Bangla News Dunia, Pallab : অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশের (Bangladesh) গোপালগঞ্জ (Gopalganj)। একদিকে টুঙ্গিদিঘিতে শেখ মুজিবের মাজার রক্ষায় পুলিশ ও সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে একাধিক মৃত্যুর অভিযোগ ও অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ শেষে তাদের ঘিরে হামলা, এই দুইয়ের জেরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বাংলাদেশের এই জেলা। এনসিপির এদিনের সমাবেশ শেষে হামলার অভিযোগ ওঠে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লিগ ও তাদের ছাত্র সংগঠন ছাত্র লিগের বিরুদ্ধে। এদিন বেলা পৌনে তিনটে নাগাদ শহরের পৌর পার্কে সভাস্থলে হামলা হয়। ঘটনার পর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : ম্যায় হুঁ না ! শুভেন্দু-সুকান্তকে বিশেষ বার্তা দিলীপের
প্রত্যক্ষদর্শী মতে, বুধবার এনসিপির সমাবেশ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একদল ব্যক্তি লাঠিসোঁটা নিয়ে নেতা-কর্মীদের ঘিরে হামলা চালান। তাঁরা চারদিক থেকে এনসিপির নেতা-কর্মী ও পুলিশের গাড়ি আটকে দেয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ (Police) ও সেনাবাহিনী সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। এনসিপির নেতা-কর্মীদের অন্যদিক দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। হামলার পেছনে আওয়ামী লিগের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
অন্যদিকে, মঙ্গলবারই গোপালগঞ্জের আওয়ামী লিগ নেতারা জানিয়েছিলেন, প্রয়োজনের নিজেদের রক্ত দিয়ে তাঁরা টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর মাজার রক্ষা করবেন। সেখানেই রয়েছে শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি। তাদের কাছে খবর ছিল, মুজিবের স্মৃতিসৌধে ভাঙার পরিকল্পনা চলছে। এদিন এনসিপি ও জামাতের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন ছাত্র লিগ নেতা-কর্মীরা। প্রতিরোধে ৩ জনের প্রাণ গিয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও আওয়ামি লিগ তাদের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে দাবি করেছে, ‘৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত একজনের নাম লিগ জানাতে পেরেছে। তিনি দীপ্ত সাহা। গোপালগঞ্জের বাসিন্দা এই তরুণ এক বীর মুক্তিযোদ্ধার ভাই। নিহতদের দেহ গোপালগঞ্জের মেডিকেল কলেজের মর্গে রয়েছে। আরও কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছে গুলিতে। তাদের সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই হঠকারিতার বিরুদ্ধে গোপালগঞ্জে সাধারণ মানুষ নেমেছে। এর জবাব জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সেনাবাহিনীকে দিতে হবে।’
এদিন সকাল থেকেই উত্তপ্ত গোপালগঞ্জ। পুলিশ, সেনা, বিজিবি দফায় দফায় গুলি, কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। সকাল থেকে দফায় দফায় চেষ্টা করেও ছাত্র লিগ সমর্থকদের রাস্তা থেকে সরাতে পারেনি সেনা-পুলিশ। ঢাকা এবং আশপাশের এলাকা থেকে দফায় দফায় পুলিশ ও সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে। লিগ নেতৃত্বের দাবি, বহু মানুষ গুলিবিদ্ধ। যৌথবাহিনীর অভিযানের প্রস্তুতি চলছে। ছাত্র লিগের প্রবল বাধার মুখে সেনা ও পুলিশের ঘেরাটোপে কোনওক্রমে সভা করে গোপালগঞ্জ ছাড়ার মুহূর্তে প্রতিরোধের মুখে আটকে পড়েন জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা। পরিস্থিতি এখন থমথমে রয়েছে এলাকায়। এর আগে গোপালগঞ্জ শহরে সংক্ষিপ্ত সভা করেন এনসিপি নেতারা। সেখানে শ্রোতার তুলনায় পুলিশ-সেনার সংখ্যা ছিল বেশি।