Bangla News Dunia, বাপ্পাদিত্য:- ৫০-এ পা দিলেন মীর আফসর আলি। পঞ্চাশে পানসে হয়ে যাওয়ার তত্ত্বে একেবারেই বিশ্বাসী নন মীর। তবে বয়স যে বাড়ছে, সেটা বুঝতে পারছেন তিনি। মীর বলেন, ‘খিটখিটে হয়ে যাচ্ছি, ধৈর্যচ্যুতি ঘটছে। আগে এগুলো কম হতো।’ ৩১ বছরের দীর্ঘ কেরিয়ারে মীরের কোনও আক্ষেপ, আপসোস, ক্লান্তি নেই। বয়সে হাফ সেঞ্চুরি করে তিনি বলেন, ‘আমার প্রাপ্তির পাল্লা সবচেয়ে বেশি ভারী। এত মানুষকে আনন্দ দিতে পেরেছি, আমজনতার ভালোবাসা পেয়েছি, আর এই সবকিছু সম্ভব হয়েছে আমার প্রফেশনের জন্য। চারিদিকে এত নেগেটিভিটি, কূটকাচালির ভিড়ে কাউকে হাসানোর তৃপ্তির চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কিছুই হতে পারে না।’ এত দিন দর্শককে বিনোদন দিয়ে এলেন যিনি, তাঁর মুখে হাসি ফোটায় কে? মীরের উত্তর, ‘আমার মেয়ে মুসকান। ওর নামের অর্থ হল হাসি। আমার খুশি থাকার, ভালো থাকার অন্যতম কারণ ও।’
রেডিয়ো দিয়ে শুরু, তার পর সংবাদপাঠক হিসাবে কাজ, সেখান থেকে বেসরকারি এফএমে চাকরি এবং সঙ্গে টেলিভিশনে কমেডি শোয়ের সঞ্চালনা, এতগুলি ভূমিকা পেরিয়ে আসার পর মীর কি নিজেকে ব্র্যান্ড মনে করেন? ‘লোকে সেটা বলে। তবে এখন যেহেতু আমি আর কোনও কর্পোরেট ছাতার তলায় নেই। একেবারে স্বতন্ত্র ভাবে কাজ করছি। তাই মাঝেমাঝে বিশ্বাস করতে হয় যে, আমি নিজেই ব্র্যান্ড। কাজের স্বার্থে এটুকু না করলে চলে না।’ মীর খামখেয়ালি নন, তবে ঝুঁকি নিতে ভালোবাসেন। সেই কারণেই এক দিনের নোটিসে ২৮ বছরের রেডিয়ো জীবন ছেড়ে দিতে পারেন। মীর দুর্বল হয়ে পড়েন, তবে লড়াই করতেও জানেন। তাই চাকরি ছাড়ার পর ৬ মাস অবসাদে ডুবে গিয়েও, নতুন ভূমিকায় ফিরে আসেন। যে মানুষ রেডিয়ো ছাড়া কিছু বুঝতেন না, যাঁর মাথায় বন্দুক ধরলে শুধু রেডিয়োকেই আঁকড়ে ধরতে চাইতেন, রেডিয়ো থেকে ছাড়া ৩ বছর কী করে কাটিয়ে দিলেন?
মীর বলেন, ‘একটা সময় আমারও মনে হতো রেডিয়ো আর আমি একে-অপরের পরিপূরক। রেডিয়ো ছাড়া নিজেকে ভাবতে পারতাম না। সেই আমিই তো দিব্যি ভালো আছি। কাজ করছি নিজের মতো। জানি না এটা কী ভাবে হলো। তবে আমি আর কাউকে কাজ নিয়ে জবাবদিহি করতে চাইছিলাম না। আমার চাকরি ছাড়ার এটাই অন্যতম কারণ।’ তরুণ প্রজন্মের ভাষায় মীর একেবারে ‘চাপলেস’। তিনি সারাক্ষণ ‘ক্লাউড নাইন’-এ থাকেন। কিন্তু সদাহাস্যময় মীরেরও মনে এক চাপা ভয় আছে। জন্মদিনে নিজেই খোলসা করলেন মীর। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি গলার স্বর আমার অন্যতম সম্পদ। আমার অবচেতনে সব সময় ভয় কাজ করে, কোনও দিন সেই স্বর যদি হারিয়ে যায়, আমি শেষ হয়ে যাব।’ মীর কি প্রেমে পড়েন এখনও? মীরের সাফ জবাব, ‘পড়ি। তবে বয়স বাড়ছে তো, তাই হাঁটুর ধুলো ঝেড়ে আবার সামনে এগিয়ে যাই।’