Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- এখন অনেকেই ফেসবুক মার্কেটিং শেখার মাধ্যমে আয় করছেন খুব সহজেই। বর্তমানে সমস্ত পরিষেবা অনলাইন নির্ভর, বিশেষ করে সোশ্যাল মাধ্যমের মধ্যে ফেসবুক একটি জনপ্রিয় অ্যাপ। শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক ব্যক্তি প্রত্যেকেই ফেসবুক সম্পর্কে এক কথায় অবগত। এই ফেসবুক শুধুই মাত্র বিনোদনমূলক কাজের জন্যই বর্তমান সময়ে ব্যবহার হয় না, আপনি ফেসবুক থেকে অনলাইন মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারেন বাড়ি বসে।
ফেসবুক মার্কেটিং শেখার সহজ উপায় ও আয়ের সুযোগ
ফেসবুক মার্কেটিং করে কিভাবে বাড়ি বসে অর্থ উপার্জন করবেন সেই সংক্রান্ত তথ্য থাকছে আজকের এই প্রতিবেদনে। আপনি যদি আপনার ফ্রী টাইম কোন কাজে ইউটিলাইজ করে অর্থ উপার্জন করতে ইচ্ছুক হন, তাহলে এই প্রতিবেদনটি পড়ে কিভাবে ফেসবুক থেকে অর্থ উপার্জন করবেন সেই সংক্রান্ত তথ্য জেনে নিতে পারবেন খুব সহজে।
Facebook Marketing Strategy for Small Business
ফেসবুক মার্কেটিং বলতে বোঝায়, যার দ্বারা আপনার ব্যবসার পণ্য এবং সেবার ব্যাপারে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের কাছে জানান দেওয়া হয়ে থাকে। বর্তমানে ফেসবুক মার্কেটিং এর মাধ্যমে অধিক সংখ্যক মানুষের কাছে পণ্য সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয় এবং বেশি পরিমাণ পণ্য বিক্রি করতে নিশ্চিত করা হয়। ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে ধারণা থাকলে ফেসবুক মার্কেটিং সম্পর্কেও আপনি খুব সহজে বুঝতে পারবেন।
ফেসবুক মার্কেটিং করে আয় করার সঠিক পদ্ধতি ও স্ট্র্যাটেজি
ডিজিটাল মার্কেটিং কেন করবেন? ডিজিটাল মার্কেটিং কৌশল হলো সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এবং ইমেল মার্কেটিং কাজে লাগিয়ে পণ্য ও পরিষেবা গুলোর প্রচার ও বিক্রয় করার একটি প্রক্রিয়া। এটি বর্তমানে খুব বেশী জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ১) ফ্রি ফেসবুক মার্কের্টিং ২) পেইড ফেসবুক মার্কেটিং। এই দুই পদ্ধতি অবলম্বন করার মাধ্যমে আপনারা
ফ্রি বা অর্গানিক ফেসবুক মার্কেটিং :- আপনি যখন নিজে নিজেই ফেসবুকে মার্কেটিং শুরু করবেন তখন তাকে ফ্রি বা অর্গানিক মার্কেটিং বলে। এধরণের মার্কেটিং আপনি আপনার নিজের ফেসবুক একাউন্ট খুলে শুরু করতে পারেন। এক্ষেত্রে একটা জিনিস গুরুত্বপূর্ণ, সেটা হলো ফেসবুকে অচেনা কোন ব্যক্তিকে কোন মানুষ বিশ্বাস করতে চায় না সর্বপ্রথম। আপনি যদি ফেসবুকে মার্কেটিং শুরু করেন বা আপনার কোন বিজনেস শুরু করেন তাহলে সবার প্রথমে আপনাকে একটা পরিচিতি আনতে হবে।
এই পরিচিতি আনার জন্য বা পরিচিতি বাড়ানোর জন্য আপনাকে সব সময় ফেসবুকে একটিভ থাকতে হবে এবং আপনাকে বিভিন্ন ধরনের আর্টিকেল বা ভিডিও শেয়ার করতে হবে, যাতে আপনার কথাবার্তার মাধ্যমে আপনার ভিউয়ার্সের সাথে অন্যান্য ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন হয় এবং আপনার কথার মধ্যে এতটাই দৃঢ়তা থাকতে হবে যাতে আপনার কথা বা আপনার ব্যবসার জন্য বলা কথা অন্য ব্যক্তিদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয়ে ওঠে।
কোন ধরনের পেইড ডিস্ট্রিবিউশন ছাড়াই যত সংখ্যক মানুষ ফেসবুকে আপনার শেয়ার করা পোষ্ট দেখে বা পড়ে তাকে অর্গানিক রিচ বলা হয়। এর সুবিধা হলো ধরনের পোষ্ট করার জন্য আপনাকে নিজের থেকে কোন টাকা খরচ করতে হয় না। তবে এই কথা সত্য যে, ফেসবুকে একজন ব্যবহারকারীর নিউজ ফিডে আসা শত শত পোষ্টের ভিড়ের কারণে বর্তমান সময়ে অর্গানিক রিচ পাওয়া যথেষ্ট কষ্টসাধ্য।
পেইড ফেসবুক মার্কেটিং:- পেইড ফেসবুক মার্কেটিং বলতে বোঝানো হয়েছে, আপনি আপনার প্রোডাক্ট সেল করার জন্য বা অনেক মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য পেইজ বুষ্ট অথবা প্রোডাক্ট বুষ্ট করার জন্য যে অর্থ ব্যায় করেন। এক কথায় ফেসবুক বুষ্ট এর মাধ্যমে যে মার্কেটিং করা হলে তাকে পেইড মার্কেটিং বলা হয়। এখানে আপনি নিজের পছন্দ মতো করে এ্যাড চালাতে পারবেন।
কেমন ধরনের কাষ্টমার চাইছেন, তাদের বয়স কেমন হবে,কোন এলাকার হবে বা তাদের টেস্ট কেমন হবে। সে ক্ষেত্রে আপনি সকল কিছু সুন্দর ভাবে গুছিয়ে বুষ্ট করলে ভালো ফলাফল পাবার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও ফেসবুক আরো কিছু মার্কেটিং মাধ্যম রয়েছে। যেমন – ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং স্ট্রাটেজি, ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং এই সকল পদ্ধতি অবলম্বন করার মাধ্যমেও এই কাজ করতে পারবেন।
আরও পড়ুন:- রাজ্য পুলিশে সরাসরি ইন্টারভিউর মাধ্যমে প্রচুর কর্মী নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত দেখে শীঘ্রই আবেদন করুন
ফেসবুক মার্কেটিং এর জন্য পেইজ কিভাবে সাজাবেন?
১) ব্যবসার জন্য উপযুক্ত ব্যান্ড বা প্রোডাক্ট নির্বাচন
২) ফেসবুক বিজনেস পেজ তৈরি করুন
৩) প্রোফেশনাল মানের প্রোফাইল পিকচার ও কভার ছবি যুক্ত করুন
৪) Description box / About us সেকশন
৫) বাটন ও কাস্টমাইজ ট্যাব
৬) ফেসবুক পেজ URL / Username গঠন
৭) CTA বাটন যুক্ত করুন
৮) Like and followers
ফেসবুক পেজ কিভাবে সাজাবেন সেটাই জেনে নেওয়া যাক, আপনাকে প্রথমেই তৈরী করতে হবে একটি ভালো ফেসবুক বিজনেস প্রোফাইল। ফেসবুকে যাবতীয় ইনফরমেশন দিয়ে সুন্দর একটা প্রোফাইল পিকচার দিয়ে একটি একাউন্ট তৈরি করে ফেলুন। চেষ্টা করবেন যত সম্ভব ঠিকঠাক ইনফরমেশন দিয়ে প্রোফাইল তৈরি করার। একটি ভালো মানের একাউন্ট তৈরি করার জন্য আপনার একাউন্টটি সাজানো গোছানো অর্থাৎ আকর্ষণীয় হতে হবে।
ফেসবুক মার্কেটিং গাইড বাংলায়
চেষ্টা করুন নিজেকে স্পেশাল করতে তাহলেই সহজে সবার কাছে নিজেকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে পারবেন। আপনার বিজনেস নিয়ে কিছু বর্ননা দিতে হবে। এছাড়াও আপনার যদি ওয়েবসাইট থাকে তাহলে Learn More বাটন যুক্ত করতে পারেন। এরই সাথে পেইজের Username সুন্দর ভাবে সেট কতে হবে। এবার আপনাকে ফ্রেন্ড যুক্ত করার ক্ষেত্রে কিছুটা সতর্ক থাকতে হবে।
আপনি যদি আপনার টার্গেটেড কাষ্টমারকে পেইজের ফলোয়ার হিসাবে যুক্ত করতে পারেন তবে আপনি খুব সহজেই ভালো সেল পাবেন। প্রত্যেকদিন দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় বেছে নেবেন যে সময়ে রেগুলার আপনাকে পোস্ট করতে হবে। এতে আপনার পেইজে এনগেজমেন্ট ভালো থাকবে। চেষ্টা করবেন আপনার ফ্রেন্ড লিস্টে এমন কোন কাউকে না রাখতে যিনি নিজেও একজন মার্কেটের বা বিজনেস রিলেটেড ব্যক্তি।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং:- আপনাকে সবার মধ্যে নিজেকে গ্রহণযোগ্য করে তুলতে হবে আর তার জন্যই নিয়মিত আপনাকে নির্দিষ্ট সময়ে পোস্ট করতে হবে। যারা আপনার পোস্টে কমেন্ট করবে তাদের কমেন্টের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবেন। একই রকম কনটেন্ট রাখার চেষ্টা করবেন না। প্রত্যেকদিন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ভিন্ন রকমের কনটেন্ট দেওয়ার চেষ্টা করবেন। আপনি যে বিষয়ে মার্কেটিং করবেন সেই বিষয়ে সম্পর্কে লেখার চেষ্টা করুন এতে করে আপনার একটা ভালো গুডিল তৈরি হবে। যতটা সম্ভব পারবেন আপনি যে বিষয় নিয়ে মার্কেটিং করছেন সে বিষয়ে দক্ষতা রাখার। চেষ্টা করবেন সবার প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিতে এবং আপনার উত্তরে যেন স্বচ্ছতা থাকে।
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং জনপ্রিয় কেন :- সোশ্যাল মিডিয়ার একটি অংশ হলো ফেসবুক। ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব ইত্যাদি আর কিছু সোশ্যাল মিডিয়া রয়েছে তবে আমাদের দেশের মানুষ বেশির ভাগ সময়েই বিনোদনের জন্য ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব ব্যবহার করে থাকে। ফলে আপনি যদি আপনার প্রোডাক্টের মার্কেটিং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে করে থাকেন তবে অনেক বেশি পরিমান ট্রাফিক পেয়ে যাবেন। সেই কারনেই বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং অনেক বেশি জনপ্রিয়।
ডিজিটাল মার্কেটিং করলে কি সুবিধা পাওয়া যাবে :- ব্যানার, সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড, ফেস্টুন, পেপার, রেডিও, বা টিভি বিজ্ঞাপন থেকে ফেসবুক বিজ্ঞাপন অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ কারণ – এতে কম খরচে অধিক ফল পাওয়া যায়। ফেসবুকের মাধ্যমে আপনি সর্বোচ্চ পর্যায়ের মার্কেটিং করতে পারবেন। ফেসবুক মার্কেটিং করলে আপনি আপনার মার্কেটিং ফলাফল তাৎক্ষনিক চেক করতে পারবেন এবং প্রয়োজনে আপনার রানিং বিজ্ঞাপন বন্ধ করে নতুন ভাবে বিজ্ঞাপন দিতে পারবেন।
ফেসবুকের মার্কেটিং করলে আপনি আপনার ফলাফল পর্যালোচনা করতে পারবেন। ফেসবুকের বিজ্ঞাপন করার খরচ খুবই কম। এছাড়াও যেহেতু ফেসবুক একটি জনপ্রিয় যোগাযোগ মাধ্যম, এই জন্য ফেসবুকের মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার হয়। যেহেতু ফেসবুকের মাধ্যমে একজন অপরের সাথে যুক্ত তাই শেয়ারের মাধ্যমে আপনার বার্তা খুব দ্রুত একজন থেকে অন্য জনের কাছে পৌঁছে যায়।
ফেসবুক বিজ্ঞাপনে আসার যথেষ্ট কারণ যদি বলা হয় তার মধ্যে একটি হলো অল্প খরচের মধ্যে খুব দ্রুত বেশিরভাগ মানুষের কাছে পৌঁছানো। আপনি একজন ছোট ব্যবসায়ী বা একটি বৃহৎ কর্পোরেশনের মালিক যাই হোন না কেন, গ্রাহক ধরে রাখার জন্য বা ব্র্যান্ডের প্রচার করার মাধ্যম হিসেবে এবং আপনার ব্যবসা বাড়ানোর জন্য ফেসবুক হলো একটি মূল্যবান মার্কেটিং মাধ্যম।
যেখানে আপনি সব লেভেল থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষের কাছে আপনার বার্তা পাঠাতে পারবেন। মার্কেটিং করে সকলের কাছে প্রচারের মাধ্যমে নিজের প্রোডাক্টকে সকল স্তরের মানুষের কাছে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ফেসবুক মার্কেটিং এর বিকল্প নেই, তবে আপনাকে সঠিকভাবে ফেসবুক মার্কেটিং এর কৌশল আয়ত্ত করতে হবে, এছাড়া ধৈর্য ধরে একনিষ্ঠ ভাবে কাজ করতে হবে, তবে আপনি ফেসবুক মার্কেটিং এ খুব তাড়াতাড়ি সফলতা আনতে পারবেন।













