অর্ণব চক্রবর্তী, সামশেরগঞ্জ: আশঙ্কা ছিল সোমবার সকাল থেকেই। বিশেষ করে যখন ঘুম ভেঙেছিল গমগম শব্দে। কিন্তু তার পরেও নিজেদের এত কষ্ট করে তৈরি করা মন্দির রক্ষা করতে শেষ চেষ্টা করেছিলেন সকলে। কিন্তু তার পরেও শেষরক্ষা হল না। সোমবার রাত প্রায় সাড়ে ১১টার দিকে গঙ্গার প্রবল জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে গেল সামশেরগঞ্জের (Samserganj) চাচণ্ড গ্রামের ঐতিহ্যবাহী কালী মন্দির। কয়েকদিন ধরেই নদীর ধারে ফাটল দেখা গিয়েছিল, প্রশাসন ও স্থানীয়রা চেষ্টা করেও শেষমেশ রক্ষা করতে পারলেন না মন্দিরটি। মুহূর্তের মধ্যে গঙ্গার স্রোতে ভেসে গেল প্রাচীন এই মন্দিরটি।
এলাকার বাসিন্দা সনাতন মণ্ডল আক্ষেপের সঙ্গে বলেন, ‘বহু বছর ধরে গ্রামের শ্রদ্ধা ও বিশ্বাসের প্রতীক এই মন্দির। প্রতিবছরই কালীপুজোর সময় আমরা ধুমধাম করে এখানে পুজো করি। তবে বেশ কিছুদিন থেকেই মনে হচ্ছিল যা জলের স্রোত এবার মন্দিরটা টিকলে হয়। শেষমেশ মন্দিরটা রক্ষা করা গেল না। খারাপ লাগছে পুজোর আগেই সব শেষ হয়ে গেল।’ এদিকে, মন্দির পড়ে যাওয়ার পরপরই নদীর ধারে বসবাসকারী মানুষজনের মধ্যে নতুন করে ভাঙনের ভয় দেখা দিয়েছে।
এলাকার তুলসী হালদার জানান, নতুন করে ভাঙন দেখা দিচ্ছে, মন্দিরটা তলিয়ে গেল। বেশ কিছু বাড়ির অবস্থা ভয়ংকর, চতুর্দিকে ফাটল দেখা দিয়েছে। ভয়ে ভয়ে দিন কাটাচ্ছেন সকলে। রক্ষাকালীপুজো এবার তাঁরা ভালো করে করবেন ভেবেছিলেন কিন্তু মন্দিরটাই বাঁচল না। সামশেরগঞ্জের বিডিও সুজিতচন্দ্র লোধ বলেন, ‘আমরা ইরিগেশন থেকে চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু মন্দিরটা বাঁচাতে পারলাম না মধ্য চাচণ্ড এলাকায়। জনশ্রুতি আছে এলাকার অনেক পুরোনো ঐতিহ্যবাহী মন্দির এটি। বর্তমানে সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রায় ৩০০ মিটারের মতো জায়গা খারাপ অবস্থায় রয়েছে। সেচ দপ্তর কাজও করছে, এলাকার লোকজনকে আমরা সরিয়ে দিয়েছি আগের ভাঙনের সময়ই। আমি নিজে যাচ্ছি আবার গিয়ে দেখব জায়গাটা।’ তাঁর মতে, ‘বর্তমানে জল কমার জন্য ভাঙনের প্রবণতা নতুন করে তৈরি হয়েছে।’