পুরোনো নয়, তড়িঘড়ি E-passport আবেদন করুন ! SIR কিংবা NRC সবক্ষেত্রেই কার্যকরী

By Bangla News Dunia Desk - Pallab

Published on:

Bangla News Dunia, Pallab : বর্তমান যুগে সবকিছুই ডিজিটাল রূপান্তরে পৌঁছে যাচ্ছে। সরকারি পরিষেবাগুলিও এই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে শুরু করেছে। ঠিক সেই প্রেক্ষাপটেই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে Passport Seva 2.0 এবং এর অন্তর্গত রয়েছে e-Passport প্রকল্প। ১৩তম পাসপোর্ট সেবা দিবস উপলক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর এই আধুনিক সেবার ঘোষণা করে থাকেন।

আসুন জেনে নেওয়া যাক এই নতুন পাসপোর্ট সংস্কারের গুরুত্ব কি ,কি কি সুবিধা, এবং কীভাবে আপনি e-Passport-এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।

e-Passport কী?

e-Passport হল একটি নতুন ধরনের আধুনিক পাসপোর্ট যা একটি মাইক্রোচিপ দ্বারা সজ্জিত করা থাকবে। এই চিপের মধ্যে আবেদনকারীর সমস্ত বায়োমেট্রিক তথ্য থাকবে, যেমন চোখের রেটিনা, আঙুলের ছাপ, ছবি ও অন্যান্য তথ্য সুরক্ষিতভাবে সংরক্ষিত রাখা হবে।

এই ধরনের পাসপোর্ট আন্তর্জাতিকভাবে Machine Readable Travel Document (MRTD) হিসেবে স্বীকৃত পাবে এবং এতে তথ্য স্ক্যানার দিয়ে মুহূর্তেই পড়া যাবে বলে জানা যায় । এটি ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া দ্রুততর করে এবং জালিয়াতি প্রতিরোধে সহায়তা করে।

কেন গুরুত্বপূর্ণ এই e-Passport?

1. নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী হবে

চিপযুক্ত এই e-Passport সাধারণ পাসপোর্টের তুলনায় অনেক বেশি নিরাপদ ও দুর্নীতিমুক্ত হয়ে থাকবল। এতে জাল পাসপোর্ট তৈরি করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

2. দ্রুত ইমিগ্রেশন পরিষেবা

এয়ারপোর্ট বা আন্তর্জাতিক সীমান্তে ইমিগ্রেশন চেকিং অনেক সহজ হবে এবং দ্রুত হবে কারণ ডেটা স্ক্যান করে তাৎক্ষণিক যাচাই করা সম্ভব এক্ষেত্রে।

3. আন্তর্জাতিক মানের সুবিধা

বিশ্বের অনেক দেশেই এই ধরনের ই-পাসপোর্ট চালু হয়েছে। ভারতের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক ভ্রমণ প্রক্রিয়াকে আরও মানসম্পন্ন ও সহজ করে থাকবে।

Passport Seva 2.0 কী?

Passport Seva Programme Version 2.0 হল একটি ডিজিটাল আপগ্রেড ভারশন যা দেশের সকল পাসপোর্ট অফিসে আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে সেবার গুণমান উন্নত করার লক্ষ্যে চালু করা হয়েছে বলে জানা যায়।

এর আওতায় নতুন প্রযুক্তি, উন্নত সার্ভার, ক্লাউড কম্পিউটিং, এবং AI ভিত্তিক নিরাপত্তা প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়ে থাকবে। এছাড়া আবেদনকারীরা সহজে পাসপোর্ট আবেদন করতে পারবেন অনলাইন পোর্টাল ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সম্ভব।

কীভাবে আবেদন করবেন e-Passport-এর জন্য?

Step 1: অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যান

e-Passport-এর জন্য আবেদন করতে হলে আপনাকে প্রথমে যেতে হবে Passport Seva Portal-এই ওয়েবসাইটে।

Step 2: অ্যাকাউন্ট তৈরি বা লগইন করুন

  • যদি আপনি নতুন ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন, তাহলে “Register Now” অপশনে ক্লিক করে অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে।
  • আগে থেকে রেজিস্টার্ড হয়ে থাকলে, সরাসরি ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে Login করতে হবে।

Step 3: ফর্ম পূরণ করুন

  • “Apply for Fresh Passport / Re-issue of Passport” অপশনে ক্লিক করতে হবে।
  • ফর্মে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, ঠিকানা, পরিচয়, জন্মতারিখ প্রভৃতি পূরণ করতে হবে।

Step 4: PSK বা POPSK নির্বাচন করুন

আপনার নিকটবর্তী Passport Seva Kendra (PSK) অথবা Post Office Passport Seva Kendra (POPSK) নির্বাচন করে ফেলুন ।

Step 5: ফি জমা দিন

পাসপোর্ট আবেদন ফি অনলাইনে জমা দিতে হবে। পেমেন্ট করা যাবে Net Banking, UPI, ডেবিট/ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে সম্ভব ।

Step 6: অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করুন

সফলভাবে ফি জমা দেওয়ার পর একটি নির্দিষ্ট তারিখ ও সময় নির্বাচন করে অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করতে হবে।

Step 7: নির্ধারিত দিনে সেন্টারে হাজির হোন

নির্বাচিত PSK বা POPSK-তে নির্ধারিত সময়ে উপস্থিত হয়ে বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে।

প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট কী কী?

e-Passport-এর জন্য নিচের নথিগুলি প্রয়োজন হবে :

  1. বৈধ পরিচয়পত্র (আধার/ভোটার কার্ড)
  2. জন্ম সনদ
  3. ঠিকানার প্রমাণ (বিদ্যুৎ বিল, রেশন কার্ড)
  4. পুরানো পাসপোর্ট (যদি থাকে)
  5. পাসপোর্ট সাইজ ছবি (নতুন অফিসে ছবি তোলা হয়)
  6. অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন রিসিপ্ট

আবেদন ফি কত?

বড় কথা হলো, বর্তমানে e-Passport-এর আবেদন ফি সাধারণ পাসপোর্টের সমান বা কাছাকাছি রাখা হয়েছে।

  • Normal Processing (36 পৃষ্ঠা): ₹1500/-
  • Tatkaal Processing: ₹3500/- এর কাছাকাছি হতে পারে বলে জানা যায়

(নির্ভর করে বয়স ও প্রয়োজন অনুসারে হবে)

কোন কোন শহরে শুরু হয়েছে e-Passport?

বর্তমানে এটি ধাপে ধাপে সমস্ত শহরে চালু করা হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে বড় শহরগুলি যেমন:

  1. দিল্লি
  2. মুম্বই
  3. কলকাতা
  4. বেঙ্গালুরু
  5. চেন্নাই

এছাড়াও বিভিন্ন বিদেশি ভারতীয় কনস্যুলেট ও এম্বাসিতে Passport Seva V2.0 চালু করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে ।

e-Passport নিয়ে ভবিষ্যতের সম্ভাবনা

  • e-Gate চালুর মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় প্রবেশ ও প্রস্থান সম্ভব হতে চলেছে।
  • বিদেশ সফরের সময় Visa on Arrival পেতে সুবিধা হয়ে থাকবে
  • e-Passport-এর মাধ্যমে Digital India Mission আরও শক্তিশালী হতে চলেছে।
  • আগামী বছরগুলিতে এটি একটি বাধ্যতামূলক ডকুমেন্ট হয়ে উঠবে।

Bangla News Dunia Desk - Pallab

মন্তব্য করুন