্চিত করার কথা বলে। রাজ্য সরকার অবশ্য দাবি করছে যে DA দেওয়া রাজ্যসরকারের ইচ্ছের উপর নির্ভরশীল এবং আদালত কোনও নির্দেশ দিতে পারে না।

West Bengal Dearness Allowance Case Highlights

বকেয়া ডিএ: পঞ্চম কমিশন অনুসারে ২০০৯-২০১৯-এর arrears প্রায় ₹১১,০০০ কোটি।
সুদের দাবি: কর্মচারীরা ১০% সুদ চাইছেন, কিন্তু কোর্ট এখনও অর্ডার দেয়নি। 😔
সুপ্রিম কোর্টের অর্ডার: ২৫% পে করতে বলা হয়েছে, রাজ্য এক্সটেনশন চেয়েছে।
প্রভাব: ১০ লক্ষ কর্মচারী উপকৃত হতে পারে যদি ফাইনাল verdict তাদের পক্ষে যায়।

ডিএ মামলার শুনানির সর্বশেষ আপডেট অনুসারে, শীর্ষ আদালত interim order-এ আপাতত ২৫% বকেয়া DA পরিশোধ করার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু সরকারি কর্মীরা এতো দিনের বকেয়া এর জন্য যে সুদের দাবি করেছেন, তাঁর শুনানি বা সেই বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

বকেয়া ডিএ নিয়ে কর্মচারীদের জোরালো দাবি

সরকারি কর্মচারীদের সংগঠনগুলোর আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টে যুক্তি দিয়েছেন যে বকেয়া Dearness Allowance এর উপর ১০% সুদ দেওয়া বাধ্যতামূলক। তারা উল্লেখ করেছেন যে পঞ্চম বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুসারে রাজ্যকে কেন্দ্রের DA হারের সাথে মিলিয়ে দিতে হবে। কেরল সরকারের উদাহরণ দিয়ে বলা হয়েছে যে AICPI না মানলেও DA প্রদান করা সম্ভব এবং বাধ্যতামূলক। কর্মচারীদের তরফে আইনজীবী করুণা নন্দী জোর দিয়ে বলেছেন যে এটি কর্মচারীদের অধিকার, কোনও অনুগ্রহ নয়। ইউনিটি ফোরামের আহ্বায়ক দেবপ্রসাদ হালদার বলেছেন যে পুরো বকেয়া মেটাতে হবে সুদসহ। এই দাবি West Bengal Government Employees DA-এর অসমতার কারণে আরও জোরালো হয়েছে, যা কেন্দ্রের তুলনায় ৩৭% কম।

কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য যুক্তি দিয়েছেন যে রাজ্য নিজের তৈরি বিধি মানতে বাধ্য। তিনি বলেছেন যে কেন্দ্রীয় DA হার গ্রহণ করা হয়েছিল কিন্তু কার্যকর হয়নি। কর্মচারীরা দাবি করছেন যে এটি তাদের আর্থিক ক্ষতির কারণ হয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং পিকে মিশ্রর বেঞ্চ এই যুক্তিগুলো শুনেছে। তারা রাজ্যকে স্মরণ করিয়েছেন যে কর্মচারীদের জীবনযাত্রার মান বজায় রাখতে DA অপরিহার্য। মামলায় উল্লেখ হয়েছে যে রাজ্য সরকার বিভ্রান্তি তৈরি করে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেছে।

রাজ্য সরকারের অবস্থান এবং আদালতের পর্যবেক্ষণ

রাজ্য সরকারের আইনজীবী বলেছেন যে DA কখন এবং কতটা দেওয়া হবে তা তাদের সিদ্ধান্ত। তারা দাবি করেছেন যে এটি আদালতের নির্দেশের আওতায় পড়ে না কারণ এটি রাজ্য সরকারের অনুমোদনের উপর নির্ভর করে। বিচারপতি প্রশান্তকুমার মিশ্র বলেছেন যে রাজ্যকে নিজের কর্মচারীদের আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করতে হবে। তিনি যোগ করেছেন যে রাজ্য নিজেই সমস্যা তৈরি করে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেছে। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করেছে যে DA দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্যকে নিজের বিধি মানতে হবে। এই পর্যবেক্ষণ Supreme Court DA Case West Bengal-এ গুরুত্বপূর্ণ হয়েছে।

২০২৫-এর মে মাসে সুপ্রিম কোর্ট ২৫% বকেয়া DA পে করার নির্দেশ দিয়েছে তিন মাসের মধ্যে। এটি interim relief হিসেবে দেওয়া হয়েছে যা প্রায় ১০ লক্ষ কর্মচারীকে প্রভাবিত করবে। রাজ্য সরকার এর বিরুদ্ধে আপিল করে ছয় মাসের এক্সটেনশন চেয়েছে। তারা যুক্তি দিয়েছে যে এটি আর্থিকভাবে অসম্ভব এবং DA কোনও fundamental right নয়। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা বলেছেন যে DA legally enforceable right. এই নির্দেশ না মানলে রাজ্যকে আরও চাপের মুখে পড়তে হবে।

কর্মচারী সংগঠনগুলো বলছে যে রাজ্যের অবস্থান অযৌক্তিক এবং তারা প্রতিবাদ চালিয়ে যাবে। BJP এর মতো বিরোধী দল এটিকে ‘tight slap’ বলে অভিহিত করেছে। রাজ্য সরকারের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি যুক্তি দিয়েছেন যে DA discretionary matter। কিন্তু কোর্ট বলেছে যে এটি কর্মচারীদের জীবনযাত্রার অধিকারের সাথে যুক্ত। মামলায় AICPI-এর ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়েছে যা DA গণনার ভিত্তি। এই অবস্থানগুলো বকেয়া DA সুদের দাবিকে আরও জটিল করেছে।

 

ডিএ মামলার শুনানির সর্বশেষ আপডেট ⚖

ডিএ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যে শুনানি বা হিয়ারিং চলছে যেখানে DA কি মৌলিক অধিকার তথা Fundamental Right কিনা তা নির্ধারণ হবে। কর্মচারীরা দাবি করছেন যে AICPI না মানলেও DA দেওয়া বাধ্যতামূলক। রাজ্য বলছে যে তাদের ROPA 2009 অনুসারে DA নির্ধারণ হয়। বিচারপতিরা বলেছেন যে DA compensatory এবং inflation মোকাবিলায় অপরিহার্য। এই মামলার ফলাফল অন্য রাজ্যের কর্মচারীদের প্রভাবিত করতে পারে। সুদের দাবি এখনও unresolved, কিন্তু কর্মচারীরা ১০% হারে চাইছেন।

পশ্চিমবঙ্গে DA এখন ১৮%, যখন কেন্দ্রে ৫৫%। পার্থক্য বেড়ে দাড়িয়েছে ৩৭%, যা কর্মচারীদের অসন্তোষ বাড়িয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ না মানলে প্রতিবাদ বাড়তে পারে। রাজ্য সরকার affidavit দিয়ে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। কর্মচারী সংগঠনগুলো বলছে যে এটি তাদের অধিকারের লড়াই। ইতিমধ্যেই পর পর যে ভাবে শুনানি হচ্ছে তাতে ফাইনাল verdict আগস্টের মধ্যেই আসতে পারে যা DA arrears-এর ভবিষ্যত নির্ধারণ করবে। আর এখানে একটি কথা স্মরণ রাখতে হবে যে, এই মামলার রায় দেশের অন্যান্য রাজ্যের জন্য ও দৃষ্টান্তমূলক হবে। তাই মামলার রায় ও সেইরকমই হবে বলে মনে হচ্ছে।

 

উপসংহার

এই মামলা পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত DA কে Legally Enforceable করতে পারে। রাজ্য সরকারকে আর্থিক চাপ মোকাবিলা করতে হবে। কর্মচারীরা আশাবাদী যে সুদসহ পুরো অর্থ পাবেন। এটি অন্যান্য রাজ্যের DA policy-কে প্রভাবিত করতে পারে। চূড়ান্ত রায়ের অপেক্ষায় সকলে। তবে রাজ্য সরকার আদৌ এই বকেয়া মেটাবে কিনা সেই নিয়ে খোদ সন্দেহ রয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মীদের একাংশের মধ্যেই।

আরও পড়ুন:- মেদ কমানোর ইনজেকশনে চোখের মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কা, নতুন গবেষণায় চাঞ্চল্য

আরও পড়ুন:- রাস্তায় কুকুর কামড়ালে প্রথমেই কী করতে হয়? জানা থাকলে বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন