ফ্রি রেশন, একাধিক ভাণ্ডারে কাজের ইচ্ছে চলে যাচ্ছে ! ‘ভোটমুখী’ ভাতা’য় ক্ষুব্ধ সুপ্রিম কোর্ট – SC ON ANNOUNCING FREEBIES

By Bangla News Dunia Desk Bappaditya

Published on:

Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- ভাতা থেকে রেশন ৷ জীবনের প্রাথমিক বেশ কিছু চাহিদা মিটে যাচ্ছে পরিশ্রম না-করেই ৷ আর সরকারের ‘মুফতে’ দেওয়া এই একাধিক বিষয়ে নেপথ্যে রয়েছে ভোট-রাজনীতির গন্ধ ৷ অন্যদিকে, বিনামূল্যে খাবার থেকে শুরু করে সামান্য অর্থ পেয়ে আদতে সমাজের ক্ষতি হচ্ছে । মানুষ আর কাজ (পরিশ্রম) করতে চাইছেন না। একটি মামলায় এমনই মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট ।

সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, বিনামূল্যে খাবার পেয়ে গেলে, কোনও পরিশ্রম না-করেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা চলে এলে আর কাজ করার প্রয়োজন পড়ে না । বুধবার এভাবেই নির্বাচনের আগে সরকারের বিনামূল্যে রেশন এবং অর্থ প্রদানের ঘোষণার তীব্র সমালোচনা করে দেশের সর্বোচ্চ আদালত জানিয়েছে, মানুষ বিনামূল্যে রেশন এবং অর্থ পাওয়ায় কাজ করতে ইচ্ছুক নয় ৷ একই সঙ্গে দারিদ্র্যপীড়িত শ্রেণির কথা মাথায় রেখে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, ‘‘জাতির উন্নয়নে অবদান রেখে সমাজের মূলধারার অংশ হতে হবে ৷ এই বিষয়ে উৎসাহিত করার পরিবর্তে, আমরা কি এভাবে পরজীবী শ্রেণি তৈরি করছি না ?’’

বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি অগাস্টিন জর্জ মাসিহের বেঞ্চ শহরের গৃহহীন ব্যক্তিদের আশ্রয়ের অধিকার সম্পর্কিত একটি মামলার শুনানিতে এই মন্তব্য করেছে । রাজনৈতিক দলগুলির ঘোষিত বিনামূল্যে সুবিধার সমালোচনা করে বিচারপতি গাভাই বলেন, “মানুষ আর কাজ করতে ইচ্ছুক নয় ৷ কারণ তাঁরা কোনও কাজ না-করেই বিনামূল্যে রেশন এবং অর্থ পাচ্ছেন ।’’

আরও পড়ুন:- মাধ্যমিক পাশে পশ্চিমবঙ্গ ডাক সার্কেলে প্রচুর ডাক সেবক নিয়োগ চলছে! শীঘ্রই আবেদন করুন

শুনানির সময়, একজন আইনজীবী বেঞ্চকে জানান যে ক্ষতিপূরণ কেবল ধনীদের জন্য, দরিদ্রদের জন্য নয় । তারপরেই বিচারপতি গাভাই ওই আইনজীবীকে সতর্ক করে বলেন, ‘‘আদালতকে রাজনৈতিক বক্তৃতা দেওয়ার জন্য প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করবেন না ৷ কারও স্বার্থ রক্ষা করতে চাইলে তার জন্য যুক্তি দিতে হবে ৷ অপ্রয়োজনীয় অভিযোগ করা উচিত নয় ।’’

বিচারপতি গাভাই আরও বলেন, “দুর্ভাগ্যবশত, নির্বাচনের ঠিক আগে এই বিনামূল্যের উপহারের কথা বলা হচ্ছে। লাডলি বাহিন-সহ এরকম কিছু প্রকল্প পেয়ে যাচ্ছেন বলে মানুষ আর কাজ করতে ইচ্ছুক নয় । বিনামূল্যে রেশন পাচ্ছেন; কোনও কাজ না করেই কিছু পরিমাণ অর্থ পাচ্ছেন। তাঁদের মূলধারার সমাজের অংশ করা কি ভালো হবে না ? জাতির উন্নয়নে তাঁদের অবদান রাখার ব্যবস্থা করে দিন ৷”

আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ বলেন, ‘‘যদি কিছু কাজ থাকে, তাহলে তাঁরা মূলধারার সমাজের অংশ হবে ৷ বর্তমানে সমস্যা হল তাঁদের কোনও আশ্রয়স্থল নেই ।’’ পালটা বিচারপতি গাভাই ভূষণকে বলেন, “কিছু রাজ্য বিনামূল্যে রেশন দেয় বলে মানুষ কাজ করতে চায় না। আমি একটি কৃষি পরিবার থেকে এসেছি ৷ মহারাষ্ট্রে কৃষির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা শ্রমিক পাচ্ছেন না। কারণ শ্রমিকরা সবাই বাড়িতে বিনামূল্যে রেশন পাচ্ছেন ৷ ফলে কাজ করছেন না ৷”

বিচারপতি গাভাইয়ের পরামর্শ, পরিস্থিতিতে ভারসাম্য থাকা উচিত । এই পর্বে ভূষণ বলেন, ‘‘আশ্রয়স্থলটি সেসব মানুষের বেশি দরকার যাদের বাজারমূল্যে খাবার কেনার মতো সামর্থ্য নেই ৷ এই কারণেই খাদ্য নিরাপত্তা আইন আনা হয়েছে । আশ্রয়প্রার্থীরা সামান্য বেতনের চাকরি করেন। তাঁদের কাছে রাত কাটানোর জন্য আশ্রয়স্থল তৈরির মতো পর্যাপ্ত অর্থ নেই ।’’

কেন্দ্রের তরফে অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরামণি আদালতের সামনে যুক্তি দেন, কেন্দ্রীয় সরকার দারিদ্র্য-মুক্ত শহর নির্মাণে বদ্ধপরিকর ৷ সেখানে আশ্রয়স্থলের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে চলেছে। তিনি বলেন, ‘‘পাইলট প্রকল্পগুলি চলছে ৷’’ এখানেই বেঞ্চ জানতে চায় কতদিনের মধ্যে দারিদ্র্য-মুক্ত শহর নির্মাণ সম্ভব ? ছ’সপ্তাহ পরে মামলাটির পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট ।

আরও পড়ুন:- সামনে এল দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকা, ভারত কত নম্বরে, দেখে নিন

আরও পড়ুন:- কোন খাতে কত টাকা, দেখে নিন রাজ্য বাজেট বরাদ্দের পূর্ণাঙ্গ চিত্র

Bangla News Dunia Desk Bappaditya

মন্তব্য করুন