Bangla News Dunia, Pallab : মুকুট পড়ে আছে, রাজা নেই। ৮৮ বছর বয়সে প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিস। তাঁর শূন্য আসন পূর্ণ করবেন কে? কে হবেন ক্যাথলিক গির্জার পরবর্তী সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা? এই নিয়ে কৌতূহল বিশ্বজুড়ে।
আরও পড়ুন : কিডনি স্টোন গলিয়ে বের করে দেবে এই পাতা, জানতে বিস্তারিত পড়ুন
প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিস ছিলেন প্রথম লাতিন আমেরিকান পোপ। রোমে শোকের আবহেই কার্ডিনালদের গোপন বৈঠকে (প্যাপাল কনক্লেভ) নতুন পোপ নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। আলোচনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠে এসেছে, এবারই কি প্রথম পোপের গুরুভার অর্পণ করা হবে কোনও কৃষ্ণাঙ্গ বা এশীয়কে?
সাধারণত পরবর্তী পোপ বাছাই করা হয় একটি ‘কনক্লেভ’ বা সম্মেলনের মাধ্যমে। কোনও পোপের মৃত্যুর ১৫-২০ দিনের মধ্যে ওই সম্মেলন শুরু হয়। পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুর পর পরবর্তী পোপ হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন অনেকেই। চলুন, দাবিদারদের মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত কয়েকজনকে দেখে নেওয়া যাক।
পিটার টার্কসন (৭৬) : জন্ম ঘানায়। কেপ কোস্টের এই প্রাক্তন বিশপ আফ্রিকার প্রতিনিধি হিসেবে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ পোপ হতে পারেন। ২০১৩ সালের পোপ নির্বাচনের সময়ও তাঁর নাম শীর্ষে ছিল। সমকামী সম্পর্ক নিয়ে তিনি মাঝামাঝি অবস্থানে রয়েছেন। আফ্রিকায় কঠোর আইন নিয়ে প্রশ্ন তুললেও সেখানকার সংস্কৃতির প্রতিও শ্রদ্ধাশীল।
লুইস আন্তোনিও তাগলে (৬৭) : ফিলিপিন্সের ম্যানিলার প্রাক্তন আর্চবিশপ তাগলে হতে পারেন প্রথম এশীয় পোপ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ক্যাথলিক জনসংখ্যা দ্রুত বাড়ছে, তাই তাঁর নির্বাচন গির্জার বিস্তারে ইতিবাচক বার্তা দিতে পারে। গর্ভপাতের বিরোধী হলেও তিনি গির্জার কঠোর নীতির সমালোচনা করেছেন, বিশেষ করে সমকামী ও তালাকপ্রাপ্তদের বিষয়ে।
পিয়েত্রো পারোলিন (৭০) : পোপ ফ্রান্সিসের সচিব হিসাবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন এই কার্ডিনাল। রক্ষণশীল হিসাবে পরিচিত এই ধর্মীয় নেতা সমকামী বিবাহকে মানবতার পরাজয় বলে অভিহিত করেছিলেন ২০১৫ সালে। গির্জার বর্তমান নীতির ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারবেন বলে অনুরাগীদের বিশ্বাস। তবে চিনের সঙ্গে গির্জার বিতর্কিত ২০১৮ সালের চুক্তির জন্য তাঁর ভাবমূর্তি কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পিটার এরদো (৭২) : হাঙ্গেরির এস্টারগোম-বুদাপেস্টের এই আর্চবিশপ ক্যাথলিক গির্জার রক্ষণশীল শাখার প্রতিনিধি। যদিও পূর্ব ইউরোপে কমিউনিস্ট শাসনে যাজকদের ওপর নিপীড়নের সময় প্রতিবাদী ভূমিকা ছিল তাঁর। বিবাহবিচ্ছিন্ন বা পুনর্বিবাহিতদের পবিত্র কমিউনিয়নে অংশ নেওয়ার বিরোধিতা করেছেন।
হোসে টোলেন্তিনো (৫৯) : পর্তুগালের মাদেইরা দ্বীপের এই আর্চবিশপ তুলনামূলকভাবে তরুণ প্রার্থী। তিনি আধুনিক সংস্কৃতির সঙ্গে বাইবেল শিক্ষার সংযোগ তৈরির পক্ষে এবং মনে করেন যাজকদের সিনেমা ও সংগীতের সঙ্গেও যুক্ত থাকা উচিত।
মাত্তেও জুপি (৬৯) : বোলোনিয়ার এই আর্চবিশপ ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য পোপের পক্ষ থেকে দূত হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি খ্রিস্টধর্মের মানবিক দিকটি জোর দিয়ে তুলে ধরেন। তবে কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় এখনও উল্লেখযোগ্য সাফল্য আনতে পারেননি।
মারিও গ্রেক (৬৮) : মাল্টার গোজোর প্রাক্তন বিশপ গ্রেক বর্তমানে বিশপদের সিনোডের সেক্রেটারি জেনারেল। তিনি গির্জাকে সমকামী ও বিবাহবিচ্ছিন্না মহিলাদের বিষয়গুলি ‘নতুনভাবে’ দেখার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে একে অনেকেই সংরক্ষণশীল পন্থা হিসাবেই দেখছেন।
রবার্ট সারাহ (৭৯) : ফরাসি গিনি থেকে উঠে আসা এই অভিজ্ঞ কার্ডিনাল পোপ হলে তিনিও হবেন প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ পোপ। তবে বয়স তাঁর প্রধান প্রতিবন্ধকতা। তিনি বেশ রক্ষণশীল মনোভাবের এবং ‘লিঙ্গ ভাবধারা’ ও ইসলামিক মৌলবাদের কড়া সমালোচক।
এঁদের মধ্যে কে হবেন পরবর্তী পোপ, সেদিকেই তাকিয়ে বিশ্ববাসী। কোনও কৃষ্ণাঙ্গ বা এশীয় নেতা না কি আফ্রিকান, কার শিরে উঠবে ভ্যাটিকানের রাজপাট! নাকি ক্যাথলিক গির্জা আবারও হাঁটবে চেনা পথেই! সময়ই তার উত্তর দেবে। আপাতত অপেক্ষা।
আরও পড়ুন : গরমে ভুল স্নান মানেই বিপদ! এই নিয়ম না জানলে হতে পারে বড় ক্ষতি